নন্দকুমার। ছবি: আইএসএল
কলকাতার ফুটবলে আসার পর কেটে গেল অনেক দিন। শহরের ফুটবল নিয়ে উত্তেজনার পারদ টের পেয়েছেন। কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়ার চাপ থাকার পাশাপাশি রয়েছে আনন্দও। দুটো কলকাতা ডার্বিও খেলা হয়ে গিয়েছে। একটিতে জিতেছেন। একটিতে হেরেছেন। প্রথমটিতে দল জিতেছিল তাঁর গোলেই। ১২ অগস্ট হয়েছিল সেই ম্যাচ। ১২২ দিন আগের সেই রাত কোনও দিন ভুলতে পারবেন না ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলার নন্দকুমার সেকর।
ডুরান্ড কাপে মরশুমের প্রথম কলকাতা ডার্বির সেই ম্যাচে মাঝমাঠ থেকে বোরহা হেরেরার লম্বা পাস পেয়ে ডান দিক দিয়ে উঠে প্রতিপক্ষের বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন নন্দকুমার। বক্সের সামনেই তাঁকে বাধা দিয়েছিলেন অনিরুদ্ধ থাপা। তাঁকে বোকা বানিয়ে বল ডান পা থেকে বাঁ পায়ে এনে দ্বিতীয় পোস্টে শট করেন। সেটি উপরের কোণ দিয়ে গোলে ঢুকে যায়। নন্দকুমারের সেই গোলেই টানা আটটি ডার্বিতে হারের পরে ইস্টবেঙ্গল জয় পায়। সমর্থকেরা এতটাই খুশি হন যে, অনেকের চোখেই জলের ধারা নামতে দেখা যায়। রাতারাতি নায়ক হয়ে যান নন্দকুমার।
সেই অভিজ্ঞতা সারা জীবন মনে রাখতে চান নন্দকুমার। আইএসএলের ওয়েবসাইটে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “ওই গোলটা করে দারুণ অনুভূতি হয়েছিল। কারণ, গোলটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল এবং আমাদের তিন পয়েন্ট এনে দিয়েছিল। আমার কেরিয়ারের অন্যতম সেরা মুহূর্ত ছিল সেটা। ডার্বি ম্যাচটা অসাধারণ হয়েছিল। সে দিন যুবভারতীর পরিবেশ একেবারে অন্য রকম ছিল। গোটা গ্যালারি সমর্থকে ঠাসা ছিল। চার বছর পর ডার্বি জেতায় সমর্থকেরা সবাই খুব আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন। সে দিন যা ভালবাসা পেয়েছিলাম তা সারা জীবন মনে থাকবে।”
জুন মাসে তিন বছরের জন্য নন্দকুমারের সঙ্গে চুক্তি করে লাল-হলুদ শিবির। গত মরশুমে ওড়িশা এফসি-র হয়ে অসাধারণ পারফরম্যান্স করেন তামিলনাড়ুর এই ফুটবলার। আইএসএলে ছ’টি গোল করেন ও একটিতে অ্যাসিস্ট করেন। সুপার কাপেও পাঁচটি ম্যাচে চারটি গোল করে দলকে চ্যাম্পিয়ন হতে সাহায্য করেন। একটিতে জোড়া গোল ছিল। উইং দিয়ে আক্রমণে উঠে প্রতিপক্ষের রক্ষণে ফাটল ধরিয়ে গোল করার ক্ষমতার জন্য তাঁকে বেছে নিয়েছিলেন কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত নিজেই।
সেই নন্দকুমার কলকাতার সমর্থকদের নিয়েও উত্তেজিত। কলকাতায় খেলার স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় খুশি। বলেছেন, “দেশের অন্যান্য শহরের চেয়ে কলকাতার ফুটবল সংস্কৃতি একেবারে আলাদা। এখানে লোকে ফুটবলের জন্য পাগল। সবাই খেলা দেখে। তাই এখানকার ক্লাবের ফুটবলারদের ওপর চাপও স্বাভাবিক ভাবেই বেশি। আমার কাছে এটা বড় সুযোগ। ইস্টবেঙ্গল ঐতিহ্যবাহী ক্লাব। এই ক্লাবের অঙ্গ হয়ে উঠতে পেরে আমি গর্বিত। কলকাতার এই ফুটবল সংস্কৃতির অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পেরে আমি রোমাঞ্চিত এবং খুব খুশিও।”
মরসুমের শুরুটা দারুণ হলেও চলতি আইএসএলে সেই সাফল্য বজায় রাখতে পারেননি নন্দকুমার। এখনও পর্যন্ত ছ’টি ম্যাচে দু’টি গোলে অ্যাসিস্ট করলেও নিজে একটিও গোল পাননি। তবে ১৭টি সুযোগ তৈরি করেছেন এবং ১৪টি শট লক্ষ্যে রাখতে পেরেছেন। তাঁর আস্থা রয়েছে কোচ কুয়াদ্রাতের উপর। বলেছেন, “দীর্ঘ দিন ধরে কার্লেসের ভক্ত আমি। উনি খুবই নমনীয় এবং মাঠে আমাদের অবাধ স্বাধীনতা দেন। দলের খেলোয়াড়দের স্পষ্ট জানিয়ে দেন উনি কী চাইছেন। ওঁর প্রশিক্ষণে খেলে আমি মুগ্ধ। আমরা এখন আগামী ম্যাচে মনোনিবেশ করেছি এবং খুবই পরিশ্রম করেছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy