কন্যা সানার সঙ্গে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
কলকাতায় এই প্রথম একই অনুষ্ঠানে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এবং সানা গঙ্গোপাধ্যায়। কন্যা সানা যে সংস্থায় কর্মরত, তার অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা বাবা সৌরভ। আগামী ১৭ অগস্ট বিশ্ব বাংলা কনভেনশন সেন্টারে এই অনুষ্ঠান হওয়ার কথা।
লন্ডনের তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা ‘ইনোভার্ভ’-এ কর্মরত সানা। ভারতে সেই সংস্থার সদর দফতর কলকাতায়। ১৭ অগস্ট তাদের অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। সেখানে নেতৃত্ব দেওয়া নিয়ে নিজের নানা অভিজ্ঞতার কথা বলবেন সৌরভ। ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক বলেন, ‘‘আমি ইনোভার্ভের ব্যাপারে প্রথম জানতে পারি কন্যা সানার কাছ থেকে। ও যে ভাবে এই সংস্থা নিয়ে উৎসাহী, যে ভাবে একে ভালবাসে, সেটা দেখে আমি অবাক। প্রতি দিন ঘুম থেকে উঠেই ছটফট করে কখন অফিস যাবে, ওর দলের সঙ্গে কাজ করবে। ওখানে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের মধ্যে সানা বয়সে সবচেয়ে ছোট। সে-ও যদি নিজেকে মূল্যবান এবং গর্বিত মনে করে, কাজ করে আনন্দ পায়, তার মানে বুঝতে হবে এই সংস্থার মধ্যে কোনও বিশেষ ব্যাপার আছে।’’
গত জুলাইয়েও এই সংস্থার অনুষ্ঠানে ছিলেন সৌরভ। সেটি হয়েছিল লর্ডসে। যে মাঠ সৌরভকে পরিচিতি দিয়েছে, যে মাঠে অভিষেক টেস্টে শতরান করেছেন তিনি, সেখানে এই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পেরে খুশি। বলেন, ‘‘লর্ডস আমার হৃদয়ে রয়েছে। সেখানে ইনোভার্ভের অনুষ্ঠানে ছিলাম গত জুলাইয়ে। আমরা যেখানে অনুষ্ঠানটা করেছিলাম, তার পিছনে পুরো লর্ডসটা দেখা যাচ্ছিল। এ বার অগস্টে আমার নিজের শহর কলকাতায় অনুষ্ঠান। এ বার আরও বেশি দর্শক থাকবেন। আমি মুখিয়ে আছি।’’
লর্ডসেই সৌরভের নেতৃত্বে ভারত জিতেছিল ন্যাটওয়েস্ট ট্রফি। ‘লিডারশিপ’ নিয়ে বলতে গিয়ে সেই ফাইনালের একটি গল্প বলেছিলেন তিনি। সেটি ছিল বীরেন্দ্র সহবাগকে নিয়ে। ইংল্যান্ড যখন ৩২৫ রান করেছিল, মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে হতাশ হয়ে লং রুমে হাঁটছিলেন সৌরভ। আর পিছনে শিস্ দিচ্ছিলেন সহবাগ। সৌরভ বলেন, ‘‘মাথাটা গরম হয়ে গিয়েছিল। সহবাগকে বললাম, একে তো ৩২৫ রান করতে দিয়েছিস ওদের, এখন কি খুব মজা লাগছে? আসলে এখনকার মতো তখন এত সহজে ৩০০ রান তাড়া করে জেতা যেত না। যাই হোক, ও বলল, আমরা জিতব। আমি বললাম, দেখা যাক। আমি আর ও ব্যাট করতে নেমেছি। সাত ওভারে ৭০ রানের মতো করেছি আমরা। একটু পরিকল্পনা ছকে নিলাম আমরা দু’জনে। কাকে মারব, কাকে ধরে খেলব। ওদের রনি ইরানি বল করতে এল। সহবাগকে বললাম, ওভারে ছয়-সাত রান করে তুলব আমরা। সিঙ্গলসের উপর জোর দে। বলল ঠিক আছে। প্রথম বলে চার মারল। ওকে গিয়ে বললাম, ভাল শট মেরেছিস। সিঙ্গলস নে। বলল, হ্যাঁ হ্যাঁ ঠিক আছে। পরের বলে আবার চার মারল। বললাম, একটু ধরে খেল। বলল, হ্যাঁ হ্যাঁ কোনও চিন্তা নেই। তৃতীয় বলেও চার মারল। ব্যাটে না লাগলে ওর প্যাডে বল লাগত। এলবিডব্লিউ হয়ে যেত। একটু কড়া ভাবে তাকালাম। ও বুঝতে পারল আমি রেগে যাচ্ছি। পঞ্চম বলে আবার চার। আমি আর কিছু বলিনি। শেষ বলে সিঙ্গলস নিল। যখন ক্রিজে আমরা ক্রস করছি, বলল, আমি কিন্তু তোমার কথা শুনেছি।’’
এর পর সৌরভ বলেন, ‘‘সে দিন ম্যাচটা জেতার পর বুঝেছিলাম, প্রত্যেকের নিজস্ব একটা ধরন আছে। আমি হয়তো ভাবছি, আমারটাই সেরা পদ্ধতি। কিন্তু সে দিন বুঝেছিলাম, যতই আমি ক্যাপ্টেন হই, দলের অন্য কারওর ভাবনাটা হয়তো বেশি উপযোগী। তার প্রতিভা হয়তো আমার থেকে বেশি। তাই প্রত্যেককে তার নিজের মতো চলতে দেওয়া উচিত। দ্রাবিড়ের একটা ধরন আছে, হরভজনের একটা ধরন আছে। সেটাকে মান্যতা দেওয়া উচিত। সে দিন থেকে বোধ হয় আর একটু ভাল ক্যাপ্টেন হতে পেরেছিলাম। এটা যে কোনও সংস্থার ক্ষেত্রেও সত্যি।’’
কলকাতার অনুষ্ঠানেও সৌরভ এ ভাবেই নিজের অভিজ্ঞতা থেকে নানা গল্প বলবেন। কী ভাবে ভাল নেতা হওয়া যায়, পরামর্শ দেবেন।
সংস্থার সিইও পার্থ চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘সৌরভের মতো আমরাও খেলার মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারি। আমরাও জেতার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। তাই গাঁটছড়া বাঁধার ক্ষেত্রে সৌরভের থেকে উপযুক্ত আর কে হতে পারে। সৌরভের শহর কলকাতাতেই আমাদের সংস্থার ভারতীয় সদর দফতর। তাই ১৭ তারিখের অনুষ্ঠান আকর্ষণীয় হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy