Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
ইস্টবেঙ্গলে আলোচনা আজ

হাবিরের জন্য বেনিফিট ম্যাচ চান প্রাক্তনরা

বড়ে মিয়াঁ মহম্মদ হাবিব ভাল নেই! তিনি অসুস্থ। আনন্দবাজারে মঙ্গলবার প্রকাশিত এই খবরের জেরে তোলপাড় ময়দান! যে ক্লাবকে পাশে দাঁড়ানোর আবেদন জানিয়ে চিঠি দিয়েছে হাবিবের পরিবার, সেই ইস্টবেঙ্গলের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার যোগাযোগ করা হয়েছিল হায়দরাবাদে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৫৯
Share: Save:

বড়ে মিয়াঁ মহম্মদ হাবিব ভাল নেই! তিনি অসুস্থ।

আনন্দবাজারে মঙ্গলবার প্রকাশিত এই খবরের জেরে তোলপাড় ময়দান!

যে ক্লাবকে পাশে দাঁড়ানোর আবেদন জানিয়ে চিঠি দিয়েছে হাবিবের পরিবার, সেই ইস্টবেঙ্গলের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার যোগাযোগ করা হয়েছিল হায়দরাবাদে। ক্লাবের ম্যানেজার স্বপন বল তাঁকে আশ্বস্ত করেছেন বন্ধ হয়ে যাওয়া পেনশন যাতে হাবিব দ্রুত পান সে জন্য ক্লাব সব রকম চেষ্টা করবে। আজ বুধবার ক্লাবের কর্মসমিতির সভায় হাবিবের জন্য কী করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন লাল-হলুদের শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকার।

বর্তমানে পারকিনসন্স ও অ্যালঝাইমার্স রোগে আক্রান্ত হাবিবের যে ক্লাবে সোনালি দিনগুলো সব থেকে উজ্জ্বল ছিল, সেই ইস্টবেঙ্গলের বাইরেও বহু প্রাক্তন ফুটবলার ও সাধারণ মানুষ সাহায্য করতে চাইছেন সত্তরের দশকের ময়দান কাঁপানো ফুটবলারকে। কেউ চাইছেন বেনিফিট ম্যাচ, কেউ করতে চান সাহায্য, দিতে চান সঙ্গ। সবাই হাবিবকে নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়লেও তাঁর পাশে কী ভাবে দাঁড়াবেন বুঝে উঠতে পারছেন না কেউই। যা শুনে হায়দরাবাদ থেকে ফোনে ধরা গলায় হাবিবের প্রতিক্রিয়া, ‘‘কেন যে হায়দরবাদে জন্মালাম! কেন যে কলকাতায় জন্মালাম না। একটু সুস্থ হলেই কলকাতায় যাব। হায়দরবাদে তো এখন ফুটবলটাই নেই।’’

তিন বারের আই লিগ জয়ী কোচ সুভাষ ভৌমিক মঙ্গলবার বললেন, ‘‘আমি আমার মতো করে ওকে নিয়ে ভাবছি। সেটা সংবাদমাধ্যমে বলতে চাই না। আমার ভাবনায় আছে কী করব।’’ সুভাষের পথে না হেঁটে সুব্রত ভট্টাচার্য আবার হাবিবকে নিয়ে রীতিমতো নস্ট্যালজিক। বড়ে মিয়াকে নিজের ফুটবল গুরু মনে করেন বাগানের ঘরের ছেলে। বলছিলেন, ‘‘হাবিবদা না থাকলে আমি সুব্রত ভট্টাচার্য হতে পারতাম না। ওনার জন্য যদি কিছু না করতে পারি তবে নিজেকে পাপী মনে হবে।’’ এর সঙ্গেই তিনি যোগ করেন, ‘‘সকালে আনন্দবাজারে খবরটা পড়ে মনটা খারাপ হয়ে গেল। আমি হাবিবদাকে সাহায্য করতে চাই। যদি কোনও ক্লাব বা সংস্থা হাবিবদাকে সাহায্য করার জন্য উদ্যোগী হয়, আমি সঙ্গে থাকব। ওঁর জন্য একটা বেনিফিট ম্যাচের আয়োজন করা যেতেই পারে। এবং সেটা হলে অসুস্থ থাকলেও আমি সেই ম্যাচ খেলব।’’

সমস্যা হল, তাঁর সতীর্থ অনেকেই হাবিবের হায়দরাবাদের ঠিকানা জানেন না। তাঁদের জানা নেই ফোন নম্বর! তবে একটা প্রশ্ন উঠছেই, বিদেশে থাকা হাবিবের ছেলে-মেয়েরা স্বচ্ছ্বল হওয়া সত্ত্বেও তাঁর অর্থের প্রয়োজন আদৌ আছে কি না? কারণ ইস্টবেঙ্গলকে পাঠানো চিঠিতে আর্থিক সাহায্যের কোনও কথার উল্লেখ নেই। পাশাপাশি এই প্রশ্নও উঠেছে যে হঠাৎ পেনশনের কিছু টাকার জন্য কেন ইস্টবেঙ্গলের কাছে সাহায্য চেয়ে চিঠি দিল হাবিবের পরিবার?

হাবিবের সঙ্গে বছর দুয়েক ইস্টবেঙ্গলের মেসে কাটিয়েছেন সমরেশ চৌধুরী। খেলেছেন বহু ম্যাচ। সেই বড়ে মিয়ার আদরের পিন্টু বলছিলেন, ‘‘হাবিব শুধু ফুটবলার হিসেবে নয়, মানুষ হিসেবেও অনেক বড়। ওকে তো আমি খুব সামনে থেকে দেখেছি। ও যদি কলকাতাতে থাকত, তবে হয়তো অনেক ভাল থাকত। আমরা সবাই এখানে আছি। হইহই করে সবার সঙ্গে মিলেমিশে সময় কেটে যেত। হয়তো ও এতটা অসুস্থও হত না। শুধু ইস্টবেঙ্গল নয়, ওর জন্য যদি কোনও ক্লাব কিছু করতে উদ্যোগী হয় তবে আমি সঙ্গে আছি। ও তো আমাদের সবারই খুব প্রিয় ফুটবলার।’’ হাবিবের পাস থেকে অসংখ্য গোল রয়েছে যাঁর, সেই শ্যাম থাপা আবার হাবিবের পারকিনসন্স আর অ্যালঝাইমার্স হয়েছে শুনে হতবাক। ‘‘ওর মতো শৃঙ্খলাপরায়ণ ফুটবলারের এ ধরনের কোনও অসুখ হতে পারে, ভাবতেও পারছি না। এই সময়ে ওর পাশে থাকতে চাই। কী ভাবে থাকব বুঝতে পারছি না। হাবিবের জন্য বেনিফিট ম্যাচ কেউ করলে আমি তাদের সঙ্গে থাকব।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Mohammed Habib Ex footballers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE