দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ফুরফুরে মেজাজে বাবর আজম। —ফাইল চিত্র
জ়িম্বাবোয়ের কাছে হেরে দলের ব্যাটারদের কাছে কৈফিয়ত চেয়েছিলেন। ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। কিন্তু দু’ম্যাচ পরেই বদলে গেল ছবিটা। দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ফুরফুরে মেজাজে পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজ়ম। দলের প্রত্যেক ক্রিকেটারেরই ম্যাচ জেতানোর ক্ষমতা আছে বলে জানালেন তিনি।
বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ডাকওয়ার্থ লুইস নিয়মে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়েছে পাকিস্তান। এখনও শেষ চারে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে তাদের। ম্যাচ জিতে বাবর বলেছেন, ‘‘প্রথম দুটো ম্যাচে হার আমাদের বড় ধাক্কা দিয়েছে। কিন্তু যে ভাবে আমরা শেষ দুটো ম্যাচে খেলেছি তা অসাধারণ। ক্রিকেট খুব মজার খেলা। কী হবে কিছুই বলা যায় না।’’ বাবরের এই কথা থেকে স্পষ্ট, সেমিফাইনালের স্বপ্ন দেখা শুরু করেছেন পাকিস্তানের অধিনায়ক।
দলের ক্রিকেটারদের বিরাট প্রশংসা শোনা গিয়েছে বাবরের মুখে। তিনি বলেছেন, ‘‘আমার দলের প্রত্যেকে সেরা খেলোয়াড়। প্রত্যেকের ম্যাচ জেতানোর ক্ষমতা রয়েছে। সেটা গত দুটো ম্যাচে আমরা দেখিয়েছি।’’ ব্যাটারদের প্রশংসা করলেও নিজের খেলায় খুশি নন বাবর। খুশি নন সতীর্থ মহম্মদ রিজ়ওয়ানের খেলাতেও। বাবর বলেছেন, ‘‘দলের খেলায় খুশি। কিন্তু আমি ও রিজ়ওয়ান নিজেদের যোগ্যতা অনুযায়ী খেলতে পারিনি। মিডল অর্ডার ভাল খেলেছে। হ্যারিস অন্য রকমের প্রতিভা। ইফতিকার ও শাদাব যে ভাবে খেলা শেষ করেছে সেটাও অসাধারণ।’’
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় পাকিস্তান। ওয়েন পার্নেলকে চার মারার পরেই বোল্ড হয়ে যান রিজ়ওয়ান। বেশি ক্ষণ টিকতে পারেননি অধিনায়ক বাবরও। প্রাথমিক ধস সামনে অবশ্য পাকিস্তানকে বেশ কিছুটা এগিয়ে দেন মহম্মদ হ্যারিস। চোট পাওয়া ফখর জ়মানের জায়গায় দলে সুযোগ পেয়েছেন তিনি। এই ম্যাচে প্রথম বার বিশ্বকাপে নামলেন। শুরু থেকেই প্রোটিয়া জোরে বোলারদের উপর আক্রমণ শুরু করেন তিনি। রাবাডা, অনরিখ নোখিয়া, পার্নেল— কাউকে ছাড়েননি তিনি। তবে বেশি ক্ষণ ক্রিজে টিকতে পারলেন না। নোখিয়ার বলে আড়াআড়ি ভাবে ব্যাট চালাতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হলেন।
৯৫ রানে পাঁচ উইকেট হারানো পাকিস্তান যে তবু ভদ্রস্থ রানে পৌঁছল, তার পিছনে রয়েছেন দুই ব্যাটার। তাঁরা হলেন ইফতিকার আহমেদ এবং শাদাব খান। এর মধ্যে বেশি আক্রমণাত্মক ছিলেন শাদাব। তিনটি চার এবং চারটি ছয়ের সাহায্যে ২২ বলে ৫২ রান করেন তিনি। ইফতিকার ৩৫ বলে ৫১ রান করেন। তিনি তিনটি চার এবং দু’টি ছয় মেরেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে জয়ের জন্য ১৮৬ রানের লক্ষ্য দেয় পাকিস্তান।
রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই চাপে পড়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ছন্দে থাকা কুইন্টন ডি’কক এবং রিলি রুসো ফিরে যান। ১৬ রানে ২ উইকেট পড়ে যায় প্রোটিয়াদের। চলতি প্রতিযোগিতায় খারাপ খেলার পর এই ম্যাচে ছন্দে থাকার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন টেম্বা বাভুমা। তিনিও ১৯ বলে ৩৬ করে ফিরে যান। তাঁকে ফিরিয়ে দেন শাদাব। একই ওভারে তিনি ফিরিয়ে দেন এডেন মার্করামকেও (২০)। ওই দু’টি উইকেট ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।
দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর যখন ৯ ওভারে ৬৯, তখনই বৃষ্টি নামে। ম্যাচ বন্ধ করতে বাধ্য হন আম্পায়াররা। স্থানীয় সময় ৯.৩০টা পেরিয়ে যাওয়ায় ওভার যে কমবে, তা এক প্রকার নিশ্চিত ছিল। দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে যে কঠিন লক্ষ্যমাত্রা থাকবে, সেটা স্পষ্ট ছিল। ম্যাচ আর শুরু না হলে ১৬ রানে হারত তারা। কিন্তু ম্যাচ শুরু হওয়ায় এবং দক্ষিণ আফ্রিকা বেশি উইকেট হারানোর কারণে তাদের লক্ষ্যমাত্রাও বেড়ে যায়। ম্যাচ কমে দাঁড়ায় ১৪ ওভারের। দক্ষিণ আফ্রিকার দরকার ছিল ১৪২। অর্থাৎ পাঁচ ওভারে তুলতে হত ৭৩।
হেনরিখ ক্লাসেন এবং ট্রিস্টান স্টাবস শুরুটা ভালই করেছিলেন। প্রথম দু’ওভারে প্রায় ৩০-এর কাছাকাছি রান উঠে যায়। কিন্তু সেই ছন্দ ধরে রাখতে পারেনি প্রোটিয়ারা। শেষ দিকে সবাই মারতে গিয়ে আউট হয়ে যান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy