Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

নাডা সম্পর্কিত জরুরি কিছু প্রশ্নের সন্ধান

ওয়াডার মতো বিশ্বাসযোগ্যতা নেই ভারতীয় সংস্থার। রাজনৈতিক প্রভাবের কথা উঠেছিল রিয়ো অলিম্পক্সের সময়েই।

শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৯ ০৪:১৬
Share: Save:

ওয়াডা এবং নাডা কী: ওয়াডা (ওয়ার্ল্ড অ্যান্টি ডোপিং এজেন্সি) হল বিশ্ব ডোপ-বিরোধী সংস্থা। ডোপিং ধরার জন্য স্বশাসিত, সব চেয়ে বিশ্বস্ত সংস্থা এবং তাদের রায়ই ক্রীড়া ক্ষেত্রে চূড়ান্ত। ১৯৯৯ সালে ডোপিং বন্ধ করার লক্ষ্য নিয়ে গঠন করা হয়। নাডা হল ওয়াডার অধীনস্থ ভারতীয় ডোপ বিরোধী সংস্থা। ভারতে সব অলিম্পিক ক্রীড়ার খেলোয়াড়দের নাডার মাধ্যমেই ডোপ পরীক্ষা করা হয়। ক্রিকেটারেরাও এ বার চলে এলেন এই ছাতার তলায়।

নাডা কতটা বিশ্বাসযোগ্য: ওয়াডার মতো বিশ্বাসযোগ্যতা নেই ভারতীয় সংস্থার। রাজনৈতিক প্রভাবের কথা উঠেছিল রিয়ো অলিম্পক্সের সময়েই। ডোপ পরীক্ষায় ব্যর্থ কুস্তিগীর নরসিংহ যাদবকে রহস্যজনক ভাবে মুক্তি দিয়ে অলিম্পক্সে নামার ছাড়পত্র দিয়েছিল নাডা। রিয়োতে যাওয়ার পরে ওয়াডা আটকে দেয় নরসিংহকে।

ক্রিকেটে কেন ডোপ কড়াকড়ি: ক্রিকেটে ২০০২ থেকে ডোপ পরীক্ষা করছে আইসিসি। কিন্তু ওয়াডার অধীনে আসতে শুরু করে ২০০৬ থেকে। তার পরেই বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি হতে শুরু করেছে। আইসিসি কর্তারা বুঝতে পেরেছেন, সারা বিশ্বের চোখে ক্রিকেটের ভাবমূর্তি পরিচ্ছন্ন করে তুলতে গেলে সঠিক ডোপ বিরোধী নীতি থাকতে হবে।

ভারতীয়দের অবস্থান কী: ভারতীয় বোর্ড বা ক্রিকেটারেরা ডোপ পরীক্ষার বিরোধী নন। আবার সারা বিশ্ব যে নিয়ম মানে, সেটাও তাঁরা মানতেন না এত দিন। নিজেদের পছন্দের এজেন্সি দিয়ে তাঁরা ডোপ পরীক্ষা করাতেন। যা নিয়ে প্রচুর প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষ করে পৃথ্বী শয়ের ডোপ পরীক্ষায় ব্যর্থ হওয়ার ঘটনায় নানা অসঙ্গতি চোখে পড়েছে। কথা উঠেছে, বোর্ডের প্রক্রিয়ার সত্যতা নিয়ে। ভারতীয় ক্রিকেটারদের মূল আপত্তি ছিল ‘হোয়্যারঅ্যাবাউট্স ক্লজ’ নিয়ে।

‘হোয়্যারঅ্যাবাউট্স ক্লজ’ কী: র‌্যাঙ্কিংয়ে উপরের দিকে থাকা খেলোয়াড়দের ডোপ-বিরোধী সংস্থার কাছে তিনটি নির্দিষ্ট তারিখের উল্লেখ করে বলতে হয়, এই তিনটি দিনে তাঁরা কোথায় থাকবেন। এই তিনটি তারিখ এমন হবে, যখন তিনি খেলার মধ্যে থাকবেন না। সেই সময়ে হাজির হয়ে ডোপ-বিরোধী সংস্থার অফিসারেরা তাঁর নমুনা সংগ্রহ করবেন। একে বলা হয় ‘আউট অফ দ্য কম্পিটিশন টেস্ট’ অর্থাৎ প্রতিযোগিতার বাইরের ডোপিং পরীক্ষা। এমন অনেক আধুনিক ডোপিং বেরিয়ে গিয়েছে, যা হয়তো প্রতিযোগিতায় নামার সময় ধরা পড়ে না। হিসাব কষে তার দু’তিন মাস আগেই সেই নিষিদ্ধ দ্রব্য নিয়ে নেন খেলোয়াড়েরা। সেটা ধরার জন্যই এমন পরীক্ষা রাখা হয়েছে। ভারতীয় ক্রিকেট নাডা এবং ওয়াডার অধীনে চলে এল মানে এই ধারা অনুযায়ী ধোনি, রোহিত কোহালিদের বছরে এমন তিনটি তারিখ দিতে হতে পারে।

ক্রিকেটারদের আপত্তি কোথায়: ভারতীয় তারকা ক্রিকেটারেরা অতীতে জানিয়েছেন, ছুটির মধ্যে এমন তিনটি তারিখ দেওয়া মানে তাঁদের ব্যক্তিগত জীবনের গোপনীয়তা ভঙ্গ হতে পারে। দ্বিতীয়ত, অনেকের উপর জঙ্গিদের হুমকি থাকায় নিরাপত্তার কারণেও এ ভাবে ছুটিতে কোথায় থাকবেন, বলা ঝুঁকিপূর্ণ। আইসিসি নানা ভাবে ভারতীয়দের বোঝানোর চেষ্টা করেছে কিন্তু অতীতে মানাতে পারেনি।

শুধু কি ভারতীয়রাই নারাজ: ভারতীয় ক্রিকেটারেরা মোটেও একা নন। অনেকেই বিশ্ব ডোপ বিরোধী সংস্থার প্রক্রিয়া নিয়ে সরব হয়েছে। ফুটবলে ফিফা এখনও পুরোপুরি ওয়াডায় আস্থা রাখতে পারেনি। টেনিস তারকারা মানতে বাধ্য হলেও মধ্যে সেরিনা উইলিয়ামস এবং রাফায়েল নাদাল ওয়াডার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন এই ‘হোয়্যারঅ্যাবাউট্স ক্লজ’ নিয়েই। কোনও কোনও অ্যাথলিট ছুটিতে থাকার সময় ভোর চারটেতেও জাগিয়ে তুলে নমুনা সংগ্রহ করেছেন ডোপিং অফিসারেরা। বিশ্বব্যাপী প্লেয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনদের সভা হয়েছে। তাতে ক্রিকেটারদের সংস্থার প্রতিনিধিরাও যোগ দিয়েছেন।

বাকি দেশের অবস্থান কী: আপত্তি তুললেও ক্রিকেটে বাকি সব দেশই ওয়াডার অধীনস্থ হতে রাজি হয়ে গিয়েছে। এত দিন একমাত্র ভারতই মানতে চায়নি। সেই দিন শেষ।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy