ঈশান: যাঁর উপর নজর এখন।
পাশাপাশি দু’টো রাজ্য। একটায় প্রাপ্তির ভাঁড়ার শূন্য। অন্যটায় জোড়া বরাত।
বাংলা এবং ঝাড়খণ্ড।
পরপর দু’টো অনূর্ধ্ব উনিশ বিশ্বকাপ টিমে প্রতিনিধি থাকার পর আগামী বছর আসন্ন বিশ্বকাপে প্রতিনিধিশূন্য থেকে গেল বাংলা। মঙ্গলবার অনূর্ধ্ব উনিশ বিশ্বকাপ টিম নির্বাচন ছিল। কিন্তু সেখানে বাংলার কাউকে রাখা হয়নি। বিশ্বকাপ টিমে বাংলা থেকে দু’জন সম্ভাব্য দাবিদার ছিলেন। বাঁ হাতি স্পিনার প্রদীপ্ত প্রামাণিক এবং পেসার কনিষ্ক শেঠ। কিন্তু কেউই শেষ পর্যন্ত সুযোগ পাননি।
উল্টো দিকে, ঝাড়খণ্ডের এক কথায় জোড়া বরাত। দিন কয়েক আগে ভারতীয় বোর্ড পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে যে, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত ভারতের অধিনায়কত্ব করবেন ধোনি। আবার এ দিন নির্বাচকরা ঠিক করে ফেললেন আগামী বছরের গোড়ায় যে অনূর্ধ্ব উনিশ টিমটা বাংলাদেশে বিশ্বকাপ খেলতে যাবে, তার নেতৃত্ব দেবেন ঈশান কিষাণ। ধোনির মতো যিনিও ঝাড়খণ্ডের।
এবং ধোনির পাড়ার ছেলেও বলা চলে! ঈশান তো মেকন কলোনি এলাকার ভাড়া বাড়িতে কাটিয়েছেন বেশ কিছু দিন। যেখানে একটা সময় থাকতেন ধোনি।
শুধু এক পাড়াতে শেষ নয়, দু’জনে অল্প-স্বল্প সাদৃশ্য আরও কিছু কিছু আছে। যেমন দুই ভারত অধিনায়কই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। যেমন দুই ভারত অধিনায়কেরই বোলার-পেটানোর অভ্যেসটা যথেচ্ছ আছে! ধোনি কেমন, বলা অর্থহীন। কিন্তু ঈশান কেমন, তা রবীন্দ্র জাডেজা খুব ভাল রকম জানেন।
ঝাড়খণ্ড ক্রিকেটমহলে ফোন করে জানা গেল, ঈশানের টিম ড্রেসিংরুমে একটা আদরের নাম আছে। ছোটু। বেশি লম্বাচওড়া নন বলে। কিন্তু চলতি রঞ্জিতে নাকি ঈশান বাইশ গজে নামলে ঝাড়খণ্ড ড্রেসিংরুম থেকে একটা আওয়াজ নিয়মিত উঠত— ভিড়কে খেলো ছোটে! বাংলায় যা, লড়ে যা। বোলারের মাথায় চড়ে বস। ঝাঁপিয়ে পড় প্রতিপক্ষের উপর। গোটা দশেক প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলে ইতিমধ্যে একটা সেঞ্চুরি এবং পাঁচটা হাফসেঞ্চুরি হয়ে গিয়েছে জুনিয়র ভারত অধিনায়কের। কিন্তু সবচেয়ে আলোচ্য রাজকোটের ‘খোঁয়াড়’ পিচে রবীন্দ্র জাডেজার সৌরাষ্ট্রকে বেধড়ক মেরে ৮৭। যে মার দেখে শোনা যায় জাডেজাও নাকি অভিভূত হয়ে যান। ঈশান আউট হয়ে ফেরার সময় তাঁর পিঠ চাপড়েও দিয়ে যান। ‘‘অথচ ছেলেটার মেজাজ এমনিতে মোটেও অত আক্রমণাত্মক নয়। আর পাঁচটা ছেলের মতো থাকে। হইহুল্লোড় করতে পছন্দ করে,’’ ফোনে বলছিলেন নাজিম সিদ্দিকি। যিনি পটনা (জন্মসূত্রে ঈশান যেখানকার) থেকে ঝাড়খণ্ডে ক্রিকেট খেলতে চলে আসা ঈশানের এক রকম অভিভাবকই বলতে গেলে। যতটুকু যা জানা গেল, তাতে জুনিয়র ভারত অধিনায়ক আর পাঁচটা ছেলের মতোই। ভিডিওগেম খেলতে নাকি অসম্ভব ভালবাসেন। আইসক্রিম বড়ই প্রিয়। ফাঁক পেলেই ঘুম দিনের ‘টু ডু’ লিস্টে উপরের দিকে থাকে। এবি ডে’ভিলিয়ার্সের ব্যাটিংয়ের অসম্ভব ভক্ত। শুধু ক্রিকেটটাই আলাদা করে দিয়ে তাঁর বয়সি আর পাঁচ জনের সঙ্গে। ওপেন ট্রায়ালে শুরু করে জুনিয়র পর্যায়ে ক’বছর, তার পর ‘প্রোমোশন’ পেয়ে রঞ্জি ট্রফি। এবং শেষ পর্যন্ত রাহুল দ্রাবিড়ের অনূর্ধ্ব উনিশ বিশ্বকাপগামী টিমের অধিনায়ক। অবশ্যই মহেন্দ্র সিংহ ধোনির সঙ্গে যাঁর দেখা হয়েছে। গত বছর রঞ্জি প্র্যাকটিসের সময়। এবং টিপসও নিয়েছেন।
প্রদীপ্ত বা কনিষ্ককের কেউ না থাকায় বাংলা কতটা বিষণ্ণ, ধোঁয়াশা আছে। সিএবি-র কেউ কেউ বললেন, সাম্প্রতিকে যে যে সব টুর্নামেন্ট খেলেছেন প্রদীপ্ত বা কনিষ্ক, কারওরই পারফরম্যান্স দুর্ধর্ষ নয়। বলার জায়গা তাই নেই খুব একটা। উল্টো দিকে, বাংলার প্রতিবেশী রাজ্য কিন্তু বলছে। সিনিয়রের পর জুনিয়র ভারতের বিশ্বজয়ের দায়িত্বও ঘরের ছেলের হাতে যেতে দেখে।
ভি়ড়কে খেলো ছোটে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy