প্যাট কামিন্সের হাতে বিশ্বকাপ তুলে দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। হাসি নেই রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলির মুখে। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
ভারতীয় দল তখন সবে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বিশ্বকাপ হেরে সাজঘরে ফিরেছে। সকলেই মনমরা। রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিদের দেখে মনে হচ্ছে শরীরগুলো আর চলছে না। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বসে রয়েছেন সকলে। অনেকে বলছেন রোহিত, কোহলিদের সাজঘর দেখে মনে হচ্ছে শ্মশান। এমন সময় সাজঘরে আসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সঙ্গী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ভারতের সব ক্রিকেটারের সঙ্গে হাত মেলান মোদী। রোহিতদের ভাঙাহাটে তাঁদের উজ্জীবিত করার চেষ্টা করেন। দিল্লিতে নিমন্ত্রণও জানান বিরাটদের।
সোমবার মহম্মদ শামি একটি ছবি পোস্ট করেছিলেন। সেখানে দেখা গিয়েছিল বাংলার ক্রিকেটারকে বুকে টেনে নিয়েছিলেন মোদী। মঙ্গলবার প্রকাশ্যে এল ভারতের সাজঘরে মোদীর পুরো ভিডিয়ো। সেখানে তিনি রোহিত এবং বিরাটকে তাঁর দু’পাশে নিয়ে হাত ধরে রয়েছেন। ভারতীয় ক্রিকেটের জয় এবং বীরু এখন রোহিত আর বিরাট। তাঁদের কাঁধে চেপেই এ বারের বিশ্বকাপে এগিয়ে যাচ্ছিল ভারত। সেই দুই ক্রিকেটারের কাঁধে হাত রেখে মোদী বললেন, “তোমরা ১০টা ম্যাচ জিতে এসেছ। একটা ম্যাচে এমন হতেই পারে।”
রোহিতের মুখে তখন হাসি নেই। বিরাট কোনও মতে জোর করে হাসছেন। মাঝেমধ্যে সেটা মিলিয়েও যাচ্ছে। রোহিতের বাঁ হাতটি ছিল পকেটে। মোদী হাত ধরবেন বলে রোহিতের হাতটি তাঁর পকেট থেকে বার করে নেন। এর পর বিরাট এবং রোহিতের হাত ধরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মুখে হাসি আনো। গোটা দেশ তোমাদের দেখছে।” রোহিত, বিরাটের পিঠে চাপড় দেন মোদী।
এর পর ডেকে নিলেন রাহুল দ্রাবিড়কে। কোচের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বলেন, “প্রচুর পরিশ্রম করেছ তোমরা। কিন্তু এমনটা হতেই পারে।” এর পর একে একে রবীন্দ্র জাডেজা, শুভমন গিল, মহম্মদ শামি, যশপ্রীত বুমরাদের সঙ্গে হাত মেলান। বুমরার সঙ্গে গুজরাতি ভাষায় কথা বলেন। শামিকে বুকে টেনে নিয়ে তাঁর এ বারের বিশ্বকাপে ভাল খেলার প্রশংসা করেন। হাত মেলান লোকেশ রাহুল, কুলদীপ যাদব, শ্রেয়স আয়ার, সূর্যকুমার যাদবদের সঙ্গেও। কারও মুখে তখন হাসি নেই। কেউ কেউ মোদীর সঙ্গে হাত মেলানোর সময় সৌজন্য দেখিয়ে জোর করে হাসেন। মোদী চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন সকলকে উজ্জীবিত করার।
সকলের সঙ্গে হাত মেলানোর পরে মোদী বলেন, “এমন হয়েই থাকে। সতীর্থেরা একে অপরকে সাহস দাও, উৎসাহ দাও। উজ্জীবিত করো। তোমরা যখন সময় পাবে, তখন দিল্লিতে আসবে। আমার তরফ থেকে নিমন্ত্রণ রইল। তোমাদের সঙ্গে কথা হবে।”
১২ বছর পর বিশ্বকাপ জয়ের সুযোগ ছিল ভারতের সামনে। দেশের মাটিতে এর আগে কোনও দল দু’বার বিশ্বকাপ জিততে পারেনি। মহেন্দ্র সিংহ ধোনির ভারত ২০১১ সালে যে ট্রফি জিতেছিল, রোহিতের ভারত রবিবার সেটা পারল না। ২০০৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের ফাইনালে হেরেছিল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ভারত। সেই দলে ছিলেন দ্রাবিড়। কোচ হিসাবে এ বারে তাঁর কাছে সুযোগ ছিল সেই হারের বদলা নেওয়ার। কিন্তু এ বারেও পারলেন না দ্রাবিড়। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে হেরেই গেল ভারত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy