মহড়া: প্রতিপক্ষ ওড়িশা। রবিবার যুবভারতীতে সতীর্থদের সঙ্গে প্রস্তুতি কামিংসের। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
মাস দু’য়েক আগেও ছবিটা ছিল সম্পূর্ণ বিপরীত। ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে ওড়িশা এফসিকে প্রথম পর্বের দ্বৈরথে ৪-০ গোলে চূর্ণ করে এএফসি কাপের মূল পর্বে যাত্রা শুরু করে হাসতে হাসতে মাঠ ছেড়েছিলেন জুয়ান ফেরান্দো। মাথা নিচু করে বসেছিলেন ওড়িশার কোচ সের্খিয়ো লোবেরা। আজ, সোমবার ঘরের মাঠ যুবভারতীতে দ্বিতীয় পর্বের দ্বৈরথ। কিন্তু সবুজ-মেরুন কোচ উদ্বিগ্ন। আর লোবেরার অভিব্যক্তি থেকেই স্পষ্ট, বদলা নেওয়ার জন্য ছটফট করছেন।
আশিক কুরুনিয়ন, আনোয়ার আলি অনেক দিন ধরেই চোটের কারণে নেই। সেই তালিকায় এ বার ঢুকে পড়েছেন প্রথম পর্বের দ্বৈরথে ওড়িশার বিরুদ্ধে জয়ের অন্যতম দুই কারিগর মনবীর সিংহ ও দিমিত্রি পেত্রাতসও। জোড়া গোল করেছিলেন অস্ট্রেলীয় তারকা। নিজে গোল না করলেও অসাধারণ খেলেছিলেন মনবীর। তবে জুয়ান সবচেয়ে বেশি চিন্তিত মনে হয়, দিমিত্রির অভাব পূরণ করা নিয়েই। যদিও খোলাখুলি বলেননি যে অস্ট্রেলীয় তারকা খেলতে পারবেন না। রবিবার সন্ধেয় যুবভারতীতে অনুশীলনে মনবীরের সঙ্গে দিমিত্রিকেও দেখা যায়নি।
বাংলাদেশের বসুন্ধরা কিংসের কাছে আগের ম্যাচে ১-২ গোলে হেরে মোহনবাগান ‘ডি’গ্রুপের টেবলে দ্বিতীয় স্থানে নেমে এসেছে। দু’টি দলেরই সংগ্রহে চার ম্যাচে সাত পয়েন্ট। কিন্তু গোল পার্থক্যে এক নম্বরে বাংলাদেশের দল। সমসংখ্যক ম্যাচ খেলে তৃতীয় স্থানে থাকা ওড়িশার পয়েন্ট ছয়। অর্থাৎ, সোমবার জিততে না পারলে মোহনবাগানের সামনে অনেকটাই কঠিন হয়ে যাবে পরের পর্বে ওঠার পথ।
এএফসি কাপের নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন দল পরের পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে। এ ছাড়াও যাবে দ্বিতীয় স্থানে শেষ করা সেরা দু’টি দল। সোমবার ঢাকার স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে পাঁচটায় বসুন্ধরা কিংসও নামছে। ঘরের মাঠে মলদ্বীপের মাজ়িয়ার বিরুদ্ধে তারা জিতলে নিঃসন্দেহে চাপ বাড়বে মোহনবাগানের। এক দিকে একাধিক ফুটবলারের চোট, তার উপরে ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলতে থাকা ওড়িশা। যে দলের কোচ লোবেরার অস্ত্র আবার তাঁর মতোই আক্রমণাত্মক ফুটবল। মরণ-বাঁচন দ্বৈরথের আগে তাই স্পষ্টতই চিন্তিত দেখাল জুয়ানকে।
রবিবার দুপুরে যুবভারতীতে সাংবাদিক বৈঠকে প্রথম পর্বের দ্বৈরথে ওড়িশার বিরুদ্ধে ৪-০ জয়ের প্রসঙ্গ উঠতেই তড়িঘড়ি বলে উঠলেন, ‘‘আমি কখনওই অতীত মনে রাখি না। ওই ম্যাচের পরে ওদের ড্রেসিংরুমের পরিবেশ অনেক বদলে গিয়েছে। দ্বিতীয়ার্ধে খেলার ফল ওরা বদলে দিচ্ছে। এর অর্থই হল, নিজেদের পরিকল্পনার প্রতি ওদের যথেষ্ট আস্থা রয়েছে। ওড়িশা সম্প্রতি খুবই ভাল ফল করছে। দারুণ খেলে টানা কয়েকটি ম্যাচে জিতেছে। তাই এই দ্বৈরথ সম্পূর্ণ আলাদা এবং কঠিনও হবে। জিততে হলে আমাদের অনেক কিছুই নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।’’
প্রশ্ন উঠছে দিমিত্রির বিকল্প কে হবেন? জেসন কামিংসের সঙ্গে কি শুরু থেকেই আর্মান্দো সাদিকুকে খেলাবেন জুয়ান?কারণ, ওড়িশা রক্ষণের অন্যতম ভরসা মোর্তাদা ফলের খেলার সম্ভাবনা নেই। রবিবার সন্ধেয় যুবভারতীতে অনুশীলনেও দেখা যায়নি তাঁকে। জুয়ান বললেন, ‘‘একাধিক ফুটবলারের চোট পেয়ে ছিটকে যাওয়া অবশ্যই ধাক্কা। কিন্তু যারা নেই তাদের নিয়ে ভেবে রাতের ঘুম নষ্ট করতে চাই না। এটাই সেরা সুযোগ বাকিদের কাছে নিজেদের প্রমাণ করার। যারা রয়েছে তাদের নিয়ে দলটা তৈরি করাই এই মুহূর্তে আমার প্রধান লক্ষ্য।’’
কোচের পাশে বসে কামিংস খোলাখুলিই জানিয়ে দিলেন, দিমিত্রির না থাকা বড় ধাক্কা। বললেন, ‘‘দিমি (দিমিত্রি) আমাদের দলের খুবই গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। প্রচুর গোলও করেছে। ওর শূন্যস্থান পূরণের দায়িত্ব আমাদেরই নিতে হবে।’’
সবুজ-মেরুনের স্পেনীয় কোচকে ভাবাচ্ছে রয় কৃষ্ণও। পুরনো দলের বিরুদ্ধে গোল করতে মরিয়া তিনি। আনোয়ারহীন রক্ষণ কি পারবে কৃষ্ণের গোল করা আটকাতে?মোহনবাগানকে হারিয়ে লিগ টেবলে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসতে মরিয়া ওড়িশার কোচ লোবেরার হুঙ্কার, ‘‘ওরাই বেশি চাপে থাকবে। কারণ, ঘরের
মাঠে খেলবে মোহনবাগান।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy