আশাবাদী: বরুসিয়ার ম্যানেজিং ডিরেক্টর কার্স্টেন ক্রেমার।
বিশ্ব ফুটবলের বড় লিগগুলির মধ্যে সবার প্রথমে মাঠে ফিরছে জার্মানি। শনিবার ঘরের মাঠে বুন্দেশলিগা ডার্বিতে বরুসিয়া ডর্টমুন্ড মুখোমুখি এফসি শালকের। সেই ম্যাচের আগে বিশ্বের বাছাই করা কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সে নানা প্রশ্নের উত্তর দিলেন বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর কার্স্টেন ক্রেমার। বাংলা থেকে ছিল শুধু আনন্দবাজার।
জীবনের ছন্দ ফেরাবে ফুটবল: করোনা অতিমারির জেরে গোটা বিশ্বের ছবিটাই বদলে গিয়েছে। ফুটবলেও তার বিরাট প্রভাব পড়েছে। এই প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও কিছুটা স্বস্তি বুন্দেশলিগা শুরু করার সবুজ সঙ্কেত পাওয়ায়। এর জন্য আমরা কৃতজ্ঞ সরকার ও সব রাজনৈতিক দলের কাছে। আমরা বিশ্বাস করি, ফুটবলই পারে মানুষের মনের আশঙ্কা দূর করে আগের সেই ফুরফুরে ভাব ফেরাতে।
করোনার সঙ্গে লড়াই: সংক্রমণের হার হ্রাস পাওয়ায় সরকার যখন লকডাউন তোলার কথা ভাবছিল, আমরা তখন থেকেই উদ্যোগী হয়েছিলাম বুন্দেশলিগা ফের শুরু করার ব্যাপারে। দফায় দফায় আলোচনা করেছি সরকারের সঙ্গে। বোঝানোর চেষ্টা করেছি, বুন্দেশলিগা শুরু না-হলে ক্লাবগুলোকে বাঁচানো যাবে না। শেষ পর্যন্ত সরকারকে বোঝাতে পেরেছি। আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, সরকারের নির্দেশ মেনে সমস্ত রকম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েই ম্যাচের আয়োজন করা হবে।
মন খারাপের ডার্বি: বরুসিয়া ডর্টমুন্ড ফুটবলারদের সঙ্গে সমর্থকদের সম্পর্কটা একেবারেই আত্মিক। ম্যাচের দিন সিগন্যাল ইদুনা পার্ক স্টেডিয়ামের গ্যালারির রং হলুদ হয়ে যায়। মনে হয় যেন, মিউজিক্যাল কনসার্ট হচ্ছে। এতটাই প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে পরিবেশ। এই ‘ইয়েলো ওয়াল’ আমাদের সম্পদ ও গর্ব। অথচ শনিবার শালকের বিরুদ্ধে ডার্বি খেলতে হবে দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে। মানুষের জীবনের চেয়ে কোনও কিছুই মূল্যবান নয়। শুধু এই ম্যাচটাই নয়, আরও কত দিন যে ফাঁকা স্টেডিয়ামে খেলতে হবে, কেউ জানে না। এই সমস্যার সামনে সকলকেই পড়তে হচ্ছে।
ন্যূনতম ঝুঁকিও নয়: গত শনিবার থেকে ফুটবলার, ম্যানেজার এবং দলের অন্যান্যরা হোটেলে রয়েছে। সর্বক্ষণের জন্য দু’জন ডাক্তার নিয়োগ করা হয়েছে। আমাদের মেডিক্যাল টিম তিন-চার দিন অন্তর প্রত্যেকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছে। এখনও পর্যন্ত কারও শরীরে মারণ ভাইরাস পাওয়া যায়নি। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে একসঙ্গে প্রাতরাশ, মধ্যাহ্নভোজ বা নৈশভোজও স্থগিত রাখা হয়েছে। অনুশীলনের সময় ছাড়া কেউ হোটেলের বাইরে পা রাখছে না।
আর্থিক বিপর্যয়: করোনা অতিমারির জেরে ক্লাবের আয় এই মুহূর্তে শূন্য। অথচ খরচ হয়েই চলেছে। ফুটবলারেরা কম বেতন নিতে রাজি ছিল। কিন্তু বরুসিয়া ম্যানেজমেন্ট সেই পথে হাঁটেনি। শুধু তাই নয়, অন্যান্য অনেক ক্লাবের মতো আর্থিক সঙ্কট দূর করতে আমরা ফুটবলারদের বিক্রি করার কথাও ভাবছি না। আমাদের লক্ষ্য ফুটবলারদের ধরে রাখা। ফলে আর্থিক কারণে দলবদলের প্রভাব আমাদের ক্লাবে পড়বে বলে মন হয় না। এমনিতে আমাদের আয়ের একটা বড় অংশ ম্যাচের টিকিট বিক্রি থেকে আসে। ঘরের মাঠে পাঁচটা ম্যাচ আছে। ম্যাচ প্রতি প্রায় ৩ মিলিয়ন ইউরো (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২৫ কোটি) আমরা পাই। এই পরিস্থিতিতে এই টাকাটা আসবে না। কিছু করারও নেই। তা সত্ত্বেও আমরা সরকারের কাছে আর্থিক অনুদান চাইনি। কারণ, আর্থিক সঙ্কট শুধু আমাদের একার নয়, সকলেরই। কিন্তু তার জন্য থেমে থাকলে তো হবে না। প্রতিকূল পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াই করেই এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের আসল পরীক্ষা এ বার শুরু হবে।
সমর্থকদের জন্য গর্বিত: বরুসিয়া ক্লাবের এমডি হিসেবে আমি গর্বিত সমর্থকদের জন্য। ওঁরা সকলেই বুঝেছেন, পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ। কয়েক দিন আগেই সমর্থকদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সে কথা বলেছিলাম। স্টেডিয়ামে বসে ম্যাচ দেখতে পারবেন না বলে হতাশ হলেও কেউ ক্ষুব্ধ নন। সকলেই বাস্তব পরিস্থিতি উপলব্ধি করে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: শামির অব্যর্থ নিশানা মুগ্ধ করে হোল্ডিংকেও
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy