সফল: পেনাল্টিতে গোলের পরে কাতসুমি। বারাসাতে। —নিজস্ব চিত্র।
জয় পেয়ে যেন চাপমুক্তি হল ইস্টবেঙ্গলের!
লাজং এফসি-কে হারিয়ে ইস্টবেঙ্গল কোচ খালিদ জামিল থেকে ফুটবলার মহম্মদ আল আমনা সকলেই বলছেন, ‘‘আপাতত চাপ কাটল।’’
সাংবাদিক সম্মেলনে এসে ইস্টবেঙ্গল কোচ বললেন, ‘‘বড় ম্যাচ হারলে চাপ থাকবেই। কারণ দলটার নাম ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু সেটা কাটিয়ে আজ বেরিয়ে আসা গিয়েছে। সঠিক সময় গুরুত্বপূর্ণ জয় পেলাম আমরা।’’
আর ডার্বি ম্যাচে ম্লান থাকার পরে এ দিন মাঝমাঠে যিনি ইস্টবেঙ্গলকে সচল রাখলেন, সেই মহম্মদ আল আমনা গোল করে ও করিয়ে গম্ভীর মুখে বলে গেলেন, ‘‘এই ম্যাচটা না জিততে পারলে বিপদে পড়তাম আমরা। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ, সেই বিপদে পড়তে দেননি তিনি। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটা জিতে ফেরায় এ বার সেই চেনা ছন্দে ফিরতে পারব আমরা।’’
তার পরেই বলে দিলেন তাঁর চাপমুক্তির কথা। ‘‘ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা। কলকাতা লিগ জেতার সময় আমাদের জন্য গলা ফাটিয়ে প্রেরণা জুগিয়েছে। কিন্তু ডার্বি হারায় ওদের কাঁদতে দেখে ভাল লাগেনি।’’ একটু থেমে ইস্টবেঙ্গলের ছয় নম্বর জার্সিধারী সিরিয়ান ফুটবলার বলেন, ‘‘বড় ম্যাচের পর চাপটা আমাদের ঘাড়ে চেপে বসেছিল। এই ম্যাচে জিততেই হতো আমাদের। গত কয়েক দিনে রাতে ঘুমোতে পারিনি। বার বার জেগে উঠেছি। আজ আমার জীবনের অন্যতম একটা চাপের ম্যাচ সেরা খেলে ফিরলাম। আজ অন্তত নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারব।’’
আমনার কাজটা এ দিন সহজ হয়ে গিয়েছিল লাজং মাঝমাঠ সে ভাবে তাঁকে নজরে না রাখায়। যা মোহনবাগান ম্যাচে করেছিলেন সবুজ-মেরুনের জাপানি মিডিও ইউতা কিনোয়াকি। মাঝমাঠে কার্যকর হতে হতে গেলে আমনার একটা পাঁচ-দশ গজের দৌড়ানোর জায়গা চাই। কিন্তু মোহনবাগান ম্যাচে সেই রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছিলেন ইউতা। এ দিন তাঁকে যিনি মার্কিং-এর দায়িত্বে ছিলেন সেই নাইজিরিয়ান ড্যানিয়েল ওডাফিন আমনাকে প্রায় ছেড়েই রেখেছিলেন। ফলে আমনার বিপক্ষের রক্ষণে দাপিয়ে বেরিয়েছেন আমনা।
ম্যাচের পর সাংবাদিক সম্মেলনে এসেছিলেন ইস্টবেঙ্গলের জোড়া গোলদাতা লালডানমাউইয়া রালতে। যে গোল তিনি উৎসর্গ করছেন তাঁর মাকে।
তবে জয় পেলেও ইস্টবেঙ্গল কোচ আত্মতুষ্টিতে ভুগতে নারাজ। বরং তিনি বলছেন, ‘‘এই ম্যাচ ভুলে এ বার পরের ম্যাচের পরিকল্পনা করতে হবে। এখনও আমাদের দলে মনঃসংযোগের অভাব ঘটছে। ফিনিশিং ঠিক মতো হচ্ছে না।’’ তবে কর্তাদের চাপে কি না জানা নেই, খালিদকে দিন দল পরিচালনা করতে দেখা গিয়েছে সহকারী কোচের সঙ্গে আলোচনা করেই।
এ দিন ম্যাচের একদম শেষ দিকে লাজং বক্সে রালতে-কে অবৈধ ভাবে বাঁধা দেন লাজং ডিফেন্ডাররা। রেফারি সেন্থিল নাথন পেনাল্টির নির্দেশ দিলে গোটা স্টেডিয়াম রালতের হ্যাটট্রিকের জন্য দাড়িয়ে আগাম হাততালি দিতে শুরু করে দিয়েছিল। কিন্তু সবাইকে অবাক করে পেনাল্টি মারতে এগিয়ে যান কাতসুমি। যা ভাল চোখে দেখেননি ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা। ইস্টবেঙ্গল কোচ এ ব্যাপারে বিতর্ক এড়িয়ে গিয়ে বলেন, ‘‘পঞ্চম গোলটা তো হয়েছে। আর সেটা ইস্টবেঙ্গলকেই দেওয়া হয়েছে। তা হলে এত বিতর্ক কেন?’’
তবে এরই মাঝে ইস্টবেঙ্গল শিবিরে কাঁটাছেঁড়া চলছে উইলিস প্লাজা কেন গোল পাচ্ছেন না তা নিয়ে। যা নিয়ে প্লাজা কিছু না বললেও তাঁর হয়ে কোচ বলছেন, ‘‘ও ঠিক গোল করবে। একটু অপেক্ষা করুন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy