Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
East Bengal

কর্তাদের অনড় মানসিকতাতেই লাল-হলুদে বাড়ছে চুক্তি-জট

একেবারে শেষ মুহূর্তে লগ্নিকারী এনে আইএসএলে খেলার দরজা খুললেও মুষ্টিমেয় কয়েক জন কর্তার জন্য ফের লাল-হলুদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে।

ইস্টবেঙ্গল ক্লাব

ইস্টবেঙ্গল ক্লাব —ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০২১ ০৪:৫১
Share: Save:

একেবারে শেষ মুহূর্তে লগ্নিকারী এনে আইএসএলে খেলার দরজা খুললেও মুষ্টিমেয় কয়েক জন কর্তার জন্য ফের লাল-হলুদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে। বিনিয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে কর্তাদের চুক্তি নিয়ে বাড়তে থাকা বিবাদে অশনি সঙ্কেত দেখছেন লক্ষ লক্ষ সমর্থক।

যা ইঙ্গিত, সঙ্ঘাতের মূলে রয়েছে ক্ষমতা দখল নিয়ে দড়ি টানাটানি। লগ্নিকারী সংস্থা স্বাভাবিক ভাবেই ক্লাবের বেশির ভাগ বিষয়ে নিজেদের হাতে রাশ রাখতে চাইবে। যে-হেতু তারাই মোটা টাকা লগ্নি করছে। ইস্টবেঙ্গলের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগান ক্লাবেই একই রূপান্তর ঘটেছে। কিন্তু লাল-হলুদে কর্তারা এত কাল ধরে উপভোগ করা ক্ষমতা লগ্নিকারীর হাতে ছাড়তে নারাজ। অভিযোগ উঠছে, এঁরাই বার বার ক্লাবের স্বার্থ বিঘ্ন হওয়ার দোহাই দিয়ে চুক্তি ভেস্তে দেওয়ার চেষ্টা করছে।

ইস্টবেঙ্গল কর্তারা শুরুতে গাঁটছড়া নিয়ে একটিও প্রশ্ন তোলেননি। পরে তাঁরা আশ্চর্যজনক ভাবে আপত্তি শুরু করেন। অভিযোগ করেন, বিনিয়োগকারী সংস্থা ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের উপরে আধিপত্য কায়েম করতে চাইছে। এর ফলে সদস্যদের স্বার্থ খর্ব হবে। তাই যত ক্ষণ না চূড়ান্ত চুক্তিপত্রে তাদের সুপারিশ করা বিষয়গুলো পরিবর্তন করা হবে, তত ক্ষণ স্বাক্ষর করা হবে না।

বিনিয়োগকারী সংস্থা শ্রী সিমেন্টের তরফে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর সামনে স্বাক্ষরিত হওয়া চুক্তিকেই মান্যতা দিতে হবে ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের। কেউ কেউ খোলাখুলি বলে দিলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই প্রায় ৫০ কোটি টাকা খরচ করেছি। আমরা ক্লাবে পেশাদারিত্ব আনতে চাই। বিশ্বের কোথাও সদস্যেরা তাঁদের ইচ্ছে মতো ক্লাব তাঁবুতে ঢুকতে পারেন না। এর জন্য নির্দিষ্ট সময় থাকে।’’ তাঁরা আরও বলেছেন, ‘‘ক্লাব তাঁবু ব্যবহার করা হবে খেলাধুলোর জন্য। সদস্যেরা মাঠে আসবেন খেলা দেখতে। তার পরে কেউ ইচ্ছে করলে কফি শপে যেতে পারেন। ক্লাব তাঁবুর ভিতরে তাঁদের
কী প্রয়োজন?’’

চুক্তি অনুযায়ী মালিকানার ৭৬ শতাংশ বিনিয়োগকারী সংস্থার। ২৪ শতাংশ ক্লাবের অধীনে। ক্লাব পরিচালনার জন্য গড়া হয়েছে এসসি ইস্টবেঙ্গল (শ্রী সিমেন্ট ইস্টবেঙ্গল ফাউন্ডেশন) নামে অলাভজনক সংস্থা। যার অধীনেই থাকবে যাবতীয় ক্রীড়া স্বত্ব। নতুন এই সংস্থার পরিচালন বোর্ডে বিনিয়োগকারী সংস্থার পক্ষ থেকে থাকবেন সর্বোচ্চ আট জন। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের তরফে থাকবেন দুই প্রতিনিধি। প্রাথমিক চুক্তি প্রায় সাত মাস আগে হলেও এখনও পর্যন্ত ইস্টবেঙ্গলের তরফে প্রতিনিধিদের নাম
পাঠানো হয়নি। ইস্টবেঙ্গলে আগে লগ্নিকারী হিসেবে এসেছিল কোয়েস। শোনা যায়, কর্তাদের সব ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার মানসিকতায় বিরক্ত হয়ে তারা পুরো মেয়াদ শেষ করার আগেই বিদায় নেয়। যদিও খো‌লাখুলি তারা এ ব্যাপারে কোনও মম্তব্য করেনি। এর পরে একেবারে শেষ মুহূর্তে হরিমোহন বাঙুরের শ্রী সিমেন্টসকে লগ্নিকারী হিসেবে জুড়ে দেওয়া হয় ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে যাতে তারা আইএসএলে খেলতে পারে। নেপথ্যে মুখ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আইএসএল কর্ত্রী নীতা অম্বানি। লগ্নিকারী পাল্টেছে, কর্তাদের পুরনো রোগ সারেনি।

অন্য বিষয়গুলি:

East Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE