ফর্মে রয়েছেন ইনসিনিয়ে।
বিশ্বকাপে আমার দেশ ইটালি চার বারের চ্যাম্পিয়ন হলেও ইউরোপীয় খেতাব এক বারের বেশি পাইনি আমরা। তাও সেটা ৫৩ বছর আগে সেই ১৯৬৮ সালে!
ইউরোপীয় খেতাব জয়ে অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময়ের খরা এ বার কাটবে বলেই গোটা দেশ মনে করছে। তাই সেমিফাইনালে স্পেন ম্যাচের আগে উৎকণ্ঠা থাকলেও আলভারো মোরাতা, জেরার মোরেনোদের নিয়ে আমরা খুব বেশি চিন্তিত নই। ইটালি রক্ষণে ওরা জর্জে কিয়েল্লিনিদের কাছে আটকে যাবে বলেই বিশ্বাস। তার পরে আমার পজিশন গোলরক্ষায় রয়েছে জানলুইজি ডোনারুমা। যাকে হার মানানো খুব কঠিন। শেষ আটে বেলজিয়ামকে হারানোর পরে আমাদের আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে। গত ৩২ ম্যাচ অপরাজিত থাকার সময়ে অনেক বিশেষজ্ঞই প্রশ্ন তুলেছিলেন, বড় দলকে আমরা হারালাম কোথায়? এখন তাঁরা চুপ করে গিয়েছেন।
এমন নয় যে মঙ্গলবার রাতে খেলা শেষ হওয়ার পরে বিশাল বিজয়োৎসব করব আমরা। যদি ফাইনালে যাই, তা হলে অল্পবিস্তর আনন্দ-উৎসব হবে ঠিকই। কিন্তু আসল আনন্দ হবে কাপ জিতলে। তিন বছর আগে বিশ্বকাপ খেলতে না পারার ক্ষত এখনও ইটালীয়দের মনে দগদগ করছে। তার নিরাময় হবে ইউরো জিতলে। আমাদের কোচ রবের্তো মানচিনির প্রশিক্ষণে যে ছন্দে খেলছে এ বার ইটালি, তাতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখা অমূলক নয়।
আই লিগের দুই ক্লাব নেরোকা এফসি ও চেন্নাই সিটি এফসিতে খেলার সময়ে দেখেছি, ভারতে লাতিন আমেরিকার দুই ফুটবল শক্তি ব্রাজিল, আর্জেন্টিনার সমর্থক বেশি। ইটালির সমর্থক খুব কম। যাঁরা আছেন, সেই ভারতীয় সমর্থকরাও হয়ত প্রহর গুনছেন সেমিফাইনালে স্পেনকে হারিয়ে ফাইনালে যাওয়ার জন্য। ২০১২ সালে ইউরো ফাইনালে স্পেনের তিকিতাকা আমাদের তাক লাগিয়ে হারিয়েছিল। এ বার আমাদের পালা।
এক বছর আগে করোনা সংক্রমণ আমাদের দেশে তাণ্ডব চালিয়েছিল। সে ভয়ের স্মৃতি কেউ ভোলেনি। এই মুহূর্তে আমি রয়েছি মিলানের কাছাকাছি। সুরক্ষার কারণেই বাড়িতে খেলা দেখব। স্পেনের বিরুদ্ধে শেষ বার ২০১৮ বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন ম্যাচে ইটালি ঘরের মাঠে স্পেনকে রুখে অ্যাওয়ে ম্যাচে হেরেছিল। এ বার জিতব আমরাই
কেন এই আত্মবিশ্বাস? আসলে আমাদের দলটাকে বদলে দিয়েছেন কোচ রবের্তো মানচিনি। রক্ষণাত্মক ফুটবলের আঁতুড়ঘর ইটালি- বিশ্ব ফুটবলের এই ধারণাটাই এখন অতীত। রোনাল্ডো, হ্যারি কেনদের মতো তারকা দলটায় নেই। কিন্তু একদল কার্যকর ফুটবলার রয়েছে। তাই কখন রক্ষণ করতে করতে চূড়ান্ত আক্রমণে গিয়ে লোরেনজ়ো ইনসিনিয়ে বা চিরো ইমমোবিলে দুর্দান্ত একটা মুভ বা সেটপিস থেকে গোল করে আসবে, তা বিপক্ষ ধরতে পারছে না। আর সে কারণেই এই ইটালিকে অপ্রতিরোধ্য লাগছে।
এ রকম একটা মহারণে আমাদের রক্ষণে লিয়োনার্দো স্পিনাজ্জোলা না থাকায় কিছুটা সমস্যা হতে পারে। এ বার ও দারুণ ফুটবল খেলছিল। কিন্তু মোক্ষম সময়েই চোট পেয়েছে। শুনছি ওর জায়গায় এমার্সন পালমিয়েরি খেলতে পারে। আমার ধারণা ও নিরাশ করবে না।
যদিও স্পেন ইউরোপের ফুটবলের একটা ‘পাওয়ার হাউস’। লুইস এনরিকের দল শুরু থেকেই বলের দখল নিজেদের পায়ে বেশি রেখে আমাদের নিরাশ করতে চাইবে। কিন্তু গোল করতে গেলে ওদের আমাদের রক্ষণকে টপকাতে হবে। যা খুব কঠিন। মাঝমাঠে মার্কো ভেরাত্তি, জর্জিনহো, নিকোলো বারেল্লা দলটার আক্রমণের ফুসফুস। আর উপরে ইনসিনিয়ে একাই একশো। এ রকম সংঙ্ঘবদ্ধ দলটাই আমাদের শক্তি। সে কারণেই স্পেনের বিরুদ্ধে জয়ের জন্য আশায় বুক বাঁধছি।
(লেখক আই লিগের প্রাক্তন ফুটবলার। সাক্ষাৎকারভিত্তিক অনুলিখন: দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy