Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
কলকাতা প্রিমিয়ার লিগ

জয়ের দিনেও অস্বস্তি সেই বিদেশি স্ট্রাইকার

লালরাম চুলোভার পেনাল্টিতে ১-০ হারানোর পরে ইস্টবেঙ্গল মাঠের পরিবেশে দেখলে মনে হবে দল কলকাতা লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে গিয়েছে।

উৎসব: কলকাতা লিগে গোল করে চুলোভার সেই অভিনব ভঙ্গি। রবিবার ইস্টবেঙ্গল মাঠে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

উৎসব: কলকাতা লিগে গোল করে চুলোভার সেই অভিনব ভঙ্গি। রবিবার ইস্টবেঙ্গল মাঠে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৮ ০৫:০৩
Share: Save:

ইস্টবেঙ্গল ১ রেনবো ০

আকাশে ফানুস। গ্যালারিতে লাল-হলুদ রংমশাল। সমর্থকদের উদ্বাহু নৃত্য। রেনবোকে রবিবার লালরাম চুলোভার পেনাল্টিতে ১-০ হারানোর পরে ইস্টবেঙ্গল মাঠের পরিবেশে দেখলে মনে হবে দল কলকাতা লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে গিয়েছে। গোলদাতা চুলোভা তখন মাঠেই জবি জাস্টিনের সঙ্গে রসিকতায় মেতেছেন গোলের পরে তাঁর ‘কিকি চ্যালেঞ্জ’-এর নয়া সংস্করণ প্রদর্শন নিয়ে।

কী এই ‘কিকি চ্যালেঞ্জ’? ‘আইস-বাকেট চ্যালেঞ্জ’, ‘নো শেভ নভেম্বর’-এর পরে আপাতত ময়দানে নয়া আমদানি এই ‘কিকি চ্যালেঞ্জ’। দিল্লি, মুম্বই, জয়পুরের পরে যা হানা দিয়েছে কলকাতা ময়দানে। বছরের মাঝামাঝি কানাডার র‌্যাপ গায়ক ড্রেক-এর অ্যালবাম ‘স্করপিয়ন’ প্রকাশিত হয়েছিল। যেখানে একটি গান ছিল ‘‘কিকি ডু ইউ লাভ মি...?’ এই গান নিয়েই সোশ্যাল মিডিয়ার জনৈক কৌতুকাভিনেতা শিগ্গি প্রথম শুরু করেন ‘কিকি চ্যালেঞ্জ’। যেখানে কোনও বিশেষ কাজ করতে গিয়ে কেউ হঠাৎ ভূপতিত হবেন। ইন্টারনেটের মাধ্যমে যা ছড়িয়েছে বিশ্ব জুড়ে। যেখানে কেউ গাড়ি চালানোর মাঝে স্টিয়ারিং ছেড়ে নাচতে নাচতে পড়ে যাচ্ছেন, কেউ বা জমিতে হাল চষার মাঝে। এ দিন যেমন গোলের পরে আলোকচিত্রীদের সামনে স্যালুট করেই মাটিতে হঠাৎ পড়ে গেলেন চুলোভা। খেলা শেষে তিনি বলে গেলেন, ‘‘জবি কয়েক ম্যাচ আগে এটা করেছিল। আজ আমি করলাম। রাস্তায় বা গাড়িতে কখনও করব না। মাঠেই মজা করে নতুন ভঙ্গিতে চ্যালেঞ্জটা সারলাম।’’

চুলোভা ও গ্যালারি জয়ের আনন্দে সাময়িক বুঁদ হলেও এ দিনের ম্যাচ দেখে লাল-হলুদ সমর্থকরা আশঙ্কায়। বাড়ি ফেরার পথে তাঁরা বলে গেলেন, ‘‘আমাদের দলে সব আছে কিন্তু স্ট্রাইকার কোথায়?’’ মাস দু’য়েক আগে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে ইস্টবেঙ্গল হাত ধরেছিল বিনিয়োগকারী সংস্থার। নতুন স্বপ্ন দেখেছিলেন ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা। কিন্তু ডার্বির আগে তাঁদের রক্তচাপ বাড়ছে। কোস্তারিকার বিশ্বকাপার ডিফেন্ডার না খেলে বসে আছেন এক মাস। কবে নামবেন তার কোনও সদুত্তর নেই কর্তাদের কাছে। ৩১ অগস্ট দলবদলের প্রথম ‘উইন্ডো’ শেষ। এর মধ্যে কোনও বিদেশি স্ট্রাইকার না এলে আগামী জানুয়ারি পর্যন্ত নতুন কাউকে সই করানো যাবে না। বিপক্ষ মোহনবাগানে দিপান্দা ডিকা-হেনরি কিসেক্কা যখন গোলের প্লাবন এনে দিয়েছেন, তখন লাল-হলুদে ‘দেড়খানা’ স্ট্রাইকার জবি আর বালি গগনদীপ। কবে বিদেশি স্ট্রাইকার আসবে? কে আনবে? কখন আসবে? কেউ জানে না। ‘নাকের বদলে নরুন’-এর মতোই স্ট্রাইকারের বদলে স্প্যানিশ ডিফেন্ডার নিয়েছে ক্লাব। জবি-বালিরা কড়া রক্ষণের সামনে ধরা পড়ে যেতে পারেন যে কোনও দিন। এ দিন যেমন সেই পরিস্থিতির উদয় প্রায় হতে বসেছিল। জানা নেই, লাল-হলুদের সেই বিনিয়োগকারী সংস্থার কর্তারা এই আশঙ্কা সম্পর্কে অবহিত কি না।

রেনবো কোচ তড়িৎ ঘোষ এ সবের সঙ্গেই জানতেন, এই ইস্টবেঙ্গল দলের নিউক্লিয়াস আল আমনা। তিনি খেললে লাল-হলুদ শিবির সচল। তাই চার ব্যাকের সামনে তিনি অভিজিৎ সরকার ও সৌরভ রায়কে দিয়ে আমনাকে বোতলবন্দি করার পরিকল্পনা করেছিলেন। আমনা সেই জাল কেটে বেরোনোর চেষ্টা করলেও সফল হননি প্রথমার্ধে। কিন্তু এরই মাঝে সেই পেনাল্টি। সুরাবুদ্দিন মল্লিককে রেনবো বক্সের মধ্যে সৌরভ রায় বাধা দিতে গিয়েছিলেন। তাঁর কনুই সুরাবুদ্দিনের গায়ে লাগায় রেফারি পেনাল্টি দেন। যা নিয়ে ক্ষোভ রেনবো শিবিরে। দ্বিতীয়ার্ধে ইস্টবেঙ্গল মাঝমাঠে কমলপ্রীত সিংহ ও কাশিম আইদারা চোট পেয়ে উঠে যান। ম্যাচের রাশ অনেকটাই উঠে আসে রেনবোর হাতে। ভাগ্য ভাল থাকায় গোল খেতে হয়নি ইস্টবেঙ্গলকে।

জয়ের দিনে তাই দূরবীন দিয়ে তাই বিদেশি স্ট্রাইকার খুঁজছে ইস্টবেঙ্গল।

ইস্টবেঙ্গল: রক্ষিত ডাগর, সামাদ আলি মল্লিক, মেহতাব সিংহ, কিংশুক দেবনাথ, লালরাম চুলোভা, কাশিম আইদারা (সঞ্চয়ন সমাদ্দার), সুরাবুদ্দিন মল্লিক, কমলপ্রীত সিংহ গ্রেওয়াল (প্রকাশ সরকার), ব্র্যান্ডন ভ্যানলালরেমডিকা, মহম্মদ আল আমনা, জবি জাস্টিন (বালি গগনদীপ)।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE