প্রতীকী ছবি।
তীব্র অর্থসঙ্কটে আমেরিকার ক্রিকেট। অর্থের অভাবে পুরুষদের জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ পর্যন্ত বাতিল করতে বাধ্য হল ইউএসএ ক্রিকেট। আয়ের থেকে ব্যয় বেশি হওয়ায় সাড়ে ৬ লক্ষ ডলার ঘাটতি সংস্থার তহবিলে। যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৫ কোটি ৩৫ লক্ষ ৫৮ হাজার টাকা।
রবিবার লস অ্যাঞ্জেলসে ইউএসএ ক্রিকেটের বার্ষিক সাধারণ সভা হয়েছে। সেই সভাতেই আর্থিক দুরবস্থার কথা জানিয়েছেন আমেরিকার ক্রিকেট কর্তারা। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা কী ভাবে ২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের যুগ্ম আয়োজকের দায়িত্ব পালন করবেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। রবিবারের সভায় ২০২১ সালের শেষ পর্যন্ত সংস্থার আয়-ব্যয়ের যে হিসাব পেশ করা হয়েছে, তাতেই উঠে এসেছে তীব্র অর্থসঙ্কটের তথ্য। এই পরিস্থিতে ক্রিকেটার এবং সংস্থার কর্মীদের বেতন দেওয়াও কঠিন হয়ে পড়েছে। অর্থের অভাবে পুরুষদের জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপের পাশাপাশি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ের জাতীয় প্রতিযোগিতাও। চলতি বছরে এই প্রতিযোগিতাগুলি হবে না। সম্ভব হলে ২০২৩ সালে প্রতিযোগিতা আয়োজনের চেষ্টা করবেন আমেরিকার ক্রিকেট প্রশাসকরা। যত দ্রুত সম্ভব অর্থসঙ্কট মিটিয়ে প্রতিযোগিতাগুলি শুরু করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে ইউএসএ ক্রিকেটের পক্ষ থেকে।
২০২১ সালের শুরুতে ইউএসএ ক্রিকেটের কাছে ছিল ৮ লক্ষ ৬৮ হাজার ডলার। যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৭ কোটি ১৪ লক্ষ ৬৬ হাজার টাকা। অথচ বছরের শেষে বিভিন্ন খাতে আমেরিকার ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা খরচ করেছে ১.৫ মিলিয়ন ডলার। যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১২ কোটি ৩৫ লক্ষ ৩৩ হাজার টাকা। খরচ বাড়লেও নতুন আয়ের পথ তেমন তৈরি করতে পারেননি আমেরিকার ক্রিকেট কর্তারা। ফলে বাজারে ক্রমশ বেড়েছে দেনা। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে সিরিজ় আয়োজন করতেই ইউএসএ ক্রিকেট খরচ করেছিল ৪ লক্ষ ডলার বা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৩ কোটি ২৯ লক্ষ ৪৩ হাজার টাকা। এই সিরিজ় ২০২১ সালের নভেম্বরে হঠাৎ করেই ঠিক করা হয়েছিল। ফলে বছরের শুরুতে এই সিরিজ়ের খরচ বাজেটে ধরা ছিল না। দু’টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ এবং তিনটি এক দিনের ম্যাচ খেলার কথা ছিল আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে। কিন্তু কোভিডের জন্য এক দিনের সিরিজ়ের একটি ম্যাচও হয়নি। অথচ সব আয়োজন আগেই করা ছিল। আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজ়ের আর্থিক ক্ষতির ধাক্কাই সব বড় ছিল ইউএসএ ক্রিকেটের কাছে। যে ধাক্কা আমেরিকার ক্রিকেট কর্তারা এখনও সামাল দিতে পারেননি।
২০২১ সালের শুরুতে আমেরিকার ক্রিকেট কর্তারা ভেবেছিলেন ১ লক্ষ ৩৬ হাজার ডলার ( ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১কোটি ১২ লক্ষ টাকা) খরচ হবে সংস্থার প্রশাসনিক কাজে। কিন্তু বছরের শেষে সেই খরচ দাঁড়ায় প্রায় ৮ লক্ষ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৬ কোটি ৫৮ লক্ষ ৯৪ হাজার টাকা)।
আমেরিকার ক্রিকেট বোর্ডের অন্তর্বর্তী কালীন চেয়ারম্যান অতুল রাই জানিয়েছেন, আর্থিক অস্বচ্ছতা এবং বিভিন্ন অনিয়মের জন্য আইসিসি তিনটি ত্রৈমাসিকের অনুদান বন্ধ রাখায় এই সমস্যা। আইসিসি যদি তিনটি ত্রৈমাসিকের অনুদানের টাকা দিয়ে দেয়, তা হলেই পরিস্থিতি সামলানো অনেক সহজ হয়ে যাবে। উল্লেখ্য পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে রবিবারের সভায় উপস্থিত ছিলেন আইসিসি গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার উইল গ্লেনরাইট এবং আমেরিকা মহাদেশে ক্রিকেটের উন্নতি এবং প্রসারের দায়িত্বে থাকা আইসিসি কর্তা ফারা গোরসি।
সংস্থার আয়-ব্যয় সংক্রান্ত হিসাব পেশ করেন ইউএসএ ক্রিকেটের নতুন কোষাধ্যক্ষ কুলজিৎ সিংহ নিজ্জর। তিনি প্রাথমিক হিসাব পেশ করার কথা মেনে নিয়েছেন। কারণ, কোন কোন ক্ষেত্রে ঠিক কত অর্থ ব্যয় হয়েছে তার বিস্তারিত তথ্য নেই নতুন বোর্ডের হাতে। ইউএসএ ক্রিকেটের অন্যতম সদস্য অবিনাশ গাজে বলেছেন, ‘‘সংস্থার বেশ কিছু খরচ সম্পর্কে আমরা এখনও জানতে পারিনি। প্রতি দিনই আমরা নতুন নতুন তথ্য পাচ্ছি। বলা যেতে পারে ৮০-৮৫ শতাংশ হিসাব আমরা উদ্ধার করতে পেরেছি। বাকিটার জন্য কাজ করছি আমরা।’’
এই পরিস্থিতিতে আমেরিকার ক্রিকেটকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ কর্তাদের কাছে। ২০২৪ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের সঙ্গে যৌথ ভাবে আয়োজন করার কথা আমেরিকার। আইসিসি বিশ্বকাপ সফল করতে ইউএসএ ক্রিকেটকে এড়িয়ে সরাসরি স্থানীয় আয়োজকদের সঙ্গে কাজ করতে শুরু করেছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের ক্রিকেট কর্তারাও আমেরিকার ক্রিকেট সংস্থার পরিস্থিতি দেখে যৌথ ভাবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে কিছু বলেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy