আগের ম্যাচে হায়দরাবাদকে হারিয়ে আইএসএলের ইতিহাসে প্রথম বার জয়ের হ্যাটট্রিক করেছে ইস্টবেঙ্গল। রবিবার এই মরসুমে ঘরের মাঠে আইএসএলের শেষ ম্যাচ খেলতে নামছে তারা। প্রতিপক্ষ বেঙ্গালুরু এফসি। তবে বিপক্ষ নয়, কোচ অস্কার ব্রুজ়ো ভাবছেন পরের চারটি ম্যাচ নিয়ে। আইএসএলের দু’টি ম্যাচ ছাড়াও এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে দুই পর্বের খেলা রয়েছে। অস্কারের কাছে এই চারটি ম্যাচই ‘ফাইনাল’।
রবিবার বেঙ্গালুরু ম্যাচের পর ৫ মার্চ আর্কাদাগের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ লিগের প্রথম পর্বে খেলবে ইস্টবেঙ্গল। ৮ মার্চ খেলা নর্থইস্টের বিরুদ্ধে। ১৩ মার্চ আর্কাদাগের বিরুদ্ধে ফিরতি পর্বের খেলা।
শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে অস্কার বলেছেন, “খুব কঠিন দুটো সপ্তাহ আসতে চলেছে আমাদের জন্য। তবে কোনও অজুহাত দিতে চাই না। বাকি যে চারটে ম্যাচ রয়েছে সেগুলো যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে খেলতে চাই। চারটে ম্যাচই আমাদের কাছে ফাইনাল। নিজেদের সেরা ছন্দে থাকতে হবে। কোনও একটা প্রতিযোগিতাকে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছি না। আইএসএলে ভাল জায়গায় শেষ করতে হবে। এএফসিতেও জিততে হবে। তাই জন্যেই খেলোয়াড়দের সেরা ছন্দে থাকতে হবে। মেডিক্যাল দলকেও বলেছি খেলোয়াড়দের ফিট রাখতে।”
ইতিমধ্যেই প্লে-অফের যোগ্যতা অর্জন করে ফেলা বেঙ্গালুরু চলতি মরসুমে ভাল ছন্দে রয়েছে। সুনীল ছেত্রী একাই করেছেন ১১টি গোল। এদগার মেন্দেজ়, রায়ান উইলিয়ামসরাও ছন্দে রয়েছেন। কতটা কঠিন হবে তিনে থাকা বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে খেলা? অস্কারের উত্তর, “বেঙ্গালুরু খুব ভাল দল। সে কারণেই ওরা প্লে-অফে উঠে গিয়েছে। ওদের কঠিন দল হিসাবেই দেখতে হবে। সুনীল ছেত্রী ভাল ফর্মে রয়েছে। উইলিয়ামসও ভাল খেলছে। গতিশীল ফুটবল খেলতে পারে। কী ভাবে ওদের ফুটবলারদের আটকাতে হবে সেটা নিয়ে অনেক ভাবতে হবে। আমরা আপাতত বাঁচার লড়াই করছি। বেঙ্গালুরু চাইবে আরও উঁচুতে শেষ করতে। তাই ফুটবলারদের বলব, কোনও মতেই লড়াই ছেড়ো না।”
আইএসএলের প্লে-অফে ইস্টবেঙ্গলের যাওয়ার সম্ভাবনা এখনও ক্ষীণ। তবে অস্কার পয়েন্ট তালিকা নিয়ে ভাবছেনই না। আন্তর্জাতিক মঞ্চে ক্লাবের নাম উজ্জ্বল করা ছাড়াও তাঁর মাথায় রয়েছে আইএসএলের দু’টি ম্যাচও। বলেছেন, “আমি কোনও ম্যাচকে এগিয়ে রাখছি না। আমাদের কাছে চারটে ম্যাচই ফাইনাল। আইএসএল এবং মহাদেশীয় প্রতিযোগিতা, দুটো আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। যদি কালকের ম্যাচটা জিততে পারি তা হলে শিলংয়ে গিয়ে (নর্থইস্টের বিরুদ্ধে) আত্মবিশ্বাস পাব। যদি কাল জিততে না পারি, তা হলে শিলংয়ে অন্য পরিকল্পনা নিয়ে খেলব।”
হায়দরাবাদ ম্যাচে রিচার্ড সেলিস, মহম্মদ রাকিপ এবং ডেভিড লালানসাঙ্গাকে নামিয়ে জিতেছিলেন অস্কার। তিন ফুটবলার ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন। শেষ দিকে তরতাজা ফুটবলার নামানোর গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে অস্কার বলেছেন, “একটা জিনিস খেয়াল করলে দেখবেন, এ বারের আইএসএলে ৮০-৮৫ শতাংশ ম্যাচ নির্ধারিত হয়েছে শেষ ৩০ মিনিটে। এই সময়টা যে ভাল খেলছে সে-ই জিতছে। তাই শেষের দিকে তরতাজা ফুটবলার নামানোটা কৌশলের মধ্যেই পড়ে। এক জনের নাম অবশ্যই বলব, ডেভিড। ওকে যখনই নামানো হয়েছে তখনই দলের জন্য নিজের সেরাটা দিয়েছে। সে যত মিনিটই ওর কাছে থাকুক না কেন। ওকে শুরু থেকে খেলাতে পারি না ভেবে খারাপ লাগে। তবে কী ভাবে ম্যাচটা শুরু এবং শেষ করতে চাই সেটা আমার উপরেই নির্ভর করে। সেই পরিকল্পনা আমার কাছেই থাকুক। কী দল হবে সেটা এখনই বলে দিতে চাই না।”
আরও পড়ুন:
মহমেডান থেকে ইস্টবেঙ্গলে আসা ডেভিডের আরও প্রশংসা করে অস্কার বলেছেন, “ডেভিডের মরসুমটা দারুণ কেটেছে। মেনে নিচ্ছি ও খুব কম সময় খেলছে। বিভিন্ন ভাবে ওকে ব্যবহার করতে পারি। আক্রমণাত্মক বা রক্ষণাত্মক দু’রকম ভাবেই ও খেলতে পারে। এ রকম ফুটবলার দলে থাকা খুবই ভাল। আমি জানি না আরও বেশি সময় খেলানো উচিত কি না। আমি চাই, যত ক্ষণ মাঠে থাকবে নিজের সেরাটা দিক।”