তৃপ্ত: আইপিএলে ইডেনের সেই ইনিংস ভোলেননি মইন। ফাইল চিত্র
আইপিএলে ইডেনের সেই ইনিংস এখনও তাঁর চোখের সামনে ভাসছে। যেখানে কুলদীপ যাদবের এক ওভারে ২৬ রান নিয়ে তিনি কাঁদিয়ে দিয়েছিলেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের চায়নাম্যান বোলারকে। এ বার বিরাট কোহালির রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর বেশ কিছু ক্রিকেটার ছেড়ে দিলেও দলে রেখে দিয়েছে তাঁকে। ইংল্যান্ড অলরাউন্ডার মইন আলি এই মুহূর্তে আবু ধাবিতে ব্যস্ত টি-টেন ক্রিকেট খেলতে। তারই ফাঁকে আনন্দবাজারের সঙ্গে কথা বললেন ক্রিকেটারদের মানসিক সমস্যা থেকে শুরু করে পরের বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে।
ক্রিকেটারদের মানসিক ক্লান্তি: অবশ্যই ক্রিকেটাররা মানসিক ভাবে ভীষণ ক্লান্ত হয়ে পড়ে। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের মতো ক্রিকেটার সাময়িক বিশ্রামে গিয়ে ঠিক করেছে। ওদের এই বিশ্রামটা ভীষণ জরুরি। আমিও তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে এখন কিছু দিন দূরে আছি। যদিও আমারটা মানসিক কারণ বলা যাবে না, কিন্তু ক্রিকেট খেলতে খেলতে শারীরিক ভাবে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। এত ক্রিকেট খেলা হয় এখন! সেই এক প্র্যাক্টিস, এক রুটিন, এক ওয়ার্ম আপ। ক্লান্তি তো আসবেই। সবাই ভুলে যায়, মাঠের বাইরেও ক্রিকেটারদের একটা জীবন আছে। পরিবার আছে। আমরা তো খেলেই চলেছি। ক্রিকেট একটা কঠিন খেলা। মানসিক এবং শারীরিক ভাবে। অতিরিক্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটই এই মানসিক ক্লান্তির পিছনে আছে বলে মনে হয়। তাই মাঝে মাঝে মাঠ থেকে দূরে থাকলে এক জন ক্রিকেটারের পক্ষে সেটা ভালই হবে।
ইডেনের সেই ইনিংস: ইডেনের পিচটা খুব ভাল ছিল। একটা দিকের বাউন্ডারি বেশ ছোট ছিল। আমি আর বিরাট কোহালি ব্যাট করছিলাম। জানতাম, দু’জনের মধ্যে এক জনকে মারতে হবে। ভালই ছন্দে ছিলাম। বিরাটও বলল, রান রেটটা বাড়াতে হবে। তাই কুলদীপের ওই ওভারে মারব বলে ঠিক করি। আমি যখন ছন্দে থাকি, এই সব বড় শট খেলা সহজ হয়ে যায়। সে দিনও হয়েছিল। কুলদীপকে বুঝতে সমস্যা হয়নি।
কুলদীপের রহস্যভেদ: উল্টো দিকে বিরাট থাকলেও সে দিন ও কিন্তু আমাকে কোনও পরামর্শ দেয়নি, কী ভাবে কুলদীপকে খেলতে হবে। আমি নিজে যথেষ্ট ক্রিকেট খেলেছি এক জন বোলারকে বুঝে নেওয়ার জন্য। কুলদীপ নিঃসন্দেহে খুব ভাল বোলার। কিন্তু ওর বল বুঝতে পারাটাও এমন কিছু কঠিন কাজ নয়। কোনও কোনও দিন বোলারকে বুঝে নেওয়া যায়। কোনও কোনও দিন যায় না। এটাই ক্রিকেট। বিরাট আমাকে উৎসাহ দিয়ে গিয়েছিল।
আরসিবি এবং ট্রফি-খরা: এটা ঠিক, আমাদের দলটা খুব ভাল হলেও আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হতে পারছি না। পরের আইপিএলে আমাদের শুরুটা খুব ভাল করতে হবে। যেটা আমাদের হয় না। বেশির ভাগ সময়ই আমরা শুরুতেই হোঁচট খেয়ে যাই। আমাদের আরও সাহসী হতে হবে। চিন্নাস্বামীর পিচটা খুব ভাল। বাউন্ডারি ছোট। বোলারদের কাছে যা বেশ আতঙ্কের বিষয়। বিপক্ষকে থামাতে গেলে মনে হয় আমাদের আরও বেশি সাহসী হতে হবে।
আরসিবি ও কোহালি: দলে বিরাটের মতো এক জন ব্যাটসম্যান থাকলে স্বাভাবিক ভাবেই ওর উপরে সবাই বেশি নির্ভর করে থাকে। এই অতিরিক্ত বিরাট-নির্ভরতা আমাদের কাটিয়ে উঠতে হবে। এ বি ডিভিলিয়ার্স, আমি আর যে সব ব্যাটসম্যান আসবে, তাদের দায়িত্ব নিতে হবে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। আমাদের মধ্যে কাউকে না কাউকে ম্যাচ উইনার হিসেবে নিজেকে তুলে ধরতে হবে।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ: পরের বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের ভাল সুযোগ আছে। ঠিক যেমন আছে ভারত, অস্ট্রেলিয়ারও। নিউজ়িল্যান্ড সফরে আমরা কিন্তু টি-টোয়েন্টি সিরিজটা ভালই খেললাম। আমাদের প্রথম সারির দল না খেললেও ফল ভালই হয়েছে। ৩-২ সিরিজ জিতেছি। এতে বোঝা যাচ্ছে ইংল্যান্ড দলের রিজার্ভ বেঞ্চের শক্তিও দারুণ। সাদা বলের ক্রিকেটে আমরা খুব ভাল জায়গায় আছি। আমাদের বেশ কয়েক জন ম্যাচ উইনার আছে। বিশ্বকাপেও সেটা বোঝা গিয়েছে। আশা করব, আগামী বছর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতেও সেই ছন্দটা ধরে রাখতে পারব।
অইন মর্গ্যানের নেতৃত্ব: মর্গ্যান দারুণ এক জন অধিনায়ক। আমি যাদের নেতৃত্বে খেলেছি, তাদের মধ্যে সেরা। খুব ঠান্ডা মাথার ছেলে। ম্যান ম্যানেজমেন্ট দক্ষতায় মর্গ্যানের কোনও তুলনা হবে না। ক্রিকেটাররা ওকে ভালবাসে। মর্গ্যানও দলের জন্য সব কিছু করতে পারে।
টেস্টেও রোহিত-বিক্রম: ইদানীং টেস্টে রোহিতের ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছে ও খুব হাল্কা মেজাজে আছে। কোনও রকম চাপ নিচ্ছে না। বিশ্বের অন্যতম প্রতিভাবান ব্যাটসম্যানের নাম রোহিত। মাঝে মাঝে আপনি নিজের উপরে অতিরিক্ত চাপ নিতে গিয়ে ব্যর্থ হন। রোহিতকে দেখে মনে হচ্ছে ও এখন ব্যাটিং উপভোগ করছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy