ইস্টবেঙ্গলের কোচ কার্লোস কুয়াদ্রাত। —ফাইল চিত্র
মাঠে বার বার তিনি উত্তেজিত হয়েছেন। নিজের দলের ফুটবলারদের রক্ষা করতে ঝগড়া করেছেন চতুর্থ রেফারির সঙ্গে। হলুদ কার্ড দেখেছেন। তা সত্ত্বেও কাপ এবং ঠোঁটের দূরত্ব থেকেই গিয়েছে। ম্যাচের পর সাংবাদিক বৈঠকে বিভিন্ন ভূমিকায় দেখা গেল ইস্টবেঙ্গলের কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাতকে। কখনও তিনি মোহনবাগানের থেকে শিখতে বললেন। আবার কখনও তাদের খোঁটা দিলেন বেশি ফুটবলার খেলানো নিয়ে। তবে গত তিন-চার মরসুমে লাগাতার ব্যর্থ হতে থাকা দলকে শেষ পর্যন্ত একটা পদক দিতে পেরেছেন এটা ভেবে বেশি খুশি স্প্যানিশ কোচ।
হেরে গেলেও খুব বেশি বিমর্ষ ছিলেন না কুয়াদ্রাত। তিনি এমনিতেই কথা বলতে ভালবাসেন। ফাইনালে হারের পর প্রচুর কথা বললেন। বেশ শান্ত ভঙ্গিতে প্রথমেই তাঁকে বলতে শোনা গেল, “এই প্রতিযোগিতা থেকে অনেক কিছু ইতিবাচক পেলাম।” কী ইতিবাচক? নিজেই গলার রুপোর পদক দেখিয়ে বললেন, “এটা।”
তার পরে কুয়াদ্রাতের সংযোজন, “আমার মনে হয় শেষ বার ইস্টবেঙ্গল কোনও ট্রফি জিতেছে ২০১৯ সালে। তার আগে জাতীয় পর্যায়ের কোনও প্রতিযোগিতায় জিতেছে ২০১২ সালে। তা হলে এত দিন পরে যে একটা প্রতিযোগিতার ফাইনালে উঠতে পেরেছি আমরা এটাই গর্বের ব্যাপার নয় কি?”
এর পরেই পড়শি ক্লাবের উদাহরণ টেনে এনেছেন ইস্টবেঙ্গল কোচ। বলেছেন, “যে কোনও প্রোজেক্ট সফল ভাবে দাঁড় করাতে সময় লাগবে। আমরা গত তিন বছর আইএসএল খেলছি। মোহনবাগানও তিন বছর আগে আইএসএলে এসেছে। প্রথম বার ওরা রানার্স হয়েছিল। বেশির ভাগ প্রতিযোগিতায় সেমিফাইনাল বা ফাইনালে গিয়েই দৌড় শেষ হয়ে যাচ্ছিল। এত দিন পর ট্রফি জিতেছে। আইএসএলের পর ডুরান্ড কাপ। ওদের কাছে আর্থিক শক্তিও বেশি ছিল। তাতেও ওদের সময় লেগেছে। তাই এই পদক জিতে আমি গর্বিত। অনেকের কঠোর পরিশ্রম জড়িয়ে আছে এই ফলের পিছনে। এখনও অনেক কাজ করতে হবে আমাদের।”
এর পরেই মোহনবাগানকে খোঁচা দিলেন তিনি। গত বারের ডার্বির পর এ বারও। সে বার বলেছিলেন, মোহনবাগান নিয়ম ভেঙে ৩৩ জন ফুটবলারকে নথিবদ্ধ করিয়েছে। দুই ডার্বির মাঝে আরও একজন ফুটবলার এসেছেন মোহনবাগানে। সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে কুয়াদ্রাত বললেন, “একটা জিনিস ভেবে দেখুন। যে কোনও প্রতিযোগিতাতেই একটা নিয়ম থাকে। এখানে ৩০ জন ফুটবলারের রেজিস্ট্রেশন করানোর নিয়ম। কিন্তু ওরা ৩৪ জন ফুটবলারের রেজিস্ট্রেশন করিয়েছে। সবার জন্যে একটা নিয়ম, বাকিদের জন্যে আলাদা এটা তো হতে পারে না।”
বিপক্ষকে আধ ঘণ্টা দশ জনে পেয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। তা সত্ত্বেও জিততে পারল না কেন তারা? প্রশ্ন উঠতেই ইউরোপীয় ফুটবলের উদাহরণ টানলেন স্পেনের কোচ। নিজের শহর বার্সেলোনায় কোচিং করানো হেলেনিয়ো হেরেরার কথা উল্লেখ করে তিনি বললেন, “উনি বলতেন, ১১ জনে খেলার থেকে ১০ জনে খেলা ভাল। যাদের প্রথম একাদশের একটা ফুটবলার কমে যায়, তাদের আর হারানোর কিছু থাকে না। তারা সব ভুলে আক্রমণ করে। মোহনবাগানের ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছে। কেন ওই সময়ে গোল খেলাম তা বিশ্লেষণ করে লাভ নেই। গোল খাওয়ার কোনও সময় হয় না। কিন্তু ওই সময়ে আমার দলের ফুটবলারেরা একটু ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল।”
ইস্টবেঙ্গল কোচের মতে, অনিরুদ্ধ থাপার লাল কার্ডটাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। বলেছেন, “ওদের কাছে প্রতিভাবান খেলোয়াড় রয়েছে। একজন ফুটবলার কমে যাওয়ায় ওদের হারানোর কিছু ছিল না। তাই আক্রমণ করা ছাড়া ওদের কাছে উপায় ছিল না। সেটাই করেছে। আমাদের সেই সময় নিজেদের আরও নিয়ন্ত্রণে রাখা দরকার ছিল। সেটা আমরা পারিনি। তবে এর থেকে ভবিষ্যতে শিক্ষা নিতে হবে।”
ইস্টবেঙ্গলের কোচ আরও জানালেন, ডিফেন্ডার জর্ডান এলসের চোট গুরুতর। তাঁকে সোমবার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। স্ক্যানের পর বোঝা যাবে কত দিনের জন্যে ছিটকে গেলেন। যদি এই মরসুমে না খেলতে পারেন, তা হলে আর একজন বিদেশি ডিফেন্ডার নিতে পারে ইস্টবেঙ্গল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy