অলিম্পিক্সের ১৬ দলের অধিনায়ক। ছবি: এক্স।
অলিম্পিক্সের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে শুক্রবার। তার দু’দিন আগেই ফুটবল-সহ কিছু খেলা শুরু হয়ে যাচ্ছে। বুধবার প্রথম দিনেই মাঠে নামছে ইউরো কাপ জয়ী স্পেন এবং কোপা আমেরিকা জয়ী আর্জেন্টিনা। স্পেন খেলবে উজবেকিস্তানের বিরুদ্ধে। আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ মরক্কো।
অলিম্পিক্সের যোগ্যতা অর্জন করেছে ১৬টি দল। চারটি করে দল রেখে চারটি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে। প্রতি গ্রুপের শীর্ষস্থানীয় দুই দল যাবে কোয়ার্টার ফাইনালে। সেখান থেকে সেমিফাইনাল এবং ফাইনাল। ব্রোঞ্জ পদক জয়ের ম্যাচও থাকছে। আর্জেন্টিনার গ্রুপে রয়েছে মরক্কো, ইরাক এবং ইউক্রেন। স্পেনের গ্রুপে রয়েছে উজ়বেকিস্তান, মিশর এবং ডমিনিকান প্রজাতন্ত্র। ফ্রান্সের গ্রুপে রয়েছে আমেরিকা, গিনি এবং নিউ জ়িল্যান্ড। অপর গ্রুপটিতে রয়েছে জাপান, প্যারাগুয়ে, মালি এবং ইজ়রায়েল।
তবে ইউরো বা কোপা আমেরিকার দলের প্রায় কোনও খেলোয়াড়ই থাকছেন না অলিম্পিক্সের দলে। স্পেনের হয়ে ইউরো কাপে মাত্র দু’টি ম্যাচে ২৫ মিনিট খেলেছেন অ্যালেক্স বায়েনা। তিনি অলিম্পিক্সে খেলছেন। সঙ্গে থাকছেন ফারমিন লোপেস। তিনি ইউরোয় একটি ম্যাচে ২৮ মিনিট খেলেছেন।
আর্জেন্টিনা দলে ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ জয়ী দলের চার জন খেলোয়াড় রয়েছেন। এঁরা হলেন জুলিয়ান আলভারেস, নিকোলাস ওটামেন্ডি, জেরোনিমো রুলি এবং থিয়াগো আলমাদা। অলিম্পিক্সে সোনা জিতলে নজির গড়তে পারেন তাঁরা। প্রথম বারের মতো বিশ্বকাপ এবং অলিম্পিক্সে সোনার পদক জিতবেন। পাশাপাশি, পর পর দু’টি কোপা আমেরিকা এবং বিশ্বকাপ জয়ের পর অলিম্পিক্সে সোনা জিতলে আর্জেন্টিনার জন্য এটিই সোনালি প্রজন্ম হিসাবে চিহ্নিত হতে পারে।
অলিম্পিক্সের ফুটবলে মূলত অনূর্ধ্ব-২৩ ফুটবলারেরাই খেলেন। সঙ্গে তিন জন সিনিয়র ফুটবলার খেলতে পারেন। এই নিয়মের কারণে আলভারেস, ওটামেন্ডি এবং রুলি অলিম্পিক্সে খেলতে পারছেন। সোনার দাবিদার মনে করা হচ্ছে আর্জেন্টিনাকেই। স্পেন এবং ফ্রান্সও জোর টক্কর দিতে পারে।
ফ্রান্সের অধিনায়ক আলেকজ়ান্দ্রে ল্যাকাজেটে। তিনি আগে আর্সেনালের হয়ে খেলেছেন। এখন খেলেন অলিম্পিক লিয়ঁতে। ২০১৯ সালে লিভারপুলের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতা ন্যাবি কেইটা গিনিকে নেতৃত্ব দেবেন। ইউরো কাপ জয়ী লোপেস এবং বায়েনা স্পেনের ভরসা। এ ছাড়া সেই দলে ২০১৭ সালে ভারতে হওয়া অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপজয়ী আবেল রুইস এবং সের্জিয়ো গোমেজ রয়েছেন। টোকিয়ো অলিম্পিক্সে রুপো পেয়েছিল স্পেন। সোনা এখনও জেতেনি।
মরক্কো কঠিন লড়াই দিতে পারে। সেই দলের নেতা আশরফ হাকিমি। তিনি বিশ্বকাপে খেলেছেন। দেশের অন্যতম সেরা ফুটবলার। ইউক্রেনের হয়ে নজরে থাকেন ম্যাক্সিম তালোভেরভ।
মাঠের বাইরেও অনেকে থাকবেন, যাঁদের নিয়ে আলোচনা হতে বাধ্য। ফ্রান্সের কোচ হিসাবে থাকছেন থিয়েরি অঁরি, যিনি সে দেশের ইতিহাসে অন্যতম সেরা ফুটবলার। আর্জেন্টিনার কোচ জেভিয়ার মাসচেরানোও রয়েছেন। খেলোয়াড় এবং কোচ দুই ভূমিকাতেই সোনা জেতার হাতছানি রয়েছে তাঁর সামনে।
ছেলেদের ফুটবল ম্যাচগুলি হবে প্যারিস, মার্সেই, লিয়ঁ, বোর্দো, সাঁ এতিয়েনে, নিস এবং নান্তেস শহরে। ৯ অগস্ট সোনার পদকের ম্যাচ হবে প্যারিস সঁ জরমঁর স্টেডিয়াম পার্ক দ্য প্রাঁসে।
২০০৮ সালের পর অলিম্পিক্স ফুটবলে ফিরেছে আমেরিকা। উত্তর আমেরিকার ফুটবল সংস্থা কনকাকাফ ঠিক করেছিল, ২০২২ সালের অনূর্ধ্ব-২০ প্রতিযোগিতা অলিম্পিক্সের যোগ্যতা অর্জন হিসাবে ধরা হবে। সেই প্রতিযোগিতা জিতে অলিম্পিক্সে খেলবে আমেরিকা। তারা প্রথম ম্যাচে নামবে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে।
১৯৭৬ সালের পর ফিরছে ইজ়রায়েল। প্যালেস্তাইনের সঙ্গে যুদ্ধের কারণে অনেকেই তাদের অংশগ্রহণের বিরোধিতা করেছেন। কিন্তু অলিম্পিক্সের আয়োজকেরা তাতে কর্ণপাত করেননি।
অলিম্পিক্সে ১৯০০ সাল থেকে চালু হয়েছে ফুটবল। অর্থাৎ ফুটবল বিশ্বকাপেরও আগে থেকে। তবে একচ্ছত্র আধিপত্য কোনও দেশেরই নেই। সর্বোচ্চ তিন বার করে সোনার পদক জিতেছে হাঙ্গেরি এবং গ্রেট ব্রিটেন। দু’বার করে সোনা জিতেছে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, অবিভক্ত সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং উরুগুয়ে। এ ছাড়া, অবিভক্ত যুগোশ্লাভিয়া, স্পেন, পোল্যান্ড, অধুনালুপ্ত পূর্ব জার্মানি, নাইজেরিয়া, পূর্বতন চেক প্রজাতন্ত্র, ফ্রান্স, ইটালি, সুইডেন, মেক্সিকো, বেলজিয়াম, কানাডা এবং ক্যামেরুন একটি করে সোনা জিতেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy