Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Asian Games

সোনাহীন সোমবার ভারতের, নবম দিনে ঝুলিতে মাত্র সাত পদক, কার কী ফলাফল গোটা দিনে?

এশিয়ান গেমস শুরু হওয়ার পর থেকে টানা সাত দিন কোনও না কোনও ইভেন্টে সোনা জিতেছে ভারত। সোমবার প্রথম সারা দিনে কোনও সোনা জিতল না ভারত। কেমন গেল নবম দিন?

asian games

রুপো পেয়ে উসেইন বোল্টকে অনুকরণ অ্যান্সির। ছবি: পিটিআই।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০২৩ ২২:৫৪
Share: Save:

এশিয়ান গেমস শুরু হওয়ার পর থেকে টানা সাত দিন কোনও না কোনও ইভেন্টে সোনা জিতেছে ভারত। সোমবার প্রথম সারা দিনে কোনও সোনা জিতল না ভারত। রবিবার এশিয়ান গেমসের ইতিহাসে সর্বাধিক পদক পাওয়ার পর সোমবার মাত্র সাতটি পদক এসেছে। তার মধ্যে তিনটি রুপো এবং চারটি ব্রোঞ্জ। অ্যাথলেটিক্স থেকে দু’টি ইভেন্টে অল্পের জন্য সোনা আসেনি। পাশাপাশি স্কেটিংয়ের মতো রোলার স্পোর্টসে পদক পেয়ে চমকে দিয়েছে ভারত। নবম দিনের শেষে ভারতের ঝুলিতে মোট ৬০টি পদক। চিন, কোরিয়া, জাপানের পর চতুর্থ স্থানে তারা। তবে এখনও তীরন্দাজি, কুস্তি, ব্যাডমিন্টন সিঙ্গলসের মতো ইভেন্ট বাকি। রয়েছে অ্যাথলেটিক্সের কিছু ইভেন্টও।

অ্যাথলেটিক্স

সোমবার অ্যাথলেটিক্সে সব পদকই এসেছে পরের দিকে। মেয়েদের ৩০০০ মিটার স্টিপলচেজ়‌ে রুপো এবং ব্রোঞ্জ পেলেন ভারতের পারুল চৌধরি এবং প্রীতি। অন্য দিকে লং জাম্পে অ্যান্সি সোজান রুপো পেলেন। ৪x৪০০ মিটার মিক্সড রিলে দল প্রথমে ব্রোঞ্জ পেলেও পরে তা রুপোয় উন্নীত হয়। বাতিল হয়ে যায় রুপো পাওয়া শ্রীলঙ্কা। ৩০০০ মিটারে পারুল ৯ মিনিট ২৭.৬৩ সেকেন্ড সময় করেছেন। যা সোনাজয়ী এবং বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন বাহরিনের ইয়াভি উইনফ্রেডের থেকে প্রায় ৯ সেকেন্ড পিছনে। প্রীতি শেষ করেছেন পারুলেরও ১৬ সেকেন্ড পিছনে।

মেয়েদের লং জাম্পে নিজের সেরা স্কোর ছাপিয়ে ৬.৬৩ মিটার লাফিয়েছেন অ্যান্সি। এই বিভাগে ভারতের পদকের সম্ভাবনা ছিলেন শৈলি সিংহ। তিনি পঞ্চম স্থানে শেষ করেন। তাঁর দূরত্ব ৬.৪৮ মিটার। মিক্সড রিলে-তে মহম্মদ আজমল, বিথ্যা রামরাজ, রাজেশ রমেশ এবং শুভা বেঙ্কটেশনের দল ৩ মিনিট ১৪.৩৪ সেকেন্ড সময় করে তৃতীয় স্থান পায়। কিন্তু শ্রীলঙ্কার এক দৌড়বিদ লেন ভাঙায় তাদের বাতিল করা হয়। ভারত রুপো পায়।

স্কেটিং

দিনের প্রথম পদক জেতে পুরুষদের দল। স্পিড স্কেটিংয়ের ফাইনালে তৃতীয় স্থানে শেষ করেন আরিয়ানপাল সিংহ ঘুমান, আনন্দকুমার ভেলকুমার, সিদ্ধান্ত কাম্বলে ও বিক্রম ইনগালে। ৩০০০ মিটার শেষ করতে তাঁরা সময় নেন ৪ মিনিট ১০.১২৮ সেকেন্ড। এই প্রতিযোগিতায় সোনা জেতে চাইনিজ তাইপেই। তারা সময় নেয় ৪ মিনিট ০৫.৬৯২ সেকেন্ড। ৪ মিনিট ০৫.৭০২ সেকেন্ডে শেষ করে রুপো জিতেছে দক্ষিণ কোরিয়া। পুরুষদের মতো মহিলাদের দলও খালি হাতে ফেরেনি। ব্রোঞ্জ জেতেন সঞ্জনা বাথুলা, কার্থিকা জগদীশ্বরণ, হিরাল সাধু ও আরাথি কস্তুরি রাজ। ৩০০০ মিটার শেষ করতে তাঁরা সময় নেন ৪ মিনিট ৩৪.৮৬১ সেকেন্ড। এই প্রতিযোগিতায় সোনা জেতে চাইনিজ তাইপেই। তারা সময় নেয় ৪ মিনিট ১৯.৪৪৭ সেকেন্ড। ৪ মিনিট ২১.১৪৬ সেকেন্ডে শেষ করে রুপো জিতেছে দক্ষিণ কোরিয়া।

টেবিল টেনিস

অনেক লড়েও এশিয়ান গেমসের ফাইনালে উঠতে পারলেন না ভারতের সুতীর্থা মু‌খোপাধ্যায় ও ঐহিকা মুখোপাধ্যায়। ব্যাডমিন্টনে মহিলাদের ডাবলসের সেমিফাইনালে উত্তর কোরিয়ার জুটির কাছে হারলেন তাঁরা। টান টান সেমিফাইনালে সাত গেমে হল ম্যাচের ফয়সালা। ৩-৩ অবস্থায় শেষ গেমে হারলেন সুতীর্থারা। সোনা-রুপো হাতছাড়া হলেও ব্রোঞ্জ পেলেন দুই বাঙালি মেয়ে। মহিলাদের প্রথম ডাবলস জুটি হিসাবে এশিয়ান গেমসে পদক পেলেন তাঁরা। উত্তর কোরিয়ার জুটির বিরুদ্ধে শুরুটা খুব ভাল করেছিলেন সুতীর্থারা। প্রথম গেম ১১-৭ পয়েন্টে জিতে যান তাঁরা। যে ভাবে খেলছিলেন তাতে দেখে মনে হচ্ছিল দাপট দেখিয়ে জিতবেন তাঁরা। কিন্তু দ্বিতীয় গেমেই ম্যাচে ফিরলেন উত্তর কোরিয়ার চা সুয়োং ও পাক সুয়োং। ১১-৮ পয়েন্টে দ্বিতীয় গেম জিতে সমতা ফেরালেন তাঁরা।

পেন্ডুলামের মতো খেলা চলছিল। এক গেমে ভারতীয় জুটি দাপট দেখাচ্ছিল তো পরের গেমেই ভাল খেলছিল উত্তর কোরিয়া। তৃতীয় গেমে সেটাই দেখা গেল। প্রথম থেকে লিড নিয়ে ১১-৮ তৃতীয় গেম জিতে এগিয়ে যান সুতীর্থারা। পরের গেম আবার ছিনিয়ে নিল উত্তর কোরিয়ার জুটি। সুতীর্থারা হারলেন ৭-১১ পয়েন্টে। খেলা দাঁড়াল ২-২ গেমে।

পাঁচ নম্বর গেমে অবশ্য নিজেদের দাপট ধরে রাখে উত্তর কোরিয়া। ১১-৯ পয়েন্টে সেই গেম জিতে ফাইনালের কাছে পৌঁছে যায় তারা। পরের দুই গেমের মধ্যে একটি জিতলেই ফাইনালে উঠত তারা। সেখান থেকে আবার ম্যাচে ফিরলেন সুতীর্থারা। ষষ্ঠ গেমে প্রতিপক্ষকে ১১-৫ পয়েন্টে উড়িয়ে দিয়ে খেলা শেষ গেমে নিয়ে গেলেন তাঁরা।

ষষ্ঠ গেমের খেলা দেখে মনে হচ্ছিল, ছন্দ পেয়ে গিয়েছেন সুতীর্থারা। কিন্তু আদতে তা দেখা গেল না। শেষ সেটে দাপট দেখাল উত্তর কোরিয়া। দাঁড়াতেই পারল না ভারতীয় জুটি। ১১-২ পয়েন্টে ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে উঠল উত্তর কোরিয়া। ব্রোঞ্জ নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হল দুই বঙ্গতনয়াকে।

হকি

শনিবার পাকিস্তানকে ১০ গোল দিয়েছিল ভারত। তার ৪৮ ঘণ্টা পরে বাংলাদেশকে এক ডজন গোল দিলেন হরমনপ্রীত সিংহেরা। পাকিস্তানের পরে বাংলাদেশের বিরুদ্ধেও হ্যাটট্রিক করলেন অধিনায়ক হরমনপ্রীত। হ্যাটট্রিক করলেন মনদীপ সিংহও। এশিয়ান গেমসের গ্রুপ পর্বের খেলায় নিজেদের পাঁচটি ম্যাচই জিতল ভারত। গ্রুপের শীর্ষে থেকে সেমিফাইনালে উঠল ভারত। গ্রুপ পর্বের খেলায় ভারতীয় খেলোয়াড়েরা মোট ৫৮টি গোল করেছেন। হকিতে সোনা জয়ের লক্ষ্যে এগোচ্ছে ভারতীয় দল।

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই দাপট ভারতের। ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই পেনাল্টি কর্নার পায় ভারত। জোরালো শটে গোল করেন হরমনপ্রীত। দু’মিনিট পরে আবার পেনাল্টি কর্নার থেকে গোল করেন ভারত অধিনায়ক। হরমনপ্রীতের শটের জোর এতটা ছিল যে গোলরক্ষক ও এক জন ডিফেন্ডার গোল থাকলেও বল বাঁচাতে পারেননি তাঁরা। গোলরক্ষক নড়ার আগেই বল জালে জড়িয়ে যায়। প্রথম কোয়ার্টারের বাকি সময়ে অনেক চেষ্টা করে গোল বাঁচিয়ে রাখে বাংলাদেশ। ফলে ২-০ গোলে প্রথম কোয়ার্টার শেষ করে ভারত।

দ্বিতীয় কোয়ার্টারে আরও আক্রমণাত্মক খেলে ভারত। ১৮ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি কর্নার পায় ভারত। এ বার হরমনপ্রীত সরাসরি গোল করতে না পারলেও ফিরতে বলে গোল করে ব্যবধান বাড়ান মনদীপ। কয়েক মিনিট পরে আরও একটি পেনাল্টি কর্নার পায় ভারত। এ বার শট মারতে গিয়ে ভুল করেন সমশের সিংহ। তাতে অবশ্য বেশি ক্ষণ স্বস্তি পায়নি বাংলাদেশ। ২৩ মিনিটে ফিল্ড প্লে থেকে গোল করেন ললিত উপাধ্যায়। পরের মিনিটে ভারতের পঞ্চম গোল করেন মনদীপ। ২৮ মিনিটের মাথায় আরও একটি গোল করেন অমিত রুইদাস। ৬-০ গোলে এগিয়ে বিরতিতে যায় ভারত।

দেখে বোঝা যাচ্ছিল, ম্যাচের শেষ হতে হতে দু’অঙ্কে পৌঁছে যাবে ভারতের গোল সংখ্যা। তবে তৃতীয় কোয়ার্টারে খেলার গতি কিছুটা কমায় ভারত। হতে পারে সেমিফাইনালের কথা মাথায় রেখে অতিরিক্ত শক্তি ব্যয় করতে চাইছিল না তারা। তার পরেও গোল করতে সমস্যা হয়নি ভারতের। পেনাল্টি কর্নার থেকে নিজের হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন হরমনপ্রীত। গোটা ম্যাচ জুড়ে হাতে গুণে ভারতের বক্সে বল নিয়ে যেতে পেরেছে বাংলাদেশ। সেখান থেকেও কোনও ভাল সুযোগ তৈরি করতে পারেনি তারা। ভারতের গোলরক্ষকদের একটি বলও বাঁচাতে হয়নি।

৪১ মিনিটে একক দক্ষতায় গোল করেন অভিষেক। বল নিয়ে বাঁ প্রান্ত ধরে উঠে জোরালো শটে গোল করেন তিনি। সেমিফাইনালের আগে দলের বাকি খেলোয়াড়দেরও দেখে নিতে চাইছিল ভারত। তাই দলে অনেক বদল হচ্ছিল। পেনাল্টি কর্নার থেকেও সরাসরি শট না মেরে বৈচিত্র দেখাচ্ছিল ভারত। ফলে কয়েকটি গোলের সুযোগ নষ্ট হয়। ৮-০ গোলে শেষ হয় তৃতীয় কোয়ার্টার।

চতুর্থ কোয়ার্টারের শুরুতে আবার চাপ বাড়ায় ভারত। প্রথম তিন মিনিটেই গোল করেন নীলকান্ত শর্মা ও মনদীপ। এ বারের এশিয়ান গেমসে ভারতের দুই খেলোয়াড় হরমনপ্রীত ও মনদীপের গোল সংখ্যা দু’অঙ্কে পৌঁছে গেল। ১০-০ এগিয়ে যায় ভারত। তখনও ১২ মিনিট খেলা বাকি ছিল। ফলে আরও গোলের সম্ভাবনা ছিল। লজ্জা যাতে আর না বাড়ে তার জন্য শেষ দিকে মরিয়া রক্ষণ করে বাংলাদেশ। তাতে লজ্জা বাঁচাতে পারেনি তারা। আরও দু’টি গোল করেন অভিষেক ও গুরজন্ত সিংহ। ১২ গোলের মালা পরে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।

তীরন্দাজি

ছেলেদের দলগত বিভাগের ছ’টি ইভেন্টেই কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছেন পুরুষেরা। এ ছাড়া কম্পাউন্ড বিভাগে পাঁচটি সোনা জেতার সুযোগ থাকছে তাদের সামনে। কিন্তু মহিলা দল ব্যক্তিগত রিকার্ভ থেকে বিদায় নিয়েছেন।

বাস্কেটবল

মেয়েদের ৩x৩ বিভাগে উত্তর কোরিয়ার কাছে কোয়ার্টারে হারল ভারত।

কবাডি

চাইনিজ তাইপেইয়ের বিরুদ্ধে ৩৪-৩৪ ড্র করল ভারত।

স্কোয়াশ

মেয়েদের সিঙ্গলস থেকে ছিটকে গেলেন জ্যোৎস্না চিনাপ্পা। কিন্তু ছেলেদের বিভাগে কোয়ার্টারে উঠেছেন সৌরভ ঘোষাল।

ব্যাডমিন্টন

পুরুষদের সিঙ্গলসে কিদম্বি শ্রীকান্ত এবং ডাবলস জুটি সাত্ত্বিকসাইরাজ রানকিরেড্ডি ও চিরাগ শেট্টির জুটি কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Asian Games Athletics
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy