Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

আপনাকে বিশ্বাস করি না, মেসি নাকি বলেন কোচকে

আর্জেন্টিনার এক সাংবাদিকের দাবি সত্যি হলে, বিশ্বকাপে কোচ হর্হে সাম্পাওলি এবং তারকা ফুটবলার লিয়োনেল মেসির সম্পর্ক খুবই তিক্ত হয়ে পড়েছিল। প্রশ্ন উঠছে, সেটাই নীল-সাদা দলের বিপর্যয়ের কারণ কি না।

উত্তপ্ত: বিশ্বকাপের সময় মেসিদের সঙ্গে কোচ সাম্পাওলির অন্তঃকলহের নতুন কাহিনি নিয়ে বাজারে এল বই। ফাইল চিত্র

উত্তপ্ত: বিশ্বকাপের সময় মেসিদের সঙ্গে কোচ সাম্পাওলির অন্তঃকলহের নতুন কাহিনি নিয়ে বাজারে এল বই। ফাইল চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৮ ০৩:৫৩
Share: Save:

বিশ্বকাপ শেষ হয়ে গেলেও শেষ হচ্ছে না আর্জেন্টিনা দল নিয়ে বিতর্ক। অবশেষে বেরিয়ে পড়েছে যে, লিয়োনেল মেসিদের দুঃস্বপ্নের রাশিয়া সফরের পিছনে ছিল দলের মধ্যে অন্তঃকলহই।

আর্জেন্টিনার এক সাংবাদিকের দাবি সত্যি হলে, বিশ্বকাপে কোচ হর্হে সাম্পাওলি এবং তারকা ফুটবলার লিয়োনেল মেসির সম্পর্ক খুবই তিক্ত হয়ে পড়েছিল। প্রশ্ন উঠছে, সেটাই নীল-সাদা দলের বিপর্যয়ের কারণ কি না।

আর্জেন্টিনার এক নামী সাংবাদিক ইতিমধ্যেই বিশ্বকাপ নিয়ে একটি বই প্রকাশ করেছেন। সেখানে রয়েছে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। বইয়ে রয়েছে, ক্রোয়েশিয়ার কাছে ০-৩ হারের পরেই অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল মেসিদের শিবির।

লুকা মদ্রিচদের কাছে বড় ব্যবধানে হারের পরে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়ার আতঙ্ক তাড়া করছিল আর্জেন্টিনাকে। সেই ম্যাচের পরেই নাকি মেসি এবং হাভিয়ের মাসচেরানো মিলে কোচ এবং তাঁর দুই সহকারীকে নিয়ে বৈঠক করার ডাক দেন। মেসিদের ডাকা বৈঠকে সাম্পাওলি খুব মন থেকে বসতে চেয়েছিলেন, বলা যাচ্ছে না। আর্জেন্টিনা ফুটবল সংস্থার প্রধান ক্লদিয়ো তাপিয়া ফুটবলারদের এই বিদ্রোহের কথা জানতেন। তাঁকে জানিয়েই মেসি এবং মাসচেরানো কোচকে নিয়ে বৈঠক করতে যান বলে বইয়ে দাবি করা হয়েছে। এবং, ক্লদিয়ো নাকি সাম্পাওলিকে বলেই দেন, ফুটবলারদের কথা শুনতে হবে। তার পরেই আর বৈঠকে আসা ছাড়া উপায় ছিল না কোচের।

আর্জেন্টিনা শিবিরের পরিস্থিতি তখন ভয়ানক বলে বইয়ে দাবি করা হয়েছে। সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে কোচ এবং ফুটবলারদের সম্পর্ক। মেসি এবং মাসচেরানো বৈঠকে কোচের সামনে তাঁদের বিরক্তি প্রকাশ করতে বাকি রাখেননি বলে বইয়ে লেখা হয়েছে।

মেসি নাকি এমনও বলে দেন কোচের মুখের উপরে যে, ‘‘আমরা যা বলছি, তার উল্টোটাই তো হচ্ছে। দলের মধ্যে কেউ খুশি নয়। আপনার বক্তব্য জানান।’’ বইয়ের বয়ান অনুযায়ী, সাম্পাওলি তখন মেসির কাছে জানতে চান, ‘‘কোন ব্যাপারে আমি বক্তব্য দেব?’’ মেসি এবং মাসচেরানোর তখন পাল্টা জবাব, ‘‘সব ব্যাপারেই দিতে হবে। কেন এমন হচ্ছে? দলে কেউ আপনাকে আর বিশ্বাস করছে না।’’

বইয়ে বর্ণনা করা ঘটনা সত্যি হলে সেই জরুরি বৈঠকে তুমুল বাগ্‌যুদ্ধই হয় কোচ সাম্পাওলির সঙ্গে মেসিদের। দলের প্রতিনিধি হিসেবেই এঁরা দু’জনে গিয়েছিলেন কোচের সঙ্গে দেখা করতে এবং সরাসরি বলতে দ্বিধা করেননি যে, কেউ আর তাঁকে পছন্দ করছে না।

সাম্পাওলিকে আরও একটি ব্যাপারে কড়া কথা শুনিয়েছিলেন মেসি বলে বইয়ে দাবি করা হয়েছে। দেখা গিয়েছিল, সাইডলাইনের ধারে আসা মেসির কাছে পরিবর্ত হিসেবে কাকে নামাবেন, তা জানতে চাইছেন সাম্পাওলি। এটা নিয়েও ক্ষুব্ধ ছিলেন মেসি। বইয়ে লেখা হয়েছে, এই প্রসঙ্গ টেনে মেসি কোচকে বলেন, ‘‘আমার কাছে দশ বার করে জানতে চাইছিলেন কেন যে, কোন খেলোয়াড়কে আমি চাই আর কাকে চাই না? কখনও কোনও খেলোয়াড়ের নাম বলিনি আপনাকে। তা হলে কেন এই প্রশ্ন?’’

উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের জেরে সাম্পাওলির এক সহকারী তৎক্ষণাৎ পদত্যাগ করতে চান। কিন্তু কোচ সাম্পাওলিই তাঁকে থামান। সতীর্থকে বলেন যে, আর্জেন্টিনা ফুটবল সংস্থার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। এখন এ সব করতে গেলে বিতর্ক আরও বেড়ে যাবে।

রাশিয়ায় ক্রোয়েশিয়ার কাছে হারের পরে ফুটবলারদের সঙ্গে সাম্পাওলির একটি জরুরি বৈঠকের খবর নিয়ে ফুটবল বিশ্বে তোলপাড় শুরু হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তখন ফুটবলাররা এবং আর্জেন্টিনা ফুটবল স‌ংস্থা জানিয়েছিল, পুরোটাই মিডিয়ার ফাঁদা গল্প। এর মধ্যে কোনও সত্যতা নেই। এখন আর্জেন্টিনার প্রতিষ্ঠিত সাংবাদিকের বই বাজারে চলে আসার পরে কী ভাবে বিতর্ককে ধামাচাপা দেওয়া সম্ভব হবে, সেটাই প্রশ্ন।

এ দিকে, জুভেন্তাসে সই করা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল মেসির সঙ্গে তাঁর দ্বৈরথ নিয়ে। রোনাল্ডো বলেন, ‘‘সকলেই এটা নিয়ে কথা বলে। কিন্তু আমি কোনও ফুটবলারকেই আমার প্রতিপক্ষ বলে মনে করি না। আমরা এক-এক জন এক-এক ক্লাবে খেলি আর নিজেদের ক্লাবের হয়ে জিততে চাই।’’

তার পরেই অবশ্য জানিয়ে দিতে ভোলেননি যে, স্প্যানিশ ফুটবলের প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছেড়ে বেরিয়ে এলেও মেসির সঙ্গে লড়াই চলবে। ‘‘কাহিনির শেষে গিয়ে দেখা যাবে কে সেরা,’’ যে ভাবে বলে দিয়েছেন তিনি, বোঝাই যাচ্ছে তেত্রিশ বছর বয়সেও নামতে নারাজ, মেসি সেরা!

অন্য বিষয়গুলি:

Football Lionel Messi Jorge Sampaoli
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE