বিশ্বাস: বিশ্বকাপে হেরে গিয়েছে ভারতের খুদেরা। তবু স্বপ্ন দেখা ছাড়ছেন না কোচ মাতোস। ফাইল চিত্র
প্রশ্ন: দেশে ছুটি কাটাতে যাচ্ছেন নাকি?
মাতোস: না, না। সে রকম কোনও পরিকল্পনা নেই। ছেলেদের দু’দিন ছুটি দিয়েছি। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটিয়ে চাঙ্গা হয়ে আসার জন্য। আমাকে তো আই লিগের প্রস্তুতি শুরু করতে হবে। অনূর্ধ্ব-১৯ এএফসি কাপের টিম নিয়ে কথা বলতে হবে। ছুটি কাটাবো কী করে? দেশে যাওয়ার প্রশ্ন নেই।
প্রশ্ন: আই লিগে যুব বিশ্বকাপ খেলা টিমের সবাই থাকবে? কেউ বাদ যেতে পারে?
মাতোস: ভারত বিশাল দেশ। এখনও প্রচুর ফুটবলার ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। যাদের দেখিনি। আমার আনোয়ার আলি, জ্যাকসন সিংহ, নমিত দেশপান্ডের মতো লম্বা ছেলে টিমে দরকার। খুঁজতে হবে। ছয় মাস দায়িত্ব নিয়ে তো আনোয়ার, জ্যাকসনদের আমিই টিমে ফিরিয়েছি। কাকে বাদ দেব বা পুরো টিম রেখে দেব কি না তা ঠিক করিনি। ফেডারেশন কী চাইছে দেখি। তবে আই লিগে অনূর্ধ্ব-১৯ ভারতীয় দল থেকে কিছু ফুটবলার নেব ঠিক করেছি।
প্রশ্ন: আই লিগে কি ভাল কিছু আশা করছেন? এখানে তো সব সিনিয়র ফুটবলার খেলবে। সঙ্গে পাঁচ জন বিদেশি। পারবেন?
মাতোস: (হেসে) আই লিগের টিম কি কলম্বিয়া বা যুক্তরাস্ট্রের চেয়েও শক্তিশালী? জানি আই লিগে ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, শিলং লাজং-এর মতো তিন-চারটে ভাল টিম আছে। তবে এটা একটা প্রক্রিয়া। একটা টিমকে পাঁচ বছর ধরে ঝাড়াই-বাছাই করে দাঁড় করানো হয়েছে। তাদের এখন প্রতিযোগিতার মধ্যে রাখতে হবে। লড়াইতে রাখতে হবে। দর্শক ভর্তি স্টেডিয়ামে খেলাটা দরকার অভিজ্ঞতা বাড়ানোর জন্য। তবে এটা বলছি, আমার টিমের যা মানসিকতা তাতে বিপক্ষ যতই শক্তিশালী হোক জেতার জন্যই খেলতে নামবে। আমার দর্শন হল, কোনও ম্যাচ হারা চলবে না।
প্রশ্ন: আই লিগের সঙ্গে তো আবার অনূর্ধ্ব-১৯ এএফসি টিমের জন্যও তৈরি হতে হবে। সামনেই তো ওটা আছে।
মাতোস: হ্যাঁ। সেটাও মাথায় রাখছি।
প্রশ্ন: ঘানার কাছে চার গোল খাওয়ার পর রাতে ঘুম হয়েছিল?
মাতোস: সেটা পুরো হয়েছে বলব না। তবে তা ঘানার কাছে বড় ব্যবধানে হারের জন্য নয়। ওটা জানাই ছিল। প্রথম পয়তাল্লিশ মিনিটের পর দাঁড়াতেই পারিনি আমরা। সাত দিনে তিনটে শক্তিশালী টিমের বিরুদ্ধে ম্যাচ খেলার মতো শারীরিক ক্ষমতা আমার ছেলেদের নেই। অস্বস্তি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র এবং কলম্বিয়া ম্যাচ থেকে আমরা পয়েন্ট পেলাম না বলে। টিম যা খেলছে দু’পয়েন্ট নিয়ে শেষ করতেই পারতাম। এই দুঃখ জীবনে ভুলব না।
(একটু থেমে কিছুক্ষণ সময় নিলেন মাতোস, মুখটা আরও বিবর্ণ হল।) এখন মনে হচ্ছে ঘানা ম্যাচটা প্রথম পড়লে ভাল হতো। অভিজ্ঞতা নিয়ে পরের দুটো ম্যাচে নামতে পারত ছেলেরা। কী আর করা যাবে। যাই হোক ছেলেদের জন্য আমি গর্বিত। ওরা যে সব টিমের সঙ্গে খেলেছে তারা বিশ্বের অন্যতম সেরা দল।
আরও পড়ুন: সুনামি-যুদ্ধ জিতে বিশ্বজয়ের শপথ আন্দামানের মেয়ের
প্রশ্ন: সিনিয়র টিমের কোচ স্টিভন কনস্ট্যান্টাইনের সঙ্গে কথা হয়? সম্পর্ক কেমন?
মাতোস: হয়। কখনও-সখনও। এএফসি কাপের মূল পর্বে খেলার যোগ্যতা পাওয়ার পর অভিনন্দন জানিয়েছিলাম। ও পাল্টা মেসেজ করেছিল। শুনলাম ঘানা ম্যাচে মাঠে এসেছিল। ওভাবে হারের পর মনটা খারাপ ছিল, কারও সঙ্গেই কথা বলিনি।
প্রশ্ন: কিন্তু আপনি ঘানা ম্যাচের পরে যে ভাবে কটাক্ষ করলেন সিনিয়র দলের নেপাল, ভূটান, মলদ্বীপের সঙ্গে খেলা নিয়ে, তাতে তো অন্য গন্ধ…….।
মাতোস (শেষ করত না দিয়ে): যেটা হয়েছে সেটাই বলেছি। কাউকে তো কটাক্ষ করতে চাইনি।
প্রশ্ন: তিন ম্যাচে নয় গোল। ঘানার বিরুদ্ধে ও রকম রক্ষণাত্মক ফুটবল খেললেন বলে তো আপনার প্রচুর সমালোচনা হচ্ছে।
মাতোস: কে কী বলছে জানি না। আমি শুধু জানতে চাইছি এর আগে ভারতের কোনও দল এ রকম টিমের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপে খেলেছে? দেখে নেবেন এই ঘানা শেষ চারে যাবে। আমি আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে কোচিং করিয়েছি। সেনেগালে ছিলাম বহুদিন। জানি ওদের শক্তি। কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে দু’জন স্ট্রাইকার রেখে খেলছিলাম। ঘানার বিরুদ্ধে ও রকম স্ট্র্যাটেজি নিলে সাত-আট গোল খেতাম। সেটাই কি সবাই চাইছিল?
প্রশ্ন: যে পরিস্থিতিতে দায়িত্ব নিয়েছিলেন ছয় মাস আগে, সেই অনুযায়ী কোচিং করিয়ে কি আপনি তৃপ্ত?
মাতোস: একটা বা দুটো পয়েন্ট পেলে ভাল হতো। তবে আমি যেটা চেয়েছিলাম সেটা পেয়েছি। ছেলেরা বিশ্বাস করতে শুরু করেছে, তারা বিশ্বকাপ ম্যাচ জিততে পারে। অভিজ্ঞতায় মার খেয়েছি। সব টিমের কোচই তো আমাদের খেলার মধ্যে শৃঙ্খলার প্রশংসা করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy