—ফাইল চিত্র
মাত্র তিনটি মাস। এর মধ্যেই ভারতীয় ক্রিকেটের ছবিটা আমূল বদলে গেল। পুরোটাই বিরাট কোহলীর হাত ধরে। পুরোটাই আপাত ভাবে নেতিবাচক অর্থে। গত তিন মাসের মধ্যে ধাপে ধাপে এক এক করে ভারতীয় ক্রিকেটে বিরাট রাজত্বের অবসান ঘটল।
গত অক্টোবরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ঠিক আগে কোহলী জানিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি আর ক্রিকেটের ক্ষুদ্রতম ঘরানায় অধিনায়কত্ব করবেন না। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেই তাঁকে এই ঘরানায় শেষ বার অধিনায়কত্ব করতে দেখা গিয়েছিল।
তখনই প্রশ্ন উঠেছিল, এ বার এক দিনের ক্রিকেটের অধিনায়কত্বও ছেড়ে দেবেন কোহলী। কারণ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তিনি যেমন বড় ট্রফি দেশকে দিতে পারেননি, তেমনই এক দিনের ক্রিকেটেও আইসিসি-র কোনও ট্রফি তিনি জিততে পারেননি। সেটিই হয়েছিল। পঞ্চাশ ওভারের ক্রিকেট থেকেও কোহলীর অধিনায়কত্ব গিয়েছিল।
হ্যাঁ, সেটি গিয়েছিলই। সেই যাওয়ায় কোনও আড়ম্বরপূর্ণ ঘোষণা ছিল না। তার বদলে ছিল এক রাশ বিতর্ক। চলতি দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের টেস্ট দল ঘোষণা করে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড তার নীচে এক লাইনে জানিয়ে দিয়েছিল, ‘এই দল নির্বাচনী সভায় এটাও ঠিক হয়েছে, যেহেতু সাদা বলের ক্রিকেটে দু’ জন অধিনায়ক রাখা সম্ভব নয়, তাই এক দিনের ক্রিকেটেও রোহিত শর্মাকেই অধিনায়ক করা হল।’
বাজ পড়েছিল ভারতীয় ক্রিকেটে। দাউ দাউ করে জ্বলেছিল বিতর্কের আগুন। দক্ষিণ আফ্রিকা যাওয়ার আগে সাংবাদিক সম্মেলনে মাথা নীচু করে বিমর্ষ মুখে কোহলী যা বলেছিলেন, তার রেশ ভারতীয় ক্রিকেটকে হয়ত অনেক দিন ধরে বইতে হবে।
বোর্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, কোহলীকে টি-টোয়েন্টির অধিনায়কত্ব ছাড়তে বারন করা হয়েছিল। তিনি যখন সেটি ছাড়তে চেয়েছিলেন, তখনই তাঁকে বলা হয়েছিল, সাদা বলের ক্রিকেটে দু’ জন অধিনায়ক রাখা সম্ভব নয়। কিন্তু কোহলী না কি নিজের সিদ্ধান্তে অবিচল ছিলেন। কিন্তু কোহলীর বক্তব্য ছিল, তাঁকে কোনও অনুরোধ-উপরোধ করা হয়নি। তাঁর অধিনায়কত্ব ছাড়ার কথা বোর্ড সেই সময় এক কথায় মেনে নিয়েছিল।
এক দিনের ক্রিকেটের অধিনায়কত্ব থেকে কোহলীকে সরানো নিয়ে বোর্ড সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য ছিল, তিনি নিজে এ ব্যাপারে কোহলীর সঙ্গে কথা বলেছেন। কোহলীর দিক থেকে কোনও আপত্তি বা সমস্যা নেই। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা যাওয়ার আগে সাংবাদিক সম্মেলনে বোর্ড সভাপতির এই বক্তব্যের সম্পূর্ণ বিপরীতে গিয়ে কোহলী বলেছিলেন, দল নির্বাচনের ঠিক দেড় ঘণ্টা আগে পাঁচ নির্বাচক ফোন করে বলেছিলেন, তাঁকে এক দিনের ক্রিকেটে অধিনায়ক রাখা হচ্ছে না।
এর পর নতুন বছরের ১৫ জানুয়ারি। আক্ষরিক অর্থে হঠাৎ করেই কোহলী টেস্ট ক্রিকেট থেকেও অধিনায়কত্ব ছাড়ার কথা নেট মাধ্যমে জানিয়ে দিলেন। তার ঠিক আগের দিন দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে প্রথম বার টেস্ট সিরিজ জয়ের স্বপ্ন ভেঙে খান খান হয়ে গিয়েছে। বোর্ড কি টেস্ট ক্রিকেটের মসনদ থেকেও তাঁকে সরিয়ে দিত? এটিই কি দেওয়াল লিখন ছিল? এবং এই দেওয়াল লিখন কি পড়ে ফেলেছিলেন কোহলী? তাই আর বোর্ডের ‘ওয়ান লাইনার’-এর অপেক্ষায় না থেকে একটুও সময় নষ্ট না করেই সুদূর দক্ষিণ আফ্রিকায় বসে কঠোর সিদ্ধান্তটি নিয়েই ফেললেন?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy