—প্রতীকী চিত্র
রঞ্জি ট্রফির কোয়ার্টার ফাইনালে ৭২৫ রানে হারের লজ্জার দিনেই সামনে এল উত্তরাখণ্ড ক্রিকেট সংস্থার দুর্নীতি। আর্থিক হিসাবে গন্ডগোল যেমন রয়েছে, তেমনই কোনও কোনও ক্রিকেটারকে খুনের হুমকি দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। দল নির্বাচনে কর্তাদের প্রভাব, কোচ, সাপোর্ট স্টাফদের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার মতো অভিযোগ উঠেছে উত্তরাখণ্ড ক্রিকেট সংস্থার কর্তাদের বিরুদ্ধে।
উত্তরাখণ্ড ক্রিকেট সংস্থার প্রধান জয় সিংহ গুনসলা। সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন সঞ্জয় রাওয়াত, সচিব মাহিম বর্মা, অনভিস বর্মা যুগ্ম-সচিব, কোষাধ্যক্ষ পৃথ্বী সিংহ নেগি। এই পাঁচ জনের সঙ্গে রয়েছেন দীপক মিশ্র, যিনি অ্যাপেক্স কাউন্সিলের সদস্য। উত্তরাখণ্ডের ক্রিকেটারদের প্রতি দিন (ডিএ) মাত্র ১০০ টাকা দেওয়া হয় বলে জানা গিয়েছে। এক সময় প্রতি দিন দেড় হাজার টাকা পেতেন তাঁরা। পরে সেটা কমে হাজার টাকা হয়। ফের এক সময় বাড়িয়ে সেটা দু’হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গত এক বছর ধরে প্রতি দিন তাঁরা পাচ্ছেন মাত্র ১০০ টাকা। ১০০ দিনের কাজের কর্মীরা এর থেকে রোজ হিসাবে বেশি টাকা পান। খাবার কেনার জন্য ক্রিকেটাররা টাকা চাইলে এক কর্তা বলেন, “কেন বার বার এক প্রশ্ন করো? টাকা পেয়ে যাবে। এখন নিজেরা খাবার কিনে খাও।”
অভিযোগ উঠেছে সচিব মাহিমের বিরুদ্ধে। সংবাদ মাধ্যম নিউজ নাইনের অনুসন্ধানে জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর সচিব হিসাবে মাহিম বর্মা উপদেষ্টা পদে অমৃত মথুরকে নিয়োগ করেন। একই দিনে রাহিল ওয়ালসনকে (১৯৮৩ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপজয়ী সুনীল ওয়ালসনের ছেলে) ক্রিকেট কোঅর্ডিনেটর হিসাবে নিয়োগ করেন মাহিম। কিন্তু সেই নিয়োগপত্রে মাহিম সই করেন যুগ্ম-সচিব হিসাবে।
সেই সংবাদ সংস্থার অনুসন্ধানে উঠে আসে, উত্তরাখণ্ডের কোচ হিসাবে ৩১ লক্ষ টাকা পান মনীষ ঝা। তাঁর অভিজ্ঞতা মাত্র ছ’টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলার। ক্রিকেটাররা টাকা না পেলেও ২০২১ সালের ৩১ মার্চ উত্তরাখণ্ড ক্রিকেট সংস্থার যে অডিট জমা দেওয়া হয়েছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে প্রতিযোগিতা এবং অনুশীলনে খাবারের জন্য খরচ হয়েছে এক কোটি ৭৪ লক্ষ টাকার বেশি। ক্রিকেটারদের ডিএ বাবদ খরচ দেখানো হয়েছে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা। আরও খরচের মধ্যে দেখানো হয়েছে কলার দাম ৩৫ লক্ষ টাকা এবং জলের বোতলের জন্য খরচ ২২ লক্ষ টাকা।
উত্তরাখণ্ড ক্রিকেট বোর্ডের আধিকারকদের এক দিনের মধ্যাহ্নভোজের খরচ হিসাবে দেড় কোটি টাকার উল্লেখ রয়েছে সেই হিসাবে। ক্রিকেটাররা টাকা না পাওয়ায় প্রশ্ন উঠছে সেই টাকা কোথাও গেল? শুধু আর্থিক তছরুপের অভিযোগই নয়, উত্তরাখণ্ডের দল নির্বাচন নিয়েও অভিযোগ জমা পড়েছে।
বহু প্রতিভাবান ক্রিকেটারকে ইচ্ছাকৃত ভাবে বসিয়ে রাখার অভিযোগ উঠছে। অনেক ক্রিকেটারের বাবা-মা চুপ করে থাকলেও মুখ খোলেন আর্য শেঠির বাবা। ২০১৯-২০ মরসুমে আর্য তিনটি ম্যাচ খেলেন উত্তরাখণ্ডের হয়ে। এর পর ঘরোয়া লিগে ধারাবাহিক ভাবে রান করে গেলেও তাঁকে বসিয়ে রাখা হয়। দুর্ব্যবহার করা হয় তাঁর সঙ্গে। এর ফলে আর্যর মানসিক সমস্যা শুরু হয় বলেও অভিযোগ। ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে দেহরাদূন পুলিশের কাছে তাঁর ছেলেকে খুন করার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন আর্যর বাবা। মাহিম বর্মাকেই মূল অভিযুক্ত হিসাবে তুলে ধরেন তিনি। দেহরাদূন, হরিদ্বার এবং অন্যান্য থানায় উত্তরখণ্ড ক্রিকেট সংস্থার নামে মোট ১৭৩টি অভিযোগ জমা পড়েছে।
উত্তরাখণ্ডের অধিনায়ক জয় বিস্ত জানিয়েছেন, কোনও দল নির্বাচনে তিনি থাকতেন না। তিনি এবং দলের অনেকে উত্তরাখণ্ড ক্রিকেট সংস্থার অব্যবস্থা নিয়ে মুখ খুলেছেন।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy