Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Virat Kohli

Virat Kohli vs Babar Azam: বিরাট-সিংহাসনে বাবর-রাজ? বিশ্ব ক্রিকেটের সেরা ব্যাটার কি এখন পাক অধিনায়কই

বিরাট কোহলী ১০১টি টেস্ট খেলেছেন। অভিষেক ঘটেছিল ২০১১ সালে। ভারতের হয়ে সাদা বলের ক্রিকেট খেলছেন ২০০৮ সাল থেকে। বাবরের অভিষেক হয় ২০১৫ সালে। প্রথম টেস্ট খেলেন ২০১৬ সালে। এখনও অবধি ৩৯টি টেস্ট খেলেছেন বাবর। বিরাটের ঝুলিতে ২৭টি টেস্ট শতরান। বাবরের সেই সংখ্যাটি ৬। বাবরের থেকে বেশ কিছু বছর বেশি ক্রিকেট খেলার সুবাদে সংখ্যার হিসাবে দুই ব্যাটারের ফারাক অনেকটাই।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২২ ১৭:০৩
Share: Save:

হার না মানা জেদ বটে ছেলেটার। বিপক্ষে মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্স, নেথন লায়নরা থাকলেও তিনি যে ভয় পাওয়ার বান্দা নন তা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন করাচি টেস্টের চতুর্থ দিনেই। পাকিস্তান বনাম অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের চতুর্থ দিনের খেলা শেষে বাবর আজম বলেছিলেন, “ম্যাচ এখনও শেষ হয়নি।” সেটা যে শুধু বলার জন্য বলা নয়, সেটাই বুঝিয়ে দিলেন বুধবার। ১৯৬ রানের ইনিংস খেলে দলের হার বাঁচিয়ে দিলেন বাবর।

বুধবার বাবর বুঝিয়ে দিলেন শুধু সাদা বলের ক্রিকেট নয়, লাল বলের ক্রিকেটেও একই রকম দাপট দেখাতে পারেন তিনি। ২৭ বছরের বাবর কি তবে বিরাট কোহলীর জায়গা নিয়ে নেবেন? বিরাট কোহলীর সিংহাসন দখল করতে চলেছেন বাবর আজম?

বিরাট কোহলী ১০১টি টেস্ট খেলেছেন। অভিষেক ঘটেছিল ২০১১ সালে। ভারতের হয়ে সাদা বলের ক্রিকেট খেলছেন ২০০৮ সাল থেকে। বাবরের অভিষেক হয় ২০১৫ সালে। প্রথম টেস্ট খেলেন ২০১৬ সালে। এখনও অবধি ৩৯টি টেস্ট খেলেছেন বাবর। বিরাটের ঝুলিতে ২৭টি টেস্ট শতরান। বাবরের সেই সংখ্যাটি ৬। বাবরের থেকে বেশ কিছু বছর বেশি ক্রিকেট খেলার সুবাদে সংখ্যার হিসাবে দুই ব্যাটারের ফারাক অনেকটাই।

বিরাটের ড্রাইভ।

বিরাটের ড্রাইভ। —ফাইল চিত্র

আনন্দবাজার অনলাইনকে প্রাক্তন ক্রিকেটার সাবা করিম বললেন, “ক্রিকেটারদের মধ্যে তুলনা করাটা উচিত নয়। প্রত্যেকে আলাদা আলাদা মাঠে, আলাদা পরিস্থিতিতে খেলতে নামে। একেক জনের একেক সময় ভাল যায়, খারাপ যায়। তাই তুলনা করাটা বেশ কঠিন।”

ভারতের প্রাক্তন উইকেটরক্ষক তুলনা করতে না চাইলেও একটি পরিসংখ্যান বিরাট-ভক্তদের হতাশ করবে। ২৩ নভেম্বর, ২০১৯ সালে ইডেনে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে শতরান করার পর থেকে দুই ব্যাটারের পরিসংখ্যান। এই সময়ের মধ্যে আন্তর্জাতিক মঞ্চে সাদা এবং লাল বলের ক্রিকেট মিলিয়ে বিরাট এবং বাবর একই সংখ্যক ম্যাচ (৬৩) খেলেছেন। সেই ৬৩টি ম্যাচে বিরাটের সংগ্রহ ২৪৭৮ রান। বাবর করেছেন ৩২৩০ রান। প্রথম জনের গড় ৩৭.৫৪ এবং দ্বিতীয় জনের ৫২.৯৫। এই সময়ের মধ্যে আটটি শতরান করে ফেলেছেন বাবর। বিরাট-ভক্তরা এখনও দিন গুনছেন ৭১তম শতরানের অপেক্ষায়। অর্থাৎ, গত দু’বছরের হিসেবে কোহলীর পারফরম্যান্সের লেখচিত্রটা যেখানে ক্রমশ নীচে নামছে, সেখানে বাবরেরটা ঊর্ধ্বমুখী।

বাংলার আর এক ক্রিকেটার সৌরাশিস লাহিড়ী বললেন, “এখনই এই দু’জনের তুলনা করা যাবে না। বাবরের সবে শুরু। ও খুব প্রতিভাবান। কিন্তু বিরাট একশোর বেশি টেস্ট খেলে ফেলেছে। ওদের তুলনা করা যাবে না।” বাংলার কোচ অরুণ লাল আবার শুধু বাবর আর বিরাট নন, এই মুহূর্তের সেরাদের মধ্যে স্টিভ স্মিথ, জো রুট, মার্নাস লাবুশানেদের নামও নিচ্ছেন।

বাবরের ড্রাইভ।

বাবরের ড্রাইভ। —ফাইল চিত্র

প্রাক্তন ক্রিকেটার দীপ দাশগুপ্ত এখনই টেস্টে বিরাট-বাবরের তুলনায় না গিয়ে এক দিনের ক্রিকেটের কথা তুলে ধরলেন। তাঁর মতে, এক দিনের ক্রিকেটে এই মুহূর্তে বাবর সেরা। বাংলার প্রাক্তন অধিনায়কের মতে বাবরের সঙ্গে লড়াই হতে পারে রোহিত শর্মার। শেষ ২১টি এক দিনের ম্যাচে বিরাট করেছেন ৭৯১ রান। গড় ৩৭.৬৬। বাবর ৯টি ম্যাচ খেলে করেছেন ৬২৬ রান। তাঁর গড় ৭৮.২৫। রয়েছে তিনটি শতরান। আনন্দবাজার অনলাইনকে দীপ বললেন, “সাদা বলের ক্রিকেটে বাবর এখন ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এক দিনের ক্রিকেটে বোধ হয় এই মুহূর্তে ওই সেরা। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে রান করছে প্রচুর, দলকে জেতাচ্ছে। খুব প্রতিভাবান ক্রিকেটার। তবে লাল বলের ক্রিকেটে এখনও অনেকটা পথ চলা বাকি।”

প্রাক্তন ক্রিকেটাররা একটি ব্যাপারে এক মত। তা হল বাবরের টেকনিক দুর্দান্ত। সাবা করিম বললেন, “আগে মনে হত বাবর শুধু সাদা বলের ক্রিকেটার। কিন্তু এখন ওর মানসিকতা বদলে গিয়েছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যাট করছে ও। খুব ইতিবাচক ব্যাটিং করে বাবর। সাম্প্রতিক ইনিংসগুলো প্রমাণ করে যে বাবর টেস্ট ক্রিকেটেও উন্নতি করেছে। লাল বলের ক্রিকেটে খেলতে গেলে টেকনিক ভাল হতেই হবে, নইলে বিপক্ষ ঠিক দুর্বলতা খুঁজে বার করে ফেলবে।” লাল বলের ক্রিকেটে দীপের পছন্দ জো রুটের খেলা। সেই সঙ্গে স্টিভ স্মিথ, বিরাট কোহলীদের নামও নিচ্ছেন তিনি।

দীপের মন ছুঁয়ে গিয়েছে বাবরের কভার ড্রাইভ। ব্যাক ফুটে গিয়ে পুল করাও ভাল তবে তাঁর মতে বাবরের কভার ড্রাইভটা চোখ জুড়িয়ে দেয়। তিনি বললেন, “অনেকটা বিরাটের মতো ক্রিকেটার বাবর। কভার ড্রাইভটা খুব সুন্দর মারে। হুক, পুলও ভাল মারে। বিশেষ করে পুল শটটা দেখতে ভাল লাগে।” সাবার পছন্দ বাবরের আড়াআড়ি শটগুলি। সাবা বললেন, “আড়াআড়ি শটগুলো দুর্দান্ত মারে বাবর। ব্যাক ফুটে খেলাটাও দেখতে ভাল লাগে। বাবরের খেলা দেখে কখনও মনে হয় না ও খুব জোরে মারছে।”

শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে দরজায় কড়া নাড়ছেন বাবর। দীপ বললেন, “এই তালিকায় কড়া নাড়ছেন বাবর। খুব তাড়াতাড়ি আমাদের ফ্যাভ ফোর (কোহলী, রুট, উইলিয়ামসন, স্মিথ) ছেড়ে ফ্যাভ ফাইভ নিয়ে ভাবতে হবে।” লাল বলের ক্রিকেটে বাবর এখনও অবধি ৩৯টি ম্যাচ খেলেছেন। তাঁর গড় ৪৫.৪৮। বুধবার অধিনায়ক হিসেবে চতুর্থ ইনিংসে সব থেকে বেশি রান (১৯৬) করার রেকর্ড গড়েছেন বাবর। কিন্তু এখনও লাল বলের ক্রিকেটে তাঁকে অনেকটা পথ চলতে হবে বলেই মনে করছেন প্রাক্তনরা।

এই মুহূর্তে দীপের কথা ধার করে বলা যেতেই পারে, “বাবর বিরাটের মতো ক্রিকেটার।” আরও কয়েক বছর সময় লাগবে তাঁর বিরাটের শতরানের সংখ্যায় পৌঁছতে। তফাৎটা ৪৯টি শতরানের। তত দিন সাবার কথা অনুযায়ী, “বিরাট হোক বা বাবর, আমি ব্যাটিংটা উপভোগ করতে চাই।”

অন্য বিষয়গুলি:

Virat Kohli Babar Azam Saba Karim deep dasgupta Arun lal sourasish lahiri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy