পরামর্শ: কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের সঙ্গে আলোচনায় অধিনায়ক বিরাট কোহলি। আজ সেঞ্চুরিয়নে নতুন পরীক্ষা এই জুটির। ছবি বিসিসিআই।
ভারতীয় দলের হেড কোচ হিসেবে প্রথম বিদেশ সফর তাঁর। যে দেশে কখনও টেস্ট সিরিজ জেতেনি ভারত, সেই দক্ষিণ আফ্রিকায় পরীক্ষা তাঁর। রবিবার থেকে সেঞ্চুরিয়নে শুরু হচ্ছে প্রথম টেস্ট। তার আগে বিসিসিআই টিভি এবং সাংবাদিক বৈঠকে নিজেদের শক্তি, দলগঠন ও কোহলির নেতৃত্ব নিয়ে আলাপচারিতায় যা যা বললেন রাহুল দ্রাবিড়।
বিরাট বিবর্তন: বিরাটের টেস্ট অভিষেকের ম্যাচে আমি ওর সঙ্গে ব্যাট করেছিলাম। শেষ দশ বছরে যে ভাবে ও এগিয়ে গিয়েছে, এক কথায় অসাধারণ! অধিনায়ক হিসেবে যে ভাবে দলটাকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে, অভাবনীয়! নেতা হিসেবে দলে ফিটনেস সংস্কৃতি এনেছে, এনার্জি স্তরকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছে। টেস্ট ক্রিকেটটা ভালবেসে খেলে। তাই প্রত্যেক মুহূর্তে নিজেকে উন্নত করার উপায় খোঁজে। আশা করব, খুব ভাল সিরিজ় যাবে ওর। বিরাট ছন্দে ফিরলে দলও উপকৃত হবে। দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ়েই হয়তো ফের ওর ব্যাটে বড় রান দেখা যাবে। আমি ওর সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করার দিকে তাকিয়ে রয়েছি। প্রত্যেক দিন যেন ও উন্নতি করছে, নিজেকে আরও ভাল করার জন্য খাটছে।
সিরিজ় জেতার লক্ষ্য: দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ভাল কিছু করে দেখানোর সুযোগ পাচ্ছে প্রত্যেকে। একজন ব্যাটার তখনই বড় হয়ে ওঠে, যখন সে দেশের বাইরে রান করে। সিরিজ় জেতার লক্ষ্য নিয়েই নামবে দল। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়তে না পারলে জেতা সম্ভব নয়। শুধুমাত্র বিরাট, পুজারা, রাহানের উপরে ভরসা করে থাকলে চলবে না। দল হিসেবে খেললেই এই সিরিজ় জেতা সম্ভব। তবে ভুলের সংখ্যা কমাতে হবে। বেশি ভুল করে ফেললে এই দেশ থেকে সিরিজ় জিতে ফেরা সম্ভব হবে না।
দলগঠন: কখনওই চাইব না ম্যাচের আগেই বিপক্ষ আমাদের একাদশ সম্পর্কে জেনে যাক। তবে হ্যাঁ, এমন একটি একাদশ গঠন করা হবে, যা দলকে ভাল খেলতে সাহায্য করবে। আমাদের দলে প্রত্যেকেই সমান। প্রয়োজনে কোনও এক জনকে বাদ দিতে আমরা ভয় পাই না। তবে হ্যাঁ, যে বাদ পড়বে তাকে বোঝানো হবে তার জায়গায় অন্য কেউ কেন সুযোগ পেল। হয়তো সে হতাশ হয়ে পড়বে। হতাশ হলে উন্নতি করার প্রয়োজনটাও কিন্তু বুঝতে পারবে।
মানসিক প্রস্তুতি: আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কোচ হিসেবে সব চেয়ে জরুরি কাজ হচ্ছে ক্রিকেটারদের মানসিক ভাবে চাঙ্গা করে তোলা। অতিরিক্ত চাপ দিলে কিন্তু ড্রেসিংরুমে শান্তির পরিবেশ থাকে না। প্রত্যেকের সঙ্গেই টেকনিক নিয়ে কথা হয়, তবে বেশির ভাগ আলোচনাই হয় মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে। ইতিবাচক মানসিকতা একজন ক্রিকেটারকে অনেকটা এগিয়ে দিতে পারে। এই পরিবেশ ব্যাটসম্যানদের পরীক্ষায় ফেলবেই। শুরুতে সুইং ও সিম ‘মুভমেন্ট’ দেখা যাবে। শেষ দু’দিন অসমান বাউন্সও থাকতে পারে। এই পরিবেশে মানিয়ে নেওয়ার জন্য মানসিক ভাবে শক্তিশালী হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রত্যেক ব্যাটসম্যানকে বুঝতে হবে প্রথম দিকটা সতর্ক থেকে খেলতে পারলে পরের দিকে সহজেই রান করা যাবে।
রাহানের ছন্দ: শেষ কয়েক দিন ধরে খুব ভাল ব্যাট করেছে। প্রস্তুতিতে কোনও ফাঁক রাখেনি। ওর সঙ্গে খুব ভাল আলোচনা হয়েছে আসন্ন সিরিজ়ের বিষয়ে। দেখে মনে হয়েছে ভাল ছন্দেই রয়েছে।
বোলিং শক্তি: দক্ষিণ আফ্রিকায় আমি বেশ কয়েকটা সফর করেছি। ক্রিকেটার হিসেবে এসে দেখেছি ওদের বোলিং বিভাগ রীতিমতো পরীক্ষায় ফেলত। তবে অন্য বারের চেয়ে এ বার ভারতীয় বোলিং বিভাগ অনেক বেশি অভিজ্ঞ ও শক্তিশালী। প্রত্যেক ম্যাচে বিপক্ষের ২০টি উইকেট তোলার মতো ক্ষমতা আমাদের বোলারদের রয়েছে।
প্রস্তুতি ম্যাচের অভাব: বর্তমান পরিস্থিতি অনেকটাই আলাদা। যা চাইছি সব সময় তা পাওয়া সম্ভব নয়। করোনা পরিস্থিতিতে জৈব সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে এর চেয়ে বেশি কিছু চাওয়া যায় না। যদিও প্রস্তুতি নিয়ে আমি সন্তুষ্ট। মাঝের পিচে ব্যাট করার সুযোগ পেয়েছে প্রত্যেকে। বোলাররাও নিজেদের শক্তি ও দুর্বলতা বুঝে সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিয়েছে। ভারতীয় দলে অনেকেই আছে যারা আগেও বেশ কয়েক বার দক্ষিণ আফ্রিকায় খেলেছে। আশা করি, তারা সহজেই পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পেরেছে। সব মিলিয়ে একটা জমজমাট টেস্ট সিরিজ়ের অপেক্ষায় রয়েছি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy