সতীর্থদের সঙ্গে উচ্ছ্বাস চার উইকেট নেওয়া স্টার্কের (ডান দিকে)। ছবি: রয়টার্স।
অতিরিক্ত আগ্রাসী ক্রিকেট খেলাই কি ইংল্যান্ডকে ডুবিয়ে দিচ্ছে অ্যাশেজ়ে? পঞ্চম টেস্টের প্রথম দিনের খেলা দেখে তেমনটাই মনে হতে বাধ্য। প্রথমে ব্যাট নিয়ে যেখানে বড় স্কোর খাড়া করার সুযোগ ছিল ইংল্যান্ডের সামনে, সেখানে বাজ়বল (ইংল্যান্ডের কোচ ব্রেন্ডন ম্যাকালাম আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলাচ্ছেন দলকে। যেহেতু তাঁর ডাকনাম ‘বাজ়’, ইংল্যান্ডের ক্রিকেটকে বাজ়বল বলা হচ্ছে।) খেলতে গিয়ে চাপে পড়ে গেল আয়োজকরাই। প্রথম ইনিংসে ২৮৩ রানে অলআউট ইংল্যান্ড। জবাবে অস্ট্রেলিয়া ৬১-১। পিছিয়ে ২২২ রানে। শুক্রবার দ্বিতীয় দিনে বড় রান তোলার সুযোগ থাকছে।
ম্যাঞ্চেস্টার টেস্টের শেষ দিন বৃষ্টিতে ভেস্তে যাওয়ায় অ্যাশেজ় হাতছাড়া হয়েছে ইংরেজদের। এমন অবস্থায়, পঞ্চম টেস্ট জিতে সিরিজ় না খোয়ানোর সুযোগ রয়েছে তাদের সামনে। কিন্তু পরিস্থিতি যা-ই থাকুক না কেন, ইংল্যান্ড যে নিজেদের দর্শন থেকে সরে আসতে রাজি নয় সেটা বোঝা গেল প্রথম দিনেই। ইংল্যান্ড আরও আগে শেষ হয়ে যেতে পারত। মোট পাঁচটি ক্যাচ ফেললেন অস্ট্রেলিয়ার ফিল্ডাররা। একের পর এক উইকেট পড়া সত্ত্বেও প্রতি ওভারে পাঁচের উপর রান রেট ছিল ইংল্যান্ডের। স্টার্ক একটা সময় ওভারে ছয়ের উপর রান দিচ্ছিলেন।
শুরু থেকে ইংল্যান্ডের আগ্রাসী ব্যাটিং দেখা যায়। মিচেল স্টার্ক, জশ হেজলউডরা পাত্তা পাচ্ছিলেন না দুই ইংরেজ ওপেনার বেন ডাকেট এবং জাক ক্রলির সামনে। অধিনায়ক প্যাট কামিন্স নিজে বল করতে এসেও সুবিধা করতে পারেননি। ক্রলি একটু ধীরে খেললেও খুনে মেজাজে ছিলেন ডাকেট। সাত তাড়াতাড়ি মিচেল মার্শকে নিয়ে আসেন কামিন্স। তার সুফল মেলে। লেগ সাইডে বল পুল করতে গিয়েছিলেন। গ্লাভসে লেগে জমা পড়ে উইকেটকিপার অ্যালেক্স ক্যারের হাতে। তিনে মইন আলিকে নেমে আবার ফাটকা খেলার চেষ্টা করেছিল ইংল্যান্ড। তা কাজে লাগেনি। তবে মধ্যাহ্নভোজ পর্যন্ত টেনে দেন।
উল্টো দিকে একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে ইংল্যান্ড। জো রুটও স্বভাববিরোধী শট খেলতে গেলেন। হেজলউডকে স্কোয়্যার কাট করতে গিয়ে বল টেনে আনলেন উইকেটে। তিন উইকেট হারিয়েও ইংল্যান্ডের খেলার মধ্যে কোনও বদল দেখা যায়নি। শুরু থেকেই চালিয়ে খেলতে থাকেন হ্যারি ব্রুক। স্টার্ককে এক ওভারে দু’টি চার এবং একটি ছয় মারেন।
মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পর ব্রুকের ব্যাটিংয়ের ঝাঁজ আরও বাড়ে। উল্টো দিকে মইন কোনও মতে অসি বোলারদের খেলে দিচ্ছিলেন। ব্রুক আর একদিকে চালিয়ে খেলছিলেন। দু’জনে মিলে শতরানের উপর জুটি গড়ে দেন। কিন্তু স্টার্কদের বেশিক্ষণ সামলাতে পারেননি মইন। ৩৪ করে টড মার্ফির বলে ফেরেন সাজঘরে।
চলতি অ্যাশেজ়ে আরও এক বার ব্যর্থ বেন স্টোকস। স্টার্কের বলে ৩ রানে ফিরে যান। কয়েক বলের ব্যবধানে আউট হন জনি বেয়ারস্টোও। ব্রুকের সামনে শতরানের হাতছানি ছিল। কিন্তু অতি আগ্রাসনে ফিরতে হল তাঁকে। ক্রিস ওকস পরের দিকে নেমে ৩৬ বলে ৩৬ না করলে ইংল্যান্ডের রান আড়াইশো পেরোয় না।
জবাবে অস্ট্রেলিয়া শুরুটা খারাপ করেনি। অনেক দিন পরে ওপেন করতে নেমে ছন্দে দেখাচ্ছিল ডেভিড ওয়ার্নারকে। কোনও তাড়াহুড়ো করেননি। ব্যাটের মাঝখান দিয়ে শট মারছিলেন। আচমকাই ওকসের বলে খোঁচা দিয়েছিলেন। স্লিপে ঝাঁপিয়ে ক্যাচ ধরেন ক্রলি।
বাকি সময়টা একদম চিরাচরিত টেস্ট ক্রিকেটের মতো কাটিয়ে দিলেন মার্নাস লাবুশেন (২) এবং উসমান খোয়াজা (২৬)। কোনও তাড়াহুড়ো করেননি। দ্বিতীয় দিন তাঁদের উপরেই ভার বড় রান তোলার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy