কয়েক ঘণ্টা পরেই ধুন্ধুমার লড়াই।
অপেক্ষার অবসান। যে ম্যাচের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেছিলেন গোটা বিশ্বের ক্রিকেটপ্রেমীরা, আর কয়েক ঘণ্টা পরেই শুরু হতে চলেছে সেই ম্যাচ। দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ভারত বনাম পাকিস্তানের ম্যাচ নেহাৎই একটা ৪০ ওভারের লড়াই নয়, দু’দেশের আবেগ, দম্ভ, হুঙ্কার – সবই জড়িয়ে রয়েছে এর সঙ্গে। ভারত বা পাকিস্তান, যে দেশের সমর্থকই হোক না কেন, এই ম্যাচ তাঁদের কাছে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। ফলে উত্তাপটা টের পাওয়া গিয়েছে অনেক আগে থেকেই।
দু’দেশের কাছেই এটি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ। এই ম্যাচ জিতে গেলে বিশ্বকাপের শুরুটাই শুধু দুর্দান্ত হবে না, বাকি ম্যাচগুলিতে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাস নিয়ে নামা যাবে। যুযুধান দুই অধিনায়ক বিরাট কোহলী এবং বাবর আজম কিন্তু এই কথাটাই বার বার বলেছেন। দু’জনের কেউই প্রতিপক্ষ, তাদের বিরুদ্ধে অতীত পরিসংখ্যান, কিছু নিয়েই ভাবতে রাজি নন। তাঁদের মুখে শুধু জিতে প্রতিযোগিতা শুরুর কথা। দু’জনেই মেনে নিয়েছেন, ম্যাচের দিন যাঁরা ভাল খেলবেন তাঁরাই শেষ হাসি হাসবে।
পরিসংখ্যান বলছে, এই লড়াইয়ে বরাবরই দাপট দেখিয়ে এসেছে ভারত। ৫০ ওভারের বিশ্বকাপই হোক বা ২০ ওভারের, মোট ১২ বারের সাক্ষাতে প্রত্যেক বারই নীল জার্সিধারীরা জয়ী হয়েছে। আইসিসি-র প্রতিযোগিতায় পাকিস্তানের সাফল্য বলতে শুধু চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে জেতা। কিন্তু বিশ্বকাপের ফলই যে সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, এটা প্রত্যেকেই মানেন। তাই হিসেব উল্টে দিতে এ বার মরিয়া বাবর আজমের দল।
কিন্তু সাম্প্রতিক পরিস্থিতি এবং ফর্ম বলছে, পাল্লা ভারি ভারতের দিকেই। একে তো তাদের ক্রিকেটাররা খেলার মধ্যেই রয়েছেন। বিশ্বকাপের প্রত্যেক সদস্যই আইপিএল-এ খেলেছেন। তা হয়েছে এই আমিরশাহিতেই। ফলে মরুদেশের পিচ এতদিনে তাঁদের কাছে হাতের তালুর মতো চেনা। যতই পাকিস্তান বলুক আমিরশাহিতে তাদের খেলার অভিজ্ঞতা বেশি, ভারত যে সাম্প্রতিক ফর্মের বিচারে এগিয়ে রয়েছে সেটা কেউই অস্বীকার করছেন না। যে কারণে বর্তমান হোক বা প্রাক্তন, প্রত্যেকেই এই মহারণে এগিয়ে রাখলেন কোহলীদের।
ভারতের পক্ষে আরও বড় ইতিবাচক দিক হল মেন্টর হিসেবে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির দলের সঙ্গে যুক্ত হওয়া। নিঃসন্দেহে তাঁর হিমশীতল মানসিকতা ড্রেসিং রুমে অনেক বড় পার্থক্য গড়ে দেবে। কোচ হিসেবে রবি শাস্ত্রীরও এটাই শেষ দায়িত্ব। তিনিও ছাড়তে চাইবেন মাথা উঁচু করেই। তবে ভারতকে কিছুটা হলেও চিন্তায় রাখবে কোহলীর ছন্দ। এমনিতে পাকিস্তানকে দেখলে কোহলী জ্বলে ওঠেন। ২০১৫ সালের একদিনের ক্রিকেট বিশ্বকাপ বা ২০১৬-র টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, দু’টি ম্যাচেই কোহলীর কাছে হেরেছিল পাকিস্তান। আইপিএল-এ রানের মধ্যে না থাকা কোহলীর কাছে ফর্মে ফেরার জন্য এর থেকে বড় মঞ্চ আর হতে পারে না।
ভারতের ঠিক উল্টো পরিস্থিতি পাকিস্তানের। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগেই আচমকা দায়িত্ব ছেড়েছেন মিসবা উল-হক। দিনদুয়েক আগেই দেশের ক্রিকেটীয় সংস্কৃতির প্রতি তোপ দেগেছেন তিনি। তড়িঘড়ি কোচ হিসেবে রাজি করিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তনী ম্যাথু হেডেনকে। কিন্তু নতুন কোচের সঙ্গে এত দ্রুত কী ভাবে ক্রিকেটাররা মানিয়ে নিতে পারেন, সে দিকে চোখ থাকবে সকলেরই।
দল নির্বাচন নিয়েও হয়েছে এক প্রস্থ নাটক। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দেশের অন্যতম সেরা ব্যাটার ফখর জামানকে বাদ দেওয়া হলেও পরে তাঁকে দলে নেওয়া হয়েছে। ফেরানো হয়েছে শোয়েব মালিককে। তাঁরা প্রথম একাদশেও জায়গা পেতে চলেছেন। পাকিস্তানের বড় অস্ত্র তাদের পেস বোলিং। ফলে শাহিন শা আফ্রিদি, হ্যারিস রউফ এবং হাসান আলির উপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। কিন্তু ছন্দে থাকলে রোহিত শর্মা, কেএল রাহুলরা কাউকেই পরোয়া করেন না।
অপেক্ষা আর কয়েক ঘণ্টার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy