—ফাইল চিত্র
যে পিচে অভিমন্যু ঈশ্বরন, অনুষ্টুপ মজুমদাররা ব্যর্থ হলেন, সেই পিচে শতরান করলেন মনোজ তিওয়ারি। গোটা ইনিংসে মূলত একটি অস্ত্রেই ঘায়েল করলেন মধ্যপ্রদেশের স্পিনারদের। সেটি হল সুইপ শট। বুধবার বেশির ভাগ সময় তাঁকে সুইপ এবং রিভার্স সুইপ মারতে দেখা গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার সকালেও সেই অস্ত্রেই ঘায়েল করতে গিয়েছিলেন সারাংশ জৈনকে। কিন্তু মুহূর্তের ভুলে নিজের উইকেটটাই খোয়ালেন। শতরান করেও দিনের শেষে মনোজই হয়তো খলনায়ক হয়ে যেতে পারেন।
শতরানের পর সারাংশের বলে সুইপ করতে গিয়েছিলেন মনোজ। কিন্তু ব্যাটের উপর দিকে বল লাগে। তাতেই লাফিয়ে ওঠা বল ধরে নেন স্লিপে দাঁড়িয়ে থাকা রজত পাটীদার। ১০২ রানে আউট মনোজ। তিনি জানতেন বৃহস্পতিবার বাংলা তাঁর কাছ থেকে শুধু শতরান নয়, আরও বড় ইনিংস চাইছিল। আউট হওয়ার পর যে হতাশ ভঙ্গিতে প্রবল অনিচ্ছায় মাঠ ছাড়ছিলেন বাংলার ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী, তাতে বোঝা যাচ্ছিল যে তিনি জানেন কাজ অনেকটা বাকি রয়ে গেল। সুইপ মারা কি উচিত হয়নি?
এমনটা মনে করছেন না বাংলার দুই প্রাক্তন ক্রিকেটার। বাংলার প্রাক্তন অধিনায়ক এবং বর্তমানে অনূর্ধ্ব-২৩ দলের কোচ লক্ষ্মীরতন শুক্ল আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, “সুইপ মারতে আত্মবিশ্বাস প্রয়োজন। মনোজের ইনিংসে সেটাই দেখা গিয়েছে। বাংলাকে ৫৪ রানে পাঁচ উইকেট থেকে যে জায়গায় নিয়ে গেল, সেই ইনিংসটাকে কুর্নিশ। দুর্দান্ত লড়াই করল বাংলা দল। সুইপ মারতে গিয়ে আউট হলেও ওটা দেখলে চলবে না। মনোজের লড়াইটা অনেক বড়।”
মধ্যপ্রদেশ দলে দুই স্পিনার। এর মধ্যে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে নজর কাড়া কুমার কার্তিকেয় রঞ্জিতেও দারুণ ছন্দে রয়েছেন। তাঁর প্রথম ওভারেই বাংলা দুই উইকেট হারায়। অন্য স্পিনার সারাংশ জৈন বিপাকে ফেলছিলেন বাংলার ব্যাটারদের। মনোজ দু’জনকেই সুইপ এবং রিভার্স সুইপে ঘায়েল করলেন। তাঁদের বল স্পিন করার আগেই মনোজ এগিয়ে এসে বসে ব্যাট চালালেন। হাঁটুতে চোট নিয়েও মনোজ বার বার সুইপ মারার জন্য বসলেন। ব্যথাকে গুরুত্বই দিলেন না। বাংলার অনূর্ধ্ব-১৯ দলের কোচ দেবাং গাঁধী বললেন, “খুব লড়াকু ইনিংস খেলল মনোজ। ওর এত দিনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাল। ওর আত্মবিশ্বাস রয়েছে বলেই সুইপ, রিভার্স সুইপ মারতে পারল। সেটা মারতে গিয়ে আউট হয়েছে ঠিকই, কিন্তু সেই শটেই তো বুধবার বোলারদের সব কৌশল ব্যর্থ করে দিয়েছিল। অনেক সময় এমনটা হয়ে যায়। যে শট ভাল খেলছি, তাতেই উইকেট চলে যায়।”
বাংলার দুই অভিজ্ঞ প্রাক্তন ক্রিকেটারের মতে বাংলা এখনও লড়াইয়ে রয়েছে। লক্ষ্মী বললেন, “পাঁচ দিনের খেলা। এখনও প্রায় আড়াই দিনের খেলা বাকি। বাংলার এই দলটা লড়াই করতে জানে। ওরা ফিরে আসতেই পারে যে কোনও সময়।” একই মত দেবাংয়েরও। তিনি বললেন, “বাংলার বোলিং আক্রমণ বেশ ভাল। মধ্যপ্রদেশকে তাড়াতাড়ি ফেরাতে পারলে বাংলার সুযোগ থাকবে এই ম্যাচ জিতে নেওয়ার।”
সুযোগ যে রয়েছে মনোজও জানেন। ম্যাচ শুরুর আগে তিনি বলেছিলেন, “আমরা লিড নিতে না পারলেও ম্যাচ থেকে হারিয়ে যাব এমনটা নয়। অনেকটা খেলা বাকি।” কিন্তু মনোজ সুইপ মারতে গিয়ে আউট না হলে বাংলার কাছে সুযোগ থাকত আরও বড় রান তোলার। সেই সুযোগ হারালেন মনোজ। আউট হয়ে মাঠ ছেড়ে বেরোনোর সময় যে রকম হতাশা তাঁর মুখে দেখা গেল, তাতে তিনিও সেটা বুঝতে পেরেছেন বলেই মনে হচ্ছিল।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy