সচিন তেন্ডুলকর। ফাইল ছবি।
সচিন তেন্ডুলকরকে নিয়ে তথ্যচিত্র তৈরি করেছেন রবি ভাগচন্দকা। কিন্তু, সে জন্য বিস্তর কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে তাঁকে। কেমন ছিল সেই তথ্যচিত্র নির্মাণের অভিজ্ঞতা? নিজেই জানিয়েছেন ভাগচন্দকা।
তথ্যচিত্র নির্মাণে সবথেকে বড় বাধা ছিলেন সচিন নিজেই। কারণ, কিছুতেই অনুমতি দিচ্ছিলেন না তিনি। ‘আ বিলিয়ন ড্রিম’ তথ্যচিত্রের সহ-প্রযোজক ভাগচন্দকা বলেছেন, ‘‘সচিনকে বোঝাতেই আমার এক বছরেরও বেশি সময় লেগেছিল। ওঁর জীবনের কথা, পথ চলার কথা, বিভিন্ন মাইক ফলক স্পর্শের কথা কী ভাবে তুলে ধরা হবে সেটা ওকে বোঝানো ছিল খুবই কঠিন।’’
সচিন রাজি হওয়ার পরেও যে খুব সহজে বাকি কাজ হয়েছে তেমন নয়। বরং আরও কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয় তাঁকে। ভাগচন্দকার কথায়, সচিনকে নিয়ে তথ্যচিত্র তৈরির কাজটা মোটেই সহজ ছিল না। বরং প্রতি পদক্ষেপে সচেতন থাকতে হয়েছে তাঁদের। তাঁরা জানতেন সচিনের জীবন নিয়ে তৈরি তথ্যচিত্রে পান থেকে চুন খসলেই তীব্র সমালোচনার মুখোমুখি হতে হবে।
ভাগচন্দকা বলেছেন, ‘‘তথ্যচিত্র যাতে আন্তর্জাতিক মানের হয়, সেটা নিশ্চিত করতে চেয়েছিলাম আমরা। প্রযুক্তিগত সুক্ষতা, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি এবং সেরা ছবি দরকার ছিল। আমাদের পরিচালক জেমস আর্কিন ছিলেন অত্যন্ত দক্ষ। অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গেই তিনি গোটা বিষয়টা সামলে ছিলেন। যখন এই তথ্যচিত্র তৈরির কথা সকলে জানতে পারে, তখন আমরা ভারতের তথ্যচিত্রের সংস্কৃতি সম্পর্কে তেমন গবেষণা করিনি। অনেকেই ভেবেছিলেন, সচিনের ভূমিকায় দেখা যাবে আমির খানকে।’’
সচিনকে নিয়ে তথ্যচিত্র তৈরির জন্য তাঁরা কঠোর পরিশ্রম করেছিলেন। চেয়েছিলেন একদম আসল ভাবে সবকিছু তুলে ধরতে। তিনি বলেছেন, ‘‘বিভিন্ন শহর এবং দেশে আমরা শুটিং করেছি। ৮০ থেকে ১০০ জনের সাক্ষাৎকার নিয়েছি আমরা। প্রায় ১০ হাজার ঘণ্টার ছবি নিয়ে কাজ করেছি। এ সব কারণে আমাদের প্রায় পাঁচ বছর সময় লেগেছে তথ্যচিত্র তৈরি করতে।’’
তথ্যচিত্রটি মুক্তি পাওয়ার আগে সচিনের ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে খুব বেশি মানুষ জানতেন না। সচিন তাঁর খেলা নিয়ে কথা বলতেই বেশি পছন্দ করেন। পরিবার, বাড়ি এ সব নিয়ে খুব একটা কথা বলেন না। তা নিয়ে ভাগচন্দকা বলেছেন, ‘‘সচিন যখনই ব্যাট করতে যেতেন, সব সময়ই ওঁর উপর প্রচণ্ড চাপ থাকত। বড় রান করার চাপ নিয়েই সব সময় খেলতে হত ওঁকে। চোট-আঘাত, ক্রিকেট নিয়ে ওঁর ভাবনা, ব্যক্তিগত জীবন— সবমিলিয়ে একজন ক্রিকেটারের আড়ালে থাকা মানুষটাকেই আমরা ধরতে চেয়েছিলাম। বেশ কিছু বিষয় আমাদের উৎসাহ বাড়িয়েছিল কাজ করার। উনি নিজের অনেক ব্যক্তিগত ভিডিয়ো আমাদের দিয়েছিলেন। যেগুলো আমরা তথ্যচিত্রে ব্যবহারও করেছি।’’
তথ্যচিত্র নির্মাণের সঙ্গে সচিন নিজে কতটা যুক্ত ছিলেন? ‘আ বিলিয়ন ড্রিম’-এর সহ-প্রযোজক বলেছেন, ‘‘নির্মাণ পর্বের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সচিন আমাদের সঙ্গেই ছিলেন। হিন্দি, ইংরাজি এবং মারাঠিতে নিজেই ডাবিং করেছিলেন। উনি চাইতেন সবকিছু যেন তথ্যগত ভাবে সঠিক থাকে। চাইতেন না অতিরঞ্জিত কিছু তৈরি হোক।’’
তিনি আরও বলেছেন, ‘‘লক্ষ লক্ষ মানুষের মতো আমিও সচিনের বিরাট ভক্ত। সকালে ওঁর অনুশীলন দেখার জন্য বা বিকালে সাক্ষাতের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে থাকতাম। মানুষের সঙ্গে উনি যে ধৈর্য এবং মানবিকতা নিয়ে মেশেন, সেটা অসাধারণ।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy