ইনিংসে হার বাঁচালেন ম্যাচে পরাজয় মনোজের বাংলার। ছবি: পিটিআই
লজ্জা হয়তো কিছুটা বাঁচল, কিন্তু শেষ রক্ষা হল না।
শনিবার অনুষ্টুপ মজুমদার এবং মনোজ তিওয়ারির দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই দেখে অনেকেই মনে করেছিলেন, বাংলার আশা হয়তো এখনই শেষ হয়ে যায়নি। অনুষ্টুপ আউট হলেও তৃতীয় দিনের শেষে অপরাজিত ছিলেন মনোজ। বেঁচে ছিল বাংলা এবং বাংলার ক্রিকেটপ্রেমীদের আশা। কিন্তু মনোজরা পারলেন না। ঈশান পোড়েলের মারকুটে ব্যাটিংয়ের সৌজন্যে ইনিংস পরাজয় হয়তো বাঁচল। কিন্তু ৯ উইকেটে রঞ্জির ফাইনালে হেরে গেল বাংলা। রবিবার সকালে বাংলার ইনিংস শেষ হয় ২৪১ রানে। প্রয়োজনীয় ১২ রান এক উইকেট হারিয়ে তুলে নিল বাংলা।
রবিবার দেড় ঘণ্টায় গুটিয়ে গেল বাংলার ইনিংস। এই নিয়ে ফাইনালে দু’বার বাংলার মুখোমুখি হয়ে দু’বারই হারাল সৌরাষ্ট্র। প্রথম বার নিজেদের ঘরের মাঠে। এ বার বিপক্ষের মাঠে। দশম উইকেটে ঈশান ব্যাট করতে নামার আগে ২৫ রানে পিছিয়ে ছিল বাংলা। আর ক’টি বল বাংলা টিকবে, হিসাব কষছিলেন প্রত্যেকে। কিন্তু ঈশান আগ্রাসী ব্যাটিং করে বাংলাকে অন্তত ইনিংস হারের লজ্জা থেকে বাঁচালেন।
রবিবার লড়াই ছিল প্রথম এক ঘণ্টায় সৌরাষ্ট্রের বোলারদের সামলানো। শুরুটা কিন্তু খারাপ হয়নি। জয়দেব উনাদকাট এবং চেতন সাকারিয়াই সৌরাষ্ট্রের বোলিং আক্রমণ শুরু করেছিলেন। সাকারিয়ার প্রথম ওভারে শাহবাজের বিরুদ্ধে একটি আউটের আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু ডিআরএস নিয়েও লাভ হয়নি সৌরাষ্ট্রের। দিনের দ্বিতীয় ওভারেই উনাদকাটকে দু’টি চার মারলেন শাহবাজ। তার পরে মনোজও চেষ্টা করলেন আক্রমণাত্মক হওয়ার।
মনে হচ্ছিল, আগ্রাসী হওয়ার রাস্তায় হেঁটে পাল্টা সৌরাষ্ট্রের বোলারদের উপর চাপ সৃষ্টি করতে চাইছে বাংলা। কোথায় কী! দিনের প্রথম দুটো আউট এমন ভাবে হল, যা প্রমাণ করে দিল, রঞ্জি ফাইনালে জেতার যোগ্যতা এই বাংলার অন্তত নেই। উনাদকাটের বল ফাইন লেগে ঠেলে রান নিতে গিয়েছিলেন শাহবাজ। দ্বিতীয় রানের সময় মনোজ ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়েও শাহবাজকে ফিরে যেতে বললেন। বাংলার অলরাউন্ডার তত ক্ষণে মাঝ পিচ ছাড়িয়ে গিয়েছেন। অর্পিত বাসবড়ার ছোড়া থ্রোয়ে উনাদকাটের রান আউট করতে কোনও অসুবিধা হয়নি।
সৌরাষ্ট্রের দরকার ছিল দু’টি উইকেট। একটি পেয়ে যায় তারা। তবু ক্ষীণ আশা বেঁচে ছিল মনোজের ব্যাটে। সেটাও বেশি ক্ষণ থাকল না। দু’ওভার পরেই মনোজকে তুলে নিলেন উনাদকাট। প্রথম দিনে চোয়ালচাপা লড়াই করে সৌরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাল্টা লড়াই দিয়েছিলেন মনোজ। রবিবার শুরুটাও ভাল করেছিলেন। ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বড় রানের। কিন্তু যে ভাবে আউট হলেন, তা ক্ষমাহীন। অফস্টাম্পের অনেক বাইরে উনাদকাটের বল লাফিয়ে উঠেছিল। অনায়াসে তা ছেড়ে দেওয়া যেত। মনোজ আচমকা ব্যাট ঠেকিয়েই সরিয়ে নিলেন। তত ক্ষণে খোঁচা লেগে গালিতে বিশ্বরাজ জাডেজার হাতে ক্যাচ জমা পড়েছে। মনোজকে হারিয়ে যে ভাবে উচ্ছ্বাস করল সৌরাষ্ট্র, তাতে বোঝাই গেল এই উইকেটটির অপেক্ষাতেই ছিল তারা।
তার পরের ওভারে সাকারিয়া ফেরালেন অভিষেক পোড়েলকে। প্রথম ইনিংসে এই পোড়েলই অর্ধশতরান করে বাংলাকে লজ্জার হাত থেকে বাঁচিয়েছিলেন। এ দিন সাকারিয়ার বল পুল করতে গেলেন। ডিপ স্কোয়্যার লেগে দাঁড়িয়ে থাকা পার্থ ভুটের হাতে বল তালুবন্দি হল। তার পরের ওভারে গেলেন আকাশ দীপ। উনাদকাটের সোজা বলের লাইন মিস্ করলেন। আম্পায়ার আউটের সিদ্ধান্ত ডিআরএস নেন। তাতেও লাভ হয়নি।
মুকেশ কুমার এবং আকাশদীপের শেষ উইকেটের জুটি এ যাত্রায় বাংলার ইনিংসে হার হয়তো বাঁচিয়ে দিল। তবে রঞ্জি ফাইনালে এই হার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, রঞ্জি জিততে গেলে বাংলাকে এখনও অনেক দূর যেতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy