পাকিস্তানের ক্রিকেটারেরা। ছবি: রয়টার্স।
এ বারের বিশ্বকাপে লিগ পর্বের সব ম্যাচ শেষ। ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউ জ়িল্যান্ড পৌঁছে গিয়েছে সেমিফাইনালে। ছিটকে গিয়েছে ইংল্যান্ড, পাকিস্তানের মতো শক্তিশালী দল। অনেক ক্রিকেটারের উপর আশা ছিল, কিন্তু সেটা তারা পূরণ করতে পারেননি। সেই সব ব্যর্থ ক্রিকেটারদের নিয়েই বেছে নেওয়া হল এ বারের বিশ্বকাপের ব্যর্থ একাদশ।
জনি বেয়ারস্টো: ইংল্যান্ডের ওপেনার এ বারের বিশ্বকাপে হতাশ করেছেন সকলকে। আইপিএলে খেলা বেয়ারস্টো ইংরেজ দলের বড় ভরসা ছিলেন। মনে করা হয়ে ছিল শুরুতে দ্রুত রান তুলতে সাহায্য করবেন বেয়ারস্টো। কিন্তু এ বারের বিশ্বকাপে তিনি ৯ ম্যাচে করেছেন ২১৫ রান। গড় ২৩.৮৮। বেয়ারস্টো না পেরেছেন দ্রুত রান করতে, না শেষ পর্যন্ত ক্রিজে থেকে বড় রান করেছেন।
লিটন দাস: বাংলাদেশ ওপেনারের উপর ভরসা রেখেছিলেন সে দেশের সমর্থকেরা। তামিম ইকবাল না থাকায় লিটনই ছিলেন বড় ভরসা। কিন্তু ৯ ম্যাচে মাত্র ২৮৪ রান করা লিটন সেই ভরসার মর্যাদা রাখতে পারেননি। মাত্র দু’টি অর্ধশতরান করেন তিনি। লিটন ব্যর্থ হওয়ায় বাংলাদেশের শুরুটা কোনও ম্যাচেই ভাল হয়নি। একের পর এক ম্যাচে হারতে হয় তাদের।
স্টিভ স্মিথ: অস্ট্রেলিয়া সেমিফাইনালে পৌঁছে গেলেও স্টিভ স্মিথ এ বারের বিশ্বকাপে ব্যর্থ। তিনি ৮ ম্যাচে করেছেন ২৬৮ রান। গড় ৩৮.৩৮। শতরান আসেনি তাঁর ব্যাটে। দু’টি অর্ধশতরান করেছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম সেরা ব্যাটারের এ বারের বিশ্বকাপটা একেবারেই ভাল যায়নি। দল চাইবে সেমিফাইনালে বড় রান করুক স্মিথ।
বাবর আজ়ম: গত বছর বিশ্বকাপে ৮ ম্যাচে ৪৭৪ রান করেছিলেন তিনি। সেটাই ছিল বাবরের প্রথম বিশ্বকাপ। অভিষেক বিশ্বকাপে সব থেকে বেশি রান করার তালিকায় সেটা ছিল দ্বিতীয় স্থানে। এ বারে রাচিন রবীন্দ্র শীর্ষস্থান দখল করায় এক ধাপ পিছিয়ে গিয়েছেন বাবর। সেই পাক ক্রিকেটার এ বারের বিশ্বকাপে ৯ ম্যাচে করেছেন ৩২০ রান। চারটি অর্ধশতরানও করেছেন। কিন্তু পাকিস্তান দলকে ম্যাচ জেতাতে ব্যর্থ হয়েছেন। বাবর তেমন ভাবে কোনও প্রভাব তৈরি করতে পারেননি। তাঁর স্ট্রাইক রেট ৮২.৯০। তিনিই এই দলের অধিনায়ক।
শাকিব আল হাসান: বাংলাদেশ অধিনায়ক বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার। কিন্তু এ বারের বিশ্বকাপে বার বার বিতর্কে জড়িয়েছেন শাকিব। কখনও দেশে ফিরে গিয়েছিলেন বিশ্বকাপের মাঝে, কখনও আবার বিপক্ষকে টাইম্ড আউট করেছেন। কিন্তু ব্যাট হাতে শাকিবের অবদান সাত ম্যাচে ১৮৬ রান। বল হাতে নিয়েছেন ৯ উইকেট। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও দলকে তুলতে পারেননি শাকিব।
জস বাটলার: ইংরেজ দলের মতো অধিনায়কও ব্যর্থ। গত বারের বিশ্বকাপজয়ী দল এ বারে সেমিফাইনালে তো উঠতে পারেইনি, কোনও মতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে। সেই দলের অধিনায়ক বাটলার ৯ ম্যাচে করেছেন ১৩৮ রান। কোনও অর্ধশতরান করতে পারেননি। এই দলের উইকেটরক্ষকও বাটলার। তিনি গ্লাভস হাতেও ব্যর্থ। উইকেটের পিছনে বার বার বল ফস্কেছেন।
রশিদ খান: আফগানিস্তান দল এ বারের বিশ্বকাপে দুর্দান্ত খেলেছে। এক সময় সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়েও ছিল। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ২০১ রানের অপরাজিত ইনিংসের দাপটে সেই আশা ধাক্কা খায়। রশিদ এই আফগান দলের অন্যতম অভিজ্ঞ স্পিনার। তিনিই ছিলেন দলের ভরসা। ভারতের মাটিতে খেলা হওয়ায় রশিদের থেকে প্রত্যাশা ছিল অনেক বেশি। কিন্তু তিনি ৯ ম্যাচে নিয়েছেন ১১টি উইকেট। বিশ্বকাপে সফল হতে গেলে দলের প্রধান বোলারকে আরও বেশি উইকেট নিতে হত। রশিদ সেটা পারেননি।
মহেশ থিকসানা: শ্রীলঙ্কা দলের অন্যতম স্পিনার তিনি। ওয়ানিন্দু হাসরঙ্গের চোট থাকায় বিশ্বকাপ খেলতে পারেননি। চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে খেলা থিকসানার উপর ভরসা রেখেছিল শ্রিলঙ্কা। কিন্তু তিনি ৮ ম্যাচে বল হাতে দিয়েছেন ৩৮২ রান। নিয়েছেন মাত্র ৬ উইকেট। শ্রীলঙ্কার হারের পিছনে দায় এড়াতে পারবেন না থিকসানা।
হ্যারিস রউফ: তবে রান দেওয়ার ব্যাপারে রেকর্ড গড়েছেন হ্যারিস। তিনি এ বারের বিশ্বকাপে ৯ ম্যাচে ৫৩৩ রান দিয়েছেন। সেটাই বিশ্বকাপে সব থেকে বেশি রান দেওয়ার রেকর্ড। ১৬টি উইকেট নিলেও হ্যারিস বল করতে এলেই ব্যাটারেরা একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন। পাকিস্তানের বোলিং বিভাগের ব্যর্থতার বড় দায় হ্যারিসের।
মুস্তাফিজুর রহমান: বাংলাদেশের হয়ে নতুন বল শুরু করেন বাঁহাতি পেসার। শুরুতেই উইকেট নেওয়া তাঁর কাজ। কিন্তু বাংলাদেশের পেসার ৮ ম্যাচে নিয়েছেন মাত্র ৫ উইকেট। দিয়েছেন ৩৯৮ রান। শুরুতেই বিপক্ষকে ধাক্কা দেওয়ার কাজটা করতেই পারেনি বাংলাদেশ। এ বারের বিশ্বকাপে হতাশ করলেন তিনি।
শাহিন শাহ আফ্রিদি: পাকিস্তানের পেসার এ বারের বিশ্বকাপে এসেছিলেন বহু প্রত্যাশা তৈরি করে। তিনি ১৮টি উইকেটও নিয়েছেন ৯ ম্যাচে। কিন্তু দিয়েছেন ৪৮১ রান। শাহিন এ বারের বিশ্বকাপে অনেক উইকেটই পেয়েছেন পরের দিকে বল করতে এসে। তত ক্ষণে বিপক্ষ ব্যাটারেরা যা রান করার করে ফেলেছেন। শুরুতে উইকেট নিতে না পারায় পাকিস্তান ব্যর্থ হয়েছে। দলের খারাপ খেলার পিছনে দায় রয়েছে শাহিনের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy