Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Indian Football

FIFA bans AIFF: ফিফার নির্বাসনে আর্থিক ভাবে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে ভারতীয় ফুটবল

ফিফার নির্বাসন বহাল থাকলে অনূর্ধ্ব-১৭ মহিলা বিশ্বকাপ হবে না। সে ক্ষেত্রে ফুটবল ব্যবসায় বিরাট আর্থিক ক্ষতি হতে পারে।

সুনীলদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় ভরা।

সুনীলদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় ভরা। ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২২ ১৭:২৬
Share: Save:

গত মঙ্গলবার ভোর রাতে সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থাকে (এআইএফএফ) নির্বাসিত করেছে ফিফা। রাতারাতি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ভারতীয় ফুটবল এবং ফুটবলারদের ভবিষ্যৎ। বুধবার সুপ্রিম কোর্টে শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও তা স্থগিত হয়েছে। সোমবার ফের শুনানি হবে। ফিফার নির্বাসনে ভারতীয় ফুটবলকে বিরাট আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হতে পারে। কারণ এই খেলায় যে সব সংস্থা বিনিয়োগ করেছে, তারা জনপ্রিয়তায় কালো দাগ লাগার ভয়ে পিছিয়ে আসতে পারে।

অক্টোবরে ভারতে হওয়ার কথা অনূর্ধ্ব-১৭ মেয়েদের বিশ্বকাপ। নির্বাসন না উঠলে ভারতের হাত থেকে আয়োজনের দায়িত্ব চলে যেতে পারে। যে হেতু বিশ্বকাপে বহু দেশের প্রতিনিধিত্ব রয়েছে, তাই সেই প্রতিযোগিতায় বিনিয়োগ করলে সংস্থাগুলির লাভ হতে পারত। সেই ভেবে অনেক সংস্থাই এগিয়ে এসেছিল মহিলা বিশ্বকাপের সঙ্গে যুক্ত হতে। বিশ্বকাপ আয়োজনের দায়িত্ব চলে গেলে তাদের অনেকেই ভবিষ্যতে ফুটবলে বিনিয়োগের ব্যাপারে পিছিয়ে আসবে। শুধু তাই নয়, ভারতের ঘরোয়া ফুটবলেও বিনিয়োগের সংখ্যা ৪০-৫০ শতাংশ কমবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।

এক সংস্থার কর্তা বলেছেন, “অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ হলে তা সংস্থাগুলির কাছে বিরাট লাভের হতে পারে। বিশেষত মহিলাদের ফুটবলে বিনিয়োগ বাড়তে পারে। এ ধরনের বিশ্বমানের প্রতিযোগিতার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য মুখিয়ে থাকে সংস্থাগুলি। কিন্তু বিশ্বকাপ না হলে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। ভারতের ঘরোয়া ফুটবলের সবচেয়ে ক্ষতি হবে।”

সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হতে পারে আই লিগে। এআইএফএফ সরাসরি এই লিগ পরিচালনা করে। ফলে স্পনসর ধরে আনা বা বিজ্ঞাপন জোগাড় করা তাদের দায়িত্ব। ফিফার নির্বাসন না উঠলে সেই লিগে বিনিয়োগ করতে প্রায় কেউই এগিয়ে আসবেন না বলে মনে করা হচ্ছে। এমনিতেই আই লিগ আয়োজন করতে গিয়ে এআইএফএফের অনেক আর্থিক ক্ষতি হয় বলে দাবি। সেই ক্ষতির পরিমাণ বাড়তে পারে।

আইএসএল তুলনায় একটু হলেও ভাল জায়গায় থাকবে। এখম মনে করা হয়, এটিই দেশের প্রধান লিগ। সম্প্রচার, ফুটবলারদের মান, বিনিয়োগ— সব দিক থেকেই এটি আই লিগের থেকে এগিয়ে রয়েছে। প্রতিযোগিতার আয়োজনে এআইএফএফের ভূমিকা থাকলেও মুখ্য ভূমিকা নেয় রিলায়েন্স এবং সম্প্রচারকারী সংস্থা ডিজনি প্লাস হটস্টার। দু’টিই বিখ্যাত সংস্থা। ফলে নিজেদের চেষ্টায় স্পনসর ধরে আনার ক্ষেত্রে খুব একটা সমস্যা হবে না।

এমনিতে গত ৩৫ বছর ধরে জামশেদপুরে ফুটবল অ্যাকাডেমি চালাচ্ছে টাটা গোষ্ঠী। আইএসএলে জামশেদপুর এফসি দলের মালিকও তারা। এ ছাড়াও গত কয়েক বছরে বেশ কিছু কর্পোরেট সংস্থা ফুটবলে বিনিয়োগ করতে এগিয়ে এসেছে। তাদের মধ্যে রয়েছে ডিএইচএল, বাইজু’স, ড্রিম ইলেভেন এবং ক্যাস্ট্রলের মতো সংস্থা। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এই সংস্থাগুলি নতুন বিনিয়োগ না-ও করতে পারে।

সম্প্রতি এক রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, ভারতে খেলাধুলোয় গত আর্থিক বছরে ৯৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। এর ৮৮ শতাংশ বিনিয়োগ ক্রিকেটে। বাকি ১২ শতাংশের মধ্যে প্রধান বিনিয়োগ ফুটবলেই। কবাডিও রয়েছে। তবে কমনওয়েলথ গেমসে ভাল পারফরম্যান্সের পরে ব্যক্তিগত ক্রীড়াবিদদের স্পনসর করার সংখ্যা বাড়ছে। অনেকেই মনে করছেন, ফুটবল থেকে সরে গিয়ে ব্যক্তিগত ক্রীড়াবিদদের স্পনসর করার দিকে ঝুঁকতে পারে সংস্থাগুলি। আদানি, জেএসডব্লিউ, আমূল, অ্যাডিডাসের মতো কিছু সংস্থা সে ব্যাপারে অগ্রণী হয়েছে।

ফুটবলের পক্ষে বাঁচার একটা রাস্তা। যে কোনও উপায়ে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ আয়োজন করা। তাতে সংস্থাগুলি ফুটবলে বিনিয়োগ করতে উৎসাহী হবে। না হলে আগামী দিনে ভারতীয় ফুটবলে আর্থিক ক্ষেত্রেও যে দুর্দিন আসতে চলেছে, তা নিয়ে সন্দেহ নেই।

অন্য বিষয়গুলি:

Indian Football AIFF fifa Reliance
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE