কলার তোলা সাহসের নাম কপিল। —ফাইল চিত্র
ট্রেনে সফররত কপিল দেব এবং রোমি ভাটিয়া। এমনিতে যে কপিলের মুখে খই ফোটে, সাংবাদিকদের চোখে চোখ রেখে বলে দিতে পারেন, “আমরা এখানে বিশ্বকাপ জিততে এসেছি।” সেই কপিল রোমিকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে ভয় পাচ্ছিলেন। ট্রেন থেকে বাইরের একটা মনোরম দৃশ্য চোখে পড়ে। রোমিকে বলেন, “আমাদের সন্তানদের দেখানোর জন্য এখানের একটা ছবি নিতে চাও?”
মাঠে এবং মাঠের বাইরে এমনই তো কপিল। ১৯৮৩ সালে ভারত যখন ইংল্যান্ডে বিশ্বকাপ খেলতে গিয়েছিল, তখন কে ভেবেছিল যে কপিলরা বিশ্বকাপ জিতবেন? ইংল্যান্ডের বিখ্যাত সাংবাদিক ডেভিড ফ্রিথ বলেছিলেন ভারতকে ডাকারই দরকার নেই। তেমন একটা সময় ইংল্যান্ডে সাংবাদিক বৈঠকে কপিল বললেন, “আমরা এখানে বিশ্বকাপ জিততে এসেছি।” কতটা সাহস থাকলে সেটা বলা যায়। ইংরাজিতে কথা বলায় খুব একটা স্বচ্ছন্দ ছিলেন না। সেই নিয়েও মজাও করা হত, কিন্তু কপিল তাতে থোড়াই পাত্তা দেন। কলার তোলার সাহস তাঁর। নইলে টেস্ট ক্রিকেটের প্রথম শতরানটা কেউ ছয় মেরে করেন!
ভারতের একদিনের ক্রিকেটে প্রথম শতরানের মালিক কপিল। বিশ্বকাপের মঞ্চে ভারতের হয়ে প্রথম শতরানের মালিক কপিল। সব চেয়ে কম বয়সে হাজার রান এবং ১০০ উইকেটের মালিক কপিল। চার হাজারের বেশি রান, সঙ্গে চারশোর বেশি উইকেটের মালিক কপিল। তিনি শুধু দাপুটে অধিনায়ক নন, দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া অধিনায়ক।
কপিল এমন একজন ক্রিকেটার যিনি টেস্টে ১৮৪টি ইনিংস খেললেও কখনও রান আউট হননি। উইকেটের মাঝে তাঁর দৌড় ছিল অতুলনীয়। প্রচণ্ড ফিট কপিল ছ’ফুট লম্বা। চোটের জন্য কোনও টেস্টে বসতে হয়নি তাঁকে। এত ফিট থাকার পিছনে কারণ বোধ হয় কপিলের বাবা রাম লাল নিখঞ্জ। শরীর সুস্থ রাখতে বেশি করে দুধ খেতে বলা হয়েছিল কপিলকে। রাম লাল দু’টি মোষ কিনে নেন ছেলেকে দুধ খাওয়ানোর জন্য।
মুম্বইয়ের একটি ক্যাম্পে অনুশীলন করার সময় বেশি রুটি চেয়েছিলেন। পেসারদের বেশি শক্তি প্রয়োজন, তাই তাঁদের বেশি খাওয়া উচিত বলে জানিয়েছিলেন কপিল। হেসে উড়িয়ে দেন কোচ কেকি তারাপোর। বলেছিলেন, “ভারতে পেসার হয় না। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভারতের কোনও পেসার নেই।” হয়ে দেখিয়ে দিয়েছিলেন কপিল। ভারতের প্রথম সত্যিকারের পেসার বোধ হয় তিনিই। আন্তর্জাতিক মঞ্চে যাঁর উইকেটের সংখ্যা ৬৮৭।
ভারতের প্রথম বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক। লর্ডসের বারান্দায় বিশ্বকাপ হাতে তাঁর দাঁড়িয়ে থাকার ছবি পরবর্তী সময় হাজার হাজার তরুণকে স্বপ্ন দেখিয়েছে ক্রিকেটার হওয়ার। সাহস দিয়েছে ছোট শহর থেকে উঠে এসে ভারতের জার্সি গায়ে নেমে পড়ার।
কপিল দেব শুধু নিজে সাহসী নন, তিনি ভারতের হাজার হাজার উঠতি ক্রিকেটারের সাহসের প্রতীক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy