শীতলের (ডান দিকে) সঙ্গে শুভমন। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
তার জেদ এবং পরিশ্রমের উদাহরণ আগেই দেখেছে বিশ্ব। প্যারা এশিয়ান গেমসে তিনটি সোনা, একটি রুপো জিতে নিজের জাত চিনিয়েছিল প্যারা তিরন্দাজ শীতল দেবী। হাত নেই। পা দিয়ে তির ছুড়েই স্বপ্ন পূরণ হয়েছিল। এ বার তার লক্ষ্য আরও উঁচুতে। প্যারিস প্যারা অলিম্পিক্সে সোনা জিততে কঠোর পরিশ্রম করছে সে। তার পাশাপাশি বিশ্বের এক নম্বর প্যারা তিরন্দাজ হয়ে গিয়েছে সে। সম্প্রতি তার সঙ্গে দেখা করেছেন ক্রিকেটার শুভমন গিল। ভারতীয় ক্রিকেটার সেখানে শীতলের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
এশিয়ান গেমসের সফল প্যারা ক্রীড়াবিদদের সঙ্গে সম্প্রতি দেখা করেন শুভমন। সেখানে শীতলের সঙ্গেও দেখা হয় তাঁর। ইনস্টাগ্রামে একটি ছবি দিয়ে শুভমন লেখেন, “এশিয়ান গেমসে যাঁরা তেরঙাকে আকাশে ওড়াতে সাহায্য করেছেন তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে পেরে গর্বিত। ওঁদের দায়বদ্ধতা এবং জেদ দেখে আমি মুগ্ধ।”
বিশ্বের এক নম্বর হয়ে গেলেও শীতলের চোখ প্যারিস প্যারালিম্পিক্সে। সে বলেছে, “আমার চোখ এখন প্যারিস প্যারালিম্পিক্সে। ওখানেও যাতে পোডিয়ামে দাঁড়িয়ে তেরঙা ওড়াতে পারি তার জন্য সব রকম চেষ্টা এখন থেকেই শুরু করে দিয়েছি। যত বেশি সম্ভব পদক জেতার চেষ্টা করব।”
জন্ম থেকেই বিরল রোগ ‘ফোকোমেলিয়া’য় আক্রান্ত শীতল। ফলে বেড়ে ওঠেনি হাত। কিন্তু তাতেও দমে যায়নি জম্মু-কাশ্মীরের কিশতওয়ারের লোইধার গ্রামের ১৬ বছর বয়সী তিরন্দাজ। চিনে আয়োজিত প্যারা এশিয়ান গেমসে পা দিয়ে তির ছুড়ে সোনা জিতেছিল শীতল। এশিয়ান গেমসের একটি সংস্করণে দু’টি বা তার বেশি স্বর্ণপদক জয়ী প্রথম ভারতীয় মহিলা হয়েছিল শীতল। তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। এ বছর প্যারা এশিয়ান গেমসে মহিলাদের ডাবলসে রূপো এবং মিক্সড ডাবলসে সোনা জিতেছিল শীতল।
মাত্র দু’বছর আগেই তীর-ধনুক নিয়ে অনুশীলন শুরু করেছিল শীতল। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শীতল বলেছিল, “প্রথম দিকে ধনুক ধরতেই পারতাম না। পরে অনুশীলন করার পর ঠিক হয়েছে। আমার বাবা-মা কখনও আমার উপর বিশ্বাস হারাননি। আমার বন্ধুরাও আমাকে অনেক সমর্থন করেছে।” শীতল আরও বলেছিল, “একটি বিষয়ই আমার পছন্দ নয়। তা হল আমার হাত নেই বলে সবাই যখন বিশেষ দৃষ্টিতে আমায় দেখেন। তাঁদের ভুল প্রমাণ করার জন্যই এই পদক। এই পদক শুধু আমার নয়, গোটা দেশের।”
অনুশীলনের শুরুতে দৈনিক ৫০ থেকে ১০০টি তীর ছুঁড়ত শীতল। কখনও কখনও তা ৩০০-তেও পৌঁছে যেত। সোনিপতে অনুষ্ঠিত প্যারা ওপেন ন্যাশনাল্সে রুপো পেয়েছিল শীতল। তার দুই কোচ অভিলাষা চৌধরী এবং কুলদীপ ভেদওয়ান এর আগে কখনই হাত নেই এরকম কোনও তিরন্দাজকে প্রশিক্ষণ দেননি। শীতলই প্রথম। ২০১২ লন্ডন প্যারালিম্পিক্সে রৌপ্যপদক বিজয়ী ম্যাট স্টুটজম্যান তীর ছোড়ার জন্য যে ভাবে তাঁর পা ব্যবহার করছেন তা দেখে শীতলকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এই বছরের শুরুতে শীতল চেক প্রজাতন্ত্রের পিলসেনে বিশ্ব প্যারা আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপে রৌপ্য পদক জিতেছিল। ফাইনালে তুরস্কের ওজনুর কিউরের কাছে হেরে গিয়েছিল সে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy