ফ্রান্সের কাছে পরাজয়ের পর হতাশ ইংল্যান্ড অধিনায়ক হ্যারি কেন। ছবি: টুইটার।
কাতার বিশ্বকাপেও স্বপ্নপূরণ হল না ইংরেজদের। কোয়ার্টার ফাইনালেই থেমে গেল হ্যারি কেনদের অভিযান। ইংল্যান্ড অধিনায়ক দ্বিতীয় পেনাল্টি থেকে গোল করতে পারলে ম্যাচের ফল অন্য রকম হতেও পারত। সহজ সুযোগ উড়িয়ে দেওয়ার আক্ষেপ আজীবন তাড়া করতে পারে তাঁকে। তাঁর পেনাল্টি নষ্ট করার স্মৃতি আগামী দিনে বোঝা হয়ে চাপতে পারে ইংল্যান্ডের ঘাড়েও।
১৯৬৬ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের সামনে এ বার ট্রফির জেতার সেরা সুযোগ ছিল বলে মনে করছিলেন অনেকেই। গ্যারেথ সাউথগেট দলটাকে দীর্ঘ দিন ধরে তৈরি করেছেন। ছন্দেও ছিলেন হ্যারি কেনরাও। গ্রুপ পর্বে আমেরিকার বিরুদ্ধে তাল কাটলেও এত দ্রুত বিদায় আশা করেননি তাঁরা। ফ্রান্সের বিরুদ্ধে কোয়ার্টার ফাইনালেও তাঁদেরই দাপট ছিল বেশি। তবু একটা খারাপ পেনাল্টি ইংল্যান্ডের স্বপ্নভঙ্গ করেছে। হারের জন্য অধিনায়ক হ্যারি কেনকেই দুষছেন ইংরেজদের একাংশ। পাশাপাশি তাঁরা দুষছেন ম্যাচের রেফারিক উইল্টন সাম্পাইকেও। তাঁর একাধিক সিদ্ধান্ত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে গিয়েছে বলে মনে করছেন ইংরেজ ফুটবলপ্রেমীরা।
কোয়ার্টার ফাইনালে প্রথম বার পিছিয়ে পড়ার পর পেনাল্টি থেকেই গোল করে সমতা ফেরান হ্যারি কেন। দ্বিতীয় বার পিছিয়ে পড়ার পর পেনাল্টি পেলেও বাইরে মারেন তিনি। অধিনায়কের সহজ সুযোগ হাতছাড়া করার খেসারত দিতে হয়েছে ইংল্যান্ডকে। পরাজয়ের দায় মেনে নিয়েও ম্যাচের পর হ্যারি কেন বলেছেন, ‘‘নিজের প্রস্তুতিতে কখনও ফাঁক রাখি না। দ্বিতীয় বার পেনাল্টি মারতে যাওয়ার সময় আমার অন্য রকম কিছু মনে হয়নি। চাপও অনুভব করিনি। আত্মবিশ্বাসীই ছিলাম। তবু যা করতে চেয়েছিলাম, তা করতে পারিনি।’’ ফ্রান্সের গোলরক্ষক হুগো লরিসের সঙ্গে টটেনহ্যামে খেলেন হ্যারি কেন। ক্লাবের সতীর্থের বিরুদ্ধে পেনাল্টি মারতে গিয়েই কি বিপত্তি? মানতে চাননি ইংল্যান্ড অধিনায়ক। হ্যারি কেন বলেছেন, ‘‘এই বিষয়টা নিয়ে চিন্তাই করিনি। কখনও এ সব নিয়ে ভাবিও না। ম্যাচে একটা পেনাল্টি পেলে নিজেকে যে ভাবে প্রস্তুত করি দু’টো পেনাল্টি পেলেও সে ভাবেই প্রস্তুত করি।’’
বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতে হলেও হ্যারি কেন মনে করেন না প্রভাব সুদুরপ্রসারী হবে। তিনি বলেছেন, ‘‘অবশ্যই এই ব্যর্থতার দায় আমাকে নিতে হবে। তবু আমরা একে অপরের জন্য গর্বিত হতে পারি। জানি আগামী দিনেও আমাদের দলটা ভাল জায়গায় থাকবে।’’ ফুটবলপ্রেমীদের একাংশ হ্যারি কেনের এই মন্তব্যের সঙ্গেই একমত হতে পারছেন না। তাঁরা মনে করছেন, বিশ্বকাপ থেকে এ ভাবে বিদায়ের প্রভাব আগামী দিনেও থাকতে পারে দলের উপর। হ্যারি কেনের সহজ পেনাল্টি নষ্টের স্মৃতি আগামী দিনেও ফুটবলারদের তাড়া করতে পারে। তাঁদের আত্মবিশ্বাসে প্রভাব ফেলতে পারে।
ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় পেনাল্টি প্রথমে দেননি ম্যাচের রেফারি। খেলা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। কয়েক সেকেন্ড পরে ইংল্যান্ডের ফুটবলারদের প্রতিবাদে খেলা থামান। ভার দেখে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত নেন। সাম্পাইয়ের খেলা পরিচালনায় খুশি নন ইংরেজরা। তাঁদের দাবি, যথেষ্ট দক্ষতার সঙ্গে ম্যাচ পরিচালনা করতে পারেননি তিনি। আরও কয়েকটা ফ্রিকিক পেতে পারত ইংল্যান্ড। বিষয়টা খেলোয়াড়দের কাছেও হতাশার।
ইংল্যান্ডের কোচ সাউথগেট অবশ্য কঠিন সময় অধিনায়কের পাশেই দাঁড়িয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘কেউ ভাবতেই পারেন হ্যারি কেন তেমন মানের ফুটবলার নয়। কিন্তু আমি বলব, ওর নিজেকে তিরস্কার করার কিছু নেই। ওর নেতৃত্ব এবং লক্ষ্যের প্রতি অবিচল থাকতে পারার জন্যই আমাদের দলটা এই জায়গায় এসেছে।’’
শুধু পেনাল্টি নষ্ট করাই নয়, ফ্রান্সের বিরুদ্ধে হ্যারি কেন গোল করার একাধিক সহজ সুযোগও হাতছাড়া করেছেন। ক্লাবের সতীর্থকে পরাস্ত করতে পারেননি। ভাল খেলেও অধিনায়কের ব্যর্থতায় বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে যাওয়ার সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে ইংরেজদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy