হলিউড তারকাদের হারিয়ে বর্ষসেরা স্টাইলিশ পুরুষের খেতাব পেলেন রজার ফেডেরার। এক ম্যাগাজিনের সমীক্ষার বিচারে।
টেনিস কোর্টে তো বহুবার লড়েছেন রাফায়েল নাদালের সঙ্গে। কিন্তু যদি কখনও স্প্যানিশ তারকার সঙ্গে পাঞ্জা লড়তে বলা হয় তাঁকে? পারবেন রজার ফেডেরার?
বৃহস্পতিবার ফ্যানদের সঙ্গে এক লাইভ ইন্টারনেট চ্যাটে এমনই প্রশ্ন উড়ে এল ফেডেরারের দিকে। যার উত্তরে আগাম হার স্বীকার করে নিয়ে টেনিস কিংবদন্তি বললেন, ‘‘আর ইউ সিরিয়াস? একেবারেই পারব না। কোনও প্রশ্নই ওঠে না। আমার হাতগুলো ভাই খুব ছোট ছোট।’’ ফ্যানরা তাঁকে এইটুকুতেই রেহাই দেননি। এর পরেই প্রশ্ন ছুড়ে দেওয়া হয়, নোভাক জকোভিচ যদি পাঞ্জা লড়ার প্রস্তাব দেন। তাতেও অবশ্য বিন্দুমাত্র বিরক্ত হননি ফেডেরার। বরং বেশ মজা করেই বলেছেন, ‘‘মনে হয় না ওর সঙ্গেও পারব। আমার তো মনে পড়ে না, কখনও কাউকে পাঞ্জায় হারিয়েছি বলে। যতবার পাঞ্জা লড়তে নেমেছি, ততবার হেরেছি।’’
তবে টেনিস কোর্টে ফের রাফা আর জোকারের মুখোমুখি হওয়ার জন্য মুখিয়ে তিনি। দুবাইয়ে তাঁর পুরো ট্রেনিং টিমের সঙ্গে জমিয়ে প্র্যাকটিস করছেন। ফরাসি খেলোয়াড় বিশ্বের ১৫ নম্বর লুকাস পুইকে ট্রেনিং পার্টনারও পেয়ে গিয়েছেন তিনি। বাইশ বছর বয়সি লুকাসের সঙ্গে তাঁর প্রস্তুতি নিয়ে এ দিন ফেডেরার বলেন, ‘‘খেলোয়াড় হিসেবে যেমন, ট্রেনিং পার্টনার হিসেবেও তেমনই দুর্দান্ত লুকাস। এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ওর মতো একজনকে প্র্যাকটিসে সঙ্গে পাওয়াটা বড় ব্যাপার। প্রস্তুতিটাও সে রকমই হচ্ছে আমার।’’
সোশ্যাল মিডিয়ায় এ দিন তাঁর প্র্যাকটিস আধ ঘণ্টার জন্য লাইভ দেখানোও হয়। যা এই প্রথম কোনও তারকা টেনিস খেলোয়াড় করে দেখালেন। হাঁটুর চোটের জন্য গত বছর উইম্বলডন সেমিফাইনালের পর আর কোর্টে দেখা যায়নি সুইৎজারল্যান্ডের এই টেনিস কিংবদন্তিকে। কোর্টের বাইরের সেই সময় নিয়ে ফেডেরার বলেন, ‘‘গত ছ’মাস জীবন খুব ধীরগতিতে কেটেছে। হাঁটুর রিহ্যাব করেছি। বিশ্রামও নিয়েছি প্রচুর। ফিটনেস ফিরে পাওয়ার জন্য যা যা করার, সবই অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছি। এখন কোর্টে ফেরার লড়াই চলছে আমার। ইচ্ছে আছে (নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহেই) পারথে হপম্যান কাপে খেলে নিজের ফিটনেসের অবস্থাটা বুঝে নেব। তার পর অস্ট্রেলিয়ান ওপেন। মেলবোর্নেই আশা করি বুঝতে পারব, সব ঠিকঠাক আছে কি না, সারা বছরের লড়াইটা করতে পারব কি না।’’ আর ১৮ নম্বর গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেতাবটা? ‘‘মোটেই সহজ হবে না ওটা। যা সব ভাল ভাল প্লেয়ার নেমে পড়েছে সার্কিটে। জানি না পারব কি না।’’
পনেরো বছর পর হপম্যান কাপে নামতে চলেছেন ফেডেরার। ২০০০-এ মার্টিনা হিঙ্গিসের সঙ্গে জুটিতে খেলার পর ২০০২-এ তাঁর বর্তমান স্ত্রী মিরকার সঙ্গে মিক্সড ডাবলসে খেলেছিলেন তিনি। তার পর থেকে আর কখনও এই মিক্সড ডাবলস টুর্নামেন্টে নামেননি। এ বার নামবেন স্বদেশীয় বেলিন্ডা বেনচিকের সঙ্গে। ছ’মাস ধরে গ্যালারি ভর্তি সমর্থকদের সামনে না খেলতে পেরে যে ছটফট করছেন, তা জানিয়ে এ দিন এই ইন্টারনেট আড্ডায় ফেডেরার বলেন, ‘‘ফ্যানদের এই ক’দিন খুব মিস করেছি। তাঁদের জন্যই কোর্টে ফিরতে চাই। জানি কাজটা বেশ কঠিন। ছ’মাস পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটানোর পরে ফের সার্কিটের রগড়ানিতে ফেরাটা আমার শরীর নিতে পারবে কি না জানি না। সে জন্যই প্র্যাকটিসে যতটা পারছি পরিশ্রম করছি। যতটা সম্ভব ঘাম ঝরাচ্ছি।’’
তাঁর আধ ঘণ্টার লাইভ প্র্যাকটিস দেখে অবশ্য মনে হল না তাঁর ফিটনেস নিয়ে এখন আর কোনও সমস্যা আছে বলে। এক প্রশ্নের উত্তরে নিজেই বললেন, ‘‘আমার হাঁটু এখন একেবারে পারফেক্ট। তাই কোনও অসুবিধা হচ্ছে না।’’
কিন্তু দুবাইয়ে গিয়ে নিজেকে কোর্টে ফেরানোর লড়াই করছেন কেন? ফেডেরারের উত্তর, ‘‘এখানকার পরিবেশ, ঝকঝকে আবহাওয়া দুটোই আমার খুব পছন্দ। প্র্যাকটিসে ছুটি নিয়েও ভাল ভাবে দিন কাটানো যায়। এই তো কালকেই বেড়াতে গিয়েছিলাম মরুভূমিতে। উটের পিঠে চাপলাম। দারুণ লাগল।’’ উঠের পিঠে চাপলেও কখনও ঘোড়ার পিঠে চাপার সাহস হয়নি বলে এক ভক্তকে জানান ফেডেরার।
যতই নিজেদের মধ্যে কোর্টে শত্রুতা থাক, কোর্টের বাইরে তাঁরা যে ভাল বন্ধু, সেটা বোঝাতেই বোধহয় ফ্যানদের রজার বলেন, ‘‘রাফায়েলের অ্যাকাডেমিতে গিয়েছিলাম একবার। অসাধারণ একটা অ্যাকাডেমি বানিয়েছে। ওর অ্যাকাডেমিতে যে বাচ্চারা শেখার সুযোগ পাবে, তাদের ভাগ্য খুব ভাল।’’ রাফার ডাকে রজার তাঁর অ্যাকাডেমিতে গিয়েছিলেন যেমন, এ বার তাঁর ডাকে অ্যান্ডি মারে যাচ্ছেন রজার ফেডেরার ফাউন্ডেশনের চ্যারিটি ম্যাচে। জুরিখে আগামী বছরের শুরুতেই। সেই ম্যাচে রজার বনাম জোকার মুখোমুখি লড়াই হবে। এই ম্যাচ থেকে তোলা অর্থ ব্যায় হবে অবহেলিত শিশুদের জন্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy