(বাঁদিকে) যুজবেন্দ্র চহাল এবং কুলদীপ যাদব। — ফাইল চিত্র।
গত কয়েক বছর ভারতের সেরা লেগ স্পিনার হিসাবে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের একাংশ বেছে নেন যুজবেন্দ্র চহালকে। অথচ তাঁকে বেশ কিছু দিন জাতীয় দলে রাখছিলেন না নির্বাচকেরা। ঘরোয়া ক্রিকেট এবং আইপিএলে সাফল্য পেয়েও সুযোগ হচ্ছিল না। শেষ পর্যন্ত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে রাখতে বাধ্য হলেন নির্বাচকেরা। সুযোগ পেয়েছেন আরও এক ‘ব্রাত্য’ সঞ্জু স্যামসন।
মহেন্দ্র সিংহ ধোনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে উপহার দিয়েছিলেন ‘কুলচা’ জুটি। ফর্মে থাকলে বাঁ হাতি স্পিনার কুলদীপ যাদব এবং চহালের জুটিই প্রতিপক্ষের ইনিংস শেষ করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। দেশকে জোড়া বিশ্বকাপ দেওয়া প্রাক্তন অধিনায়ক তরুণ দুই স্পিনারের উপর আস্থা রেখে সাফল্যও পেয়েছিলেন যথেষ্ট। ক্রমে ভারতীয় ক্রিকেট থেকে হারিয়ে গিয়েছিল সেই জুটি। ফর্ম হারিয়ে কুলদীপ ভারতীয় দলের বাইরে চলে গিয়েছিলেন। চহালের বিপক্ষে যাচ্ছিল তাঁর দুর্বল ব্যাটিং। গত টি-টোয়েন্টি এবং এক দিনের বিশ্বকাপের দলে জায়গা হয়নি চহালের। আধুনিক ক্রিকেটে বোলারদের থেকেও কিছু রান আশা করা হয়। হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচে শেষের ২০-২৫ রানই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যায়। চহাল সেই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছিলেন না। মূলক সে কারণেই তাঁর জায়গা হচ্ছিল না ভারতীয় দলে।
ধোনির ‘কুলচা’ জুটি ভেঙে যাওয়ার পর সাদা বলের ক্রিকেটে বেশ কিছু তরুণ স্পিনারকে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কেউই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারেননি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। রানের খোঁজ করতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল বোলিং আক্রমণ। এই সময়ের মধ্যেই আরও তীক্ষ্ণ হয়ে ফিরেছেন কুলদীপ। উন্নতি করেছেন ব্যাটিংয়েও। ফিরেছেন ভারতীয় দলেও। তিনি ফিরলেও দরজা বন্ধই ছিল চহালের জন্য। এ বারের আইপএলের পারফরম্যান্স দেখে চহালের জন্য দরজা খুলতে হল অজিত আগরকরদের। সায় দিয়ে বাধ্য হয়েছেন কোচ রাহুল দ্রাবিড় এবং অধিনায়ক রোহিত শর্মাও। এখনও পর্যন্ত ন’টি ম্যাচ খেলে আইপিএলে চহাল পেয়েছেন ১৩টি উইকেট। প্রতি ম্যাচেই প্রতিপক্ষের গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নিচ্ছেন। রয়েছেন বেগনি টুপির লড়াইয়েও। আইপিএলের পাটা উইকেটে চহালের স্পিন পড়তে সমস্যা পড়ছেন দেশি-বিদেশি ব্যাটারেরা। সমস্যায় পড়েছেন নির্বাচকেরাও। রবি বিষ্ণোই-সহ একাধিক নাম নিয়ে আলোচনা করেও চহালকে উপেক্ষা করতে পারেননি তাঁরা।
২০১৯ সালের এক দিনের বিশ্বকাপের পর কুলদীপ এবং চহাল এক সঙ্গে দেশের হয়ে খেলেননি। আগামী বিশ্বকাপে খেললে প্রায় পাঁচ বছর পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরবে ‘কুলচা’ জুটি। ফিরবে ধোনির প্রমাণিত ফর্মুলা। ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) প্রতিযোগিতায় বার বার ব্যর্থ হয়েছে ভারত। দেশকে অধিনায়ক হিসাবে একটিও ট্রফি দিতে পারেননি বিরাট কোহলি। পারেননি রোহিতও। সম্ভবত ধোনি জমানার সাফল্যের খোঁজেই আবার ভারতীয় দলে ফিরিয়ে আনা হল ‘কুলচা’ জুটিকে।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে সুযোগ পেয়েছেন সঞ্জুও। কেরলের উইকেটরক্ষক-ব্যাটারের প্রতিভা নিয়ে কখনও সন্দেহ ছিল না। ঘরোয়া ক্রিকেটে বা আইপিএলে যথেষ্ট সফল রাজস্থান রয়্যালসের অধিনায়ক। তবু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ধারাবাহিক ভাবে সুযোগ পান না। ঋদ্ধিমান সাহা, ঋষভ পন্থ, শ্রীকর ভরত, ধ্রুব জুরেলদের ছায়ায় ঢাকা পড়ে যান বার বার। চহালের মতো তাঁকেও আইপিএলের পারফরম্যান্সের পর উপেক্ষা করতে পারেননি নির্বাচকেরা। দ্বিতীয় উইকেটরক্ষক হিসাবে বেছে নিতেই হয়েছে ন’ম্যাচে ৩৮৫ রান করা উইকেটের পিছনে সাবলীল সঞ্জুকে।
চহাল বা সঞ্জুর প্রথম একাদশে সুযোগ পাওয়া হয়তো নির্ভর করবে অনেক যদি-কিন্তুর উপর। যোগ্যতা প্রমাণ করেই বিশ্বকাপের দলে জায়গা করে নিয়েছেন গত কয়েক বছরে ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম দুই ব্রাত্য ক্রিকেটার। বাকিটা দেখা যাবে আমেরিকা-ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy