বদলে গিয়েছে মধ্যপ্রদেশ। ছবি পিটিআই
দীর্ঘ ২৩ বছর পর রঞ্জি ট্রফির ফাইনালে উঠে চমকে দিয়েছিল মধ্যপ্রদেশ। কোনও দিন ট্রফি না জেতা এই রাজ্যই এ বার চোখে চোখ রেখে লড়াই করছে ৪১ বারের বিজয়ী মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে। তারা সব হিসাব শুধু উল্টেই দেয়নি, তৃতীয় দিনের শেষে মুম্বইয়ের থেকে প্রথম ইনিংসে লিড নেওয়ার দোরগোড়ায় তারা। প্রথম ইনিংসে মুম্বইয়ের ৩৭৪ রানের জবাবে তৃতীয় দিনের শেষে মধ্যপ্রদেশের রান ৩৬৮-৩। মুম্বইকে টপকাতে দরকার আর সাত রান, যা কোনও ব্যাপারই নয়। ফলে জয়ের দিকে এক পা বাড়িয়েই রেখেছে মধ্যপ্রদেশ। যদি ম্যাচের ফয়সালা না হয়, তা হলে প্রথম ইনিংসে এগিয়ে থাকার সুবাদে প্রথম বার রঞ্জি ট্রফি জিতবে মধ্যপ্রদেশ।
অতীতে এই রাজ্য থেকে উঠে এসেছেন একাধিক নামকরা ক্রিকেটার। জাতীয় দলের হয়ে খেলে নিজেদের প্রমাণ করেছেন। এখনও জাতীয় দলে সে রাজ্যের দুই ক্রিকেটার রয়েছেন। আর এক জন দরজায় কড়া নাড়ছেন। তবু রঞ্জির ফাইনালে উঠতে কেন ২৩ বছর লাগল মধ্যপ্রদেশের? কেনই বা এত দিন ধরে তারা এই ট্রফি জিততে পারেনি?
উল্লেখ্য, মধ্যপ্রদেশ রঞ্জি খেলা শুরু করার আগে মধ্য ভারত থেকে খেলত ‘হোলকার’। চার বার রঞ্জি জিতেছে তারা। রানার্স-আপ ছ’বার। সে সময় হোলকারদের বিরুদ্ধে খেলতে মুম্বই ছাড়া বাকি বিপক্ষ ভয়ে কাঁপত। সিকে নায়ডু এবং মুস্তাক আলির মতো ক্রিকেটার এই হোলকার থেকেই উঠে এসেছেন। ১৯৫০-৫১ থেকে মধ্যপ্রদেশ অংশ নিতে শুরু করে রাজ্য সংস্থা হিসাবে। এর কয়েক বছর পর হোলকার দল উঠে গিয়ে মধ্য ভারত নামে পরিচিত হয়। মধ্য ভারত দু’বছর খেলার পর জুড়ে যায় মধ্যপ্রদেশের সঙ্গে।
কত ক্রিকেটারই উঠে এসেছেন এই রাজ্য থেকে। নরেন্দ্র হিরওয়ানি, অময় খুরাশিয়া, রাজেশ চৌহান, জেপি যাদব, নমন ওঝা, দেবেন্দ্র বুন্দেলা, ইশ্বর পান্ডেরা দাপিয়ে খেলেছেন। এখন জাতীয় দলের হয়ে খেলছেন বেঙ্কটেশ আয়ার এবং আবেশ খান। রঞ্জি সেমিফাইনাল এবং ফাইনালে খেলা রজত পাটীদারও যে কোনও দিন জাতীয় দলে সুযোগ পেতে পারেন। প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও এর আগে বার বার কেন ব্যর্থ হয়েছে তারা?
অনেকেই কৃতিত্ব দিচ্ছেন কোচ চন্দ্রকান্ত পণ্ডিতকে। দলকে যে ভাবে নিয়মশৃঙ্খলার বেড়াজালে বেঁধে ফেলেছেন তিনি, সেটাই ফসল ফলাচ্ছে বলে মত অনেকের। তবে আরও কিছু বিষয় রয়েছে এই সাফল্যের পিছনে। এর আগে রঞ্জির নকআউটে গেলেই ক্রিকেটাররা অহেতুক চাপে পড়ে যেতেন। ভাল খেলতে না পারলে দল থেকে বাদ পড়বেন, এমন একটা ভয় কাজ করত। এখনকার ক্রিকেটাররা আইপিএলের সৌজন্যে অনেক বেশি খোলামেলা। খেলতে নামেন ভয়ডরহীন মানসিকতা নিয়ে। যাঁরা আইপিএলে খেলেননি তাঁরাও যাতে কোনও ভয় না পান, সেটা নিশ্চিত করেছেন কোচ পণ্ডিত।
বদল এসেছে শারীরিক ভঙ্গি এবং মানসিকতাতেও। ভয়ে কুঁকড়ে থাকা মনোভাব এই মধ্যপ্রদেশ দলে কারওর মধ্যেই দেখা যাবে না। এ বার তাদের সাহস আরও বেশি। আবেশ এবং বেঙ্কটেশ ভারতীয় দলে রয়েছেন। কুলদীপ সেনের চোট। তা সত্ত্বেও অনামীরা তাঁদের অভাব বুঝতে দেননি। দলে একাধিক বিকল্প তৈরি হয়েছে। ভারসাম্য এসেছে। তিনটি বিভাগেই তারা এখন শক্তিশালী। সেমিফাইনালে দারুণ খেলা হিমাংশু মন্ত্রী রঞ্জি ফাইনালের প্রথম ইনিংসে ভাল খেলতে পারেননি। সেই জায়গায় যশ দুবে এবং শুভম শর্মা শতরান করেছেন। সেটাই অনেকটা এগিয়ে দিয়েছে মধ্যপ্রদেশকে। যে ছন্দে তারা এগোচ্ছে, তাতে বড় কোনও অঘটন না হলে রঞ্জি জয়ের স্বপ্ন এখন থেকেই দেখতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy