বিরাট কোহলির ভক্ত রাম সেন। —ফাইল চিত্র
বয়স ১৩, কিন্তু পরিণত বোধ এখনই অনেকের থেকে বেশি। অনূর্ধ্ব-১৩ প্রতিযোগিতা যেমন খেলে, তেমনই এখন অনূর্ধ্ব-১৫ প্রতিযোগিতাতেও জায়গা করে নিয়েছে। রাম সেন, খিদিরপুর স্পোর্টিং ক্লাবের ওপেনার সিএবির অম্বর রায় অনূর্ধ্ব-১৩ প্রতিযোগিতায় ১৫১ বলে ৩২২ রান করে। তাতেই চর্চায় চলে এসেছে পুরুষোত্তম অ্যাকাডেমিক স্কুলের ছাত্রটি। যদিও রাম সে সব নিয়ে ভাবছেই না। রেকর্ড গড়েও সে নির্লিপ্ত।
রামের জন্ম ত্রিপুরায় হলেও এখন কলকাতাতেই থাকে সে। রামের বাবা রুপক আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, “আমরা বেশ কয়েক বছর হল ত্রিপুরা ছেড়ে চলে এসেছি। দু’বছর হল আরডিএমপি ইনস্টিটিউট অফ ক্রিকেটে ভর্তি করেছি। সেখানেই এখন শিখছে ও।” ত্রিপুরাতে থাকাকালীন টেনিসও খেলত রাম। এখন যদিও তাঁর লক্ষ্য শুধুই ক্রিকেটার হওয়া। অন্য কোনও দিকে মন দেয় না সে। স্কুল এবং ক্রিকেটের বাইরে অন্য কিছুতে খুব একটা আগ্রহ নেই রামের। সে বলল, “আমার খুব ভাল লাগে বিরাট কোহলির খেলা দেখতে। ইডেনে আমি বিরাটের খেলা দেখেছি। খুব ভাল লেগেছিল।”
ক্রিকেট পাগল ছাত্রকে নিয়ে খুশি তার কোচ রাহুল দেবও। তিনি নিজে রঞ্জি খেলেছেন। জানেন ওই পর্যায় পৌঁছতে হলে কতটা পরিশ্রম করতে হয়। ছাত্রকেও সেই উপদেশ দেন। যদিও তাঁর ছাত্র নিজেই খুব পরিশ্রমী। বাঁশদ্রোণী সম্মিলনী ক্লাবের মাঠে চলে অনুশীলন। রাহুল আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, “ব্যাটিং করতে ওর কোনও কষ্ট নেই। সারা দিন ব্যাট করে যেতে পারে ও। ফিল্ডিং করতে ডাকলে বলে আরও একটু ব্যাটিং করে নিই।”
ডানহাতি রাম ১৫১ বলে ৩২২ রানের ইনিংসে ৫৬টি চার মেরেছেন, ছয় মাত্র আটটি। এর রহস্য ফাঁস করলেন রাহুল। তিনি বললেন, “এখন আইপিএলের যুগ। সেই দেখে ছেলেদের মধ্যে ছক্কা হাঁকানোর প্রবণতা বেশি হয়েছে। এই কারণে আমার অ্যাকাডেমিতে ছয় মারা বন্ধ করে দিয়েছি। এখানে ছোটদের শেখানো হয় বল মাটিতে রেখে খেলতে। সেই অভ্যেসের কারণেই এত চার মেরেছে ও। ভবিষ্যতে এটা খুব কাজে লাগবে ওর।”
রামের বাবা জানালেন, রাহুল ছাড়াও রাহুল ভাণ্ডারি, সৌভিক বসু, মিঠু পাল, অজয় ঘোষের মতো কোচেদের থেকেও শিখছে রাম। স্কুলে অভিষেক পালের কাছে প্রতি বৃহস্পতিবার অনুশীলন করে সে। রুপক বললেন, “সারা দিন ক্রিকেট নিয়েই থাকে। আমি চাই ও ক্রিকেটার হয়ে উঠুক। স্কুলে এখন টেবিল টেনিসও খেলছে।” তবে ছেলের একটি বিষয় নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন বাবা। রুপক বললেন, “রাম ভালবাসে আইসক্রিম খেতে, মিষ্টি খেতে। যে যে জিনিস খেলোয়াড়দের বারণ করা হয় খেতে, ওর সেগুলোর দিকেই নজর। আশা করছি আর একটু বড় হলে বুঝবে।”
কোচ রাহুল তাঁর এই ছাত্রকে আলাদা করে কিছু শেখান, এমন নয়। তিনি বললেন, “আমি কাউকেই আলাদা করে শেখানোর পক্ষে নই। তাতে দলে খেলার মানসিকতা তৈরি হয় না। আমি আমার ছাত্রদের মধ্যে সেটা তৈরি করতে চাই। রাম কোনও কিছু ভুল করলে সেটা অবশ্যই দেখিয়ে দিই, সেটা বাকিদেরও দেখাই। রাম বাকিদের থেকে নিজেকে আলাদা করে নেয় পরিশ্রম দিয়ে। আশা করি সেটা আগামী দিনেও ওর মধ্যে থাকবে। এই বছরই শেষ সুযোগ ওর কাছে অনূর্ধ্ব-১৩ বিভাগে খেলার। পরের বছর থেকে শুধু অনূর্ধ্ব-১৫ খেলতে পারবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy