সাফল্যের আনন্দ: ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ে অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ ফাইনালে ইংল্যান্ডকে চার উইকেটে হারিয়ে কাপ জিতল ভারত। ছবি পিটিআই।
সেটা ছিল ২০১১, এটা ২০২২। সেটা ছিল মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়াম, এটা অ্যান্টিগার স্যর ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়াম। সে বার ছিলেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি, এ বার দীনেশ বানা। তখন ছিলেন দাদারা, এখন ভাইয়েরা। দু’বারই বিশ্বজয়ের শেষ লগ্নটা একই। লংয়ের উপর দিয়ে বিশাল ছক্কায় চ্যাম্পিয়ন ভারত।
বানার শট তখনও বাউন্ডারি লাইনের পিছনে বিজ্ঞাপনের বোর্ডগুলো পেরিয়ে মাটিতে আছড়ে পড়েনি, যশ ঢুল, রবি কুমার, রাজ বাওয়া, শাইক রশিদরা ততক্ষণে মাঠের প্রায় মাঝখানে। কেউ কেউ হয়ত ভাবতেও শুরু করে দিয়েছেন, এ ভাবে আগে-ভাগে দল বেঁধে ঢুকে পড়া যায় না কি! ছক্কাটা বোধ হয় বাতিলই হয়ে যাবে! কিন্তু দাদা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে বিশ্বকাপ খেলতে আসা ছোটদের এটুকু নিয়ম ভাঙা মাফ করে দেওয়া যায়।
অধিনায়ক ঢুলকে যখন ট্রফি নেওয়ার জন্য ডাকা হচ্ছে, তখন স্টেডিয়ামের ডিজে ‘চক দে ইন্ডিয়া’ বাজাচ্ছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রাক্তন অধিনায়ক রিচি রিচার্ডসন ট্রফিটা তুলে দেওয়া মাত্র মঞ্চে হুলস্থুল। কে ঢুলের হাত থেকে ট্রফিটা আগে কাড়তে পারবেন? যিনি পারবেন, তার পর তাঁর হাত থেকে কে বিশ্বকাপ ছিনিয়ে নিতে পারবেন? অবশেষে দায়িত্বে থাকা কর্মীদের মধ্যে কেউ রবি-শাইকদের বোঝালেন, এ রকম করলে তো ট্রফিটা আস্ত বাড়ি নিয়ে যাওয়া যাবে না। ওটা ‘চ্যাম্পিয়ন’ লেখা ব্যানারটার সামনে রেখে ছবি তুলতে হয়। ঠাণ্ডা হলেন সবাই।
ভারতের মতো ইংল্যান্ডও এ বারের বিশ্বকাপে অপরাজিত থেকে ফাইনাল খেলতে নেমেছিল। তাদের বিরুদ্ধে অবশ্য মাথা ঠাণ্ডাই ছিল, জানিয়ে দিলেন ঢুল। মহম্মদ কইফ, বিরাট কোহলী, উন্মুক্ত চন্দ, পৃথ্বী শ-র পর ভারতের হয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জেতা অধিনায়কের কথায়, ‘‘আমরা মাথা ঠাণ্ডা রেখেছিলাম। ইংল্যান্ড কিন্তু দারুণ ভাবে ম্যাচে ফিরে এসেছিল। কিন্তু আমরা ফোকাস নষ্ট হতে দিইনি। আমাদের কাছে এটা গর্বের মুহূর্ত।’’
তখন কথা বলার ইচ্ছে কারও মধ্যে খুব একটা নেই। ৩১ রানে ৫ উইকেট নিয়ে এবং ৩৫ রান করে ম্যাচের সেরা হওয়া রাজ বাওয়া বললেন, ‘‘যে কোনও ম্যাচে দলের জয়ে অবদান রাখতে পারাটা বড় ব্যাপার। আর এটা তো ফাইনাল।’’ রশিদও ক্যামেরার সামনে থেকে পালাতে পারলে বাঁচেন। শুধু বললেন, ‘‘কতটা ভাল লাগছে বলে বোঝাতে পারব না। রান তাড়া করার সময় শুধু খুচরো রান নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। নিজের স্বাভাবিক খেলাটা খেলেছি।’’
বাংলার বাঁহাতি জোরে বোলার রবি কুমার ১০টি উইকেট নিয়েছেন। ভারতীয়দের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। তিনি বললেন, ‘‘কোচেরা আমাকে একটাই কথা বলেছিলেন, মূল ব্যাপারটা ঠিক রাখতে। ফল কী হবে তা নিয়ে চিন্তা করতে ওঁরা বারণ করেছিলেন। আমার একটাই পরিকল্পনা ছিল, লাইন-লেংথ ঠিক রাখা। বল পড়ে একটু থমকে যাচ্ছিল। ফুলার লেংথে বল ফেলার চেষ্টা করছিলাম।’’ প্রথম ওভারেই জেকব বেথেলের উইকেট নিয়েছিলেন রবি। তাঁর ইনসুইং বল বেথেলের পিছনের পায়ে লাগে। তার পরেও আরও তিনটি উইকেট নিয়েছেন রবি। কিন্তু বেথেলের উইকেটকেই সেরা বাছলেন। এর পর তিনিও ছুটলেন সতীর্থদের ঘাড়ে চাপতে।
পাঁচ বার ছোটদের বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়া ভারতীয় দল তখন সেরা উৎসবের খোঁজে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy