অল্প টাকায় ক’জন ক্রিকেটার নিতে পারবে কলকাতা? উঠছে প্রশ্ন। —ফাইল চিত্র
আগামী মাসে আইপিএলের মিনি নিলাম। যেখানে প্রতিটি দলই বেশ কিছু নতুন ক্রিকেটার কিনতে পারবে। দলের ক্রিকেটারদের ছেড়ে কোনও ফ্র্যাঞ্চাইজির হাতে ৪২ কোটি টাকা, কারও হাতে ৩২ কোটি, সেখানে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হাতে মাত্র ৭ কোটি ৫ লক্ষ টাকা। শাহরুখ খানের দল ছেড়ে দিয়েছে একসঙ্গে ১৬ জন ক্রিকেটারকে। নিলামে তারা কিনতে পারবে ১১ জন ক্রিকেটারকে। কিন্তু এত অল্প টাকায় ক’জন ক্রিকেটার নিতে পারবে তারা? উঠছে প্রশ্ন।
মঙ্গলবার ছিল নিলামের আগে নিজেদের দলের ক্রিকেটার ছাড়া এবং নেওয়ার শেষ দিন। সেখানে দেখা যায় কলকাতা ছেড়ে দিয়েছে আমন খান, শিবম মাভি, অভিজিত তোমর, অশোক শর্মা, প্রথম সিংহ, রমেশ কুমার, রাসিখ সালামের মতো ক্রিকেটারকে। দলে রাখা হয়নি আফগানিস্তানের অধিনায়ক মহম্মদ নবিকেও। শ্রীলঙ্কার চামিকা করুণারত্নেকেও দলে রাখল না কলকাতা। আর এই দলে খেলতে দেখা যাবে না অজিঙ্ক রাহানেকে। রাখা হয়নি শেল্ডন জ্যাকসন, বাবা অপরাজিতের মতো ক্রিকেটারকে। নেই প্যাট কামিন্স, অ্যালেক্স হেলস, স্যাম বিলিংস, অ্যারন ফিঞ্চও।
কলকাতা দলে গত বার রাহানেকে খেলানো হয়েছিল ওপেনার হিসাবে। কিন্তু তিনি সফল হতে পারেননি। ফিঞ্চও ছিলেন ওপেনার। ছেড়ে দেওয়া হয়েছে তাঁকেও। দলে বেঙ্কটেশ আয়ার রয়েছেন। নীতীশ রানা থাকলেও তিনি নিয়মিত ওপেনার নন। বেঙ্কটেশ কলকাতা দলে ওপেনার হিসাবে খেললেও ভারতীয় দলে খেলেন মিডল অর্ডারে। দলে নেওয়া হয়েছে আফগানিস্তানের রহমনউল্লাহ গুরবাজকে। তিনি ওপেনারের সমস্যা মেটাতে পারেন। দেশের হয়ে তিনি ওপেন করেন। অর্থাৎ কলকাতার ওপেনার হতে পারেন বেঙ্কটেশ এবং গুরবাজ। তাঁরা ব্যর্থ হলে কেউ নেই। কলকাতাকে এ বারের নিলামে নিতে হবে এই সমস্যা মেটাতে।
কলকাতা নিলামের আগে গুরবাজ ছাড়াও তুলে নিয়েছে শার্দূল ঠাকুর এবং লকি ফার্গুসনকে। ভারতীয় অলরাউন্ডারকে নেওয়ায় কলকাতার শক্তি বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। ফার্গুসনের মতো পেসার প্যাট কামিন্সের অভাব ঢেকে দিতে পারেন। কলকাতা দলে এই মুহূর্তে রয়েছেন ১৪ জন ক্রিকেটার। সেই দলে একমাত্র উইকেটরক্ষক গুরবাজ। দ্বিতীয় কোনও উইকেটরক্ষক নেই দলে। নিলামে তাই দ্বিতীয় উইকেটরক্ষকও প্রয়োজন কলকাতার।
গুরবাজ, বেঙ্কটেশ এবং রানা ছাড়া কলকাতার ব্যাটিং বিভাগ সামলানোর জন্য অধিনায়ক শ্রেয়স আয়ারের সঙ্গে থাকছেন রিঙ্কু সিংহ, অনুকুল রায়রা। দুই অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেল, শার্দূল ঠাকুর রয়েছেন। কিছুটা ব্যাট করতে পারেন সুনীল নারাইনও। এর মধ্যে রিঙ্কু এবং অনুকুল নিয়মিত সুযোগ পান না। কলকাতার ব্যাটিং অর্ডার কেমন হতে পারে? ওপেন করতে পারেন গুরবাজ এবং বেঙ্কটেশ। তিন নম্বরে রানা। চার নম্বরে থাকবেন শ্রেয়স। পাঁচ নম্বরে নামবেন রাসেল। ছ’নম্বরে শার্দূল। সাত নম্বরে নারাইন।
এ বার দেখা যাক বোলিং আক্রমণ। যে সাত জনের নাম ব্যাটিং অর্ডার অনুযায়ী লেখা হয়েছে তাঁদের মধ্যে বল করতে পারেন বেঙ্কটেশ, রানা, রাসেল, শার্দূল এবং নারাইন। এর মধ্যে নারাইন ছাড়া বাকিরা মিডিয়াম পেসার। চার জন ক্রিকেটারকে নেওয়ার জায়গা রয়েছে। সেখানে ভারতীয়দের মধ্যে খেলতে পারেন পেসার উমেশ যাদব এবং স্পিনার বরুণ চক্রবর্তী। যে দল কলকাতার হাতে রয়েছে তাতে একমাত্র উইকেটরক্ষক গুরবাজ বিদেশি। তিনি ছাড়া রাসেল এবং নারাইন দলে থাকলে জায়গা থাকছে আর একজন বিদেশির। সেখানে খেলতে পারেন টিম সাউদি এবং ফার্গুসনের মধ্যে একজন। আরও একজন ক্রিকেটারের জায়গা ফাঁকা থাকছে। সেখানে পেসার খেলালে জায়গা পেতে পারেন হর্ষিত রানা। কিন্তু তিনি নিয়মিত সুযোগ পান না। দলে আর কোনও ক্রিকেটার এই মুহূর্তে নেই।
নিলামে কলকাতা নামবে ৭ কোটি ৫ লক্ষ টাকা নিয়ে। তা দিয়ে ১১ জন ক্রিকেটার কেনা কঠিন। কোচ চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত হয়তো ভাবছেনও না ১১ জন ক্রিকেটার কেনার কথা। তাঁর মাথায় থাকবে কোন কোন জায়গায় ক্রিকেটার প্রয়োজন।
নিলামে কলকাতার নজর থাকতে পারে ওপেনার কেনার দিকে। তা হলে হাতে অন্তত একজন বাড়তি ওপেনার থাকবে তাদের। অবশ্যই কিনতে হবে একজন উইকেটরক্ষককে। ভারতীয় উইকেটরক্ষক পেলে কলকাতার সব থেকে সুবিধা। দলে প্রয়োজন ভারতীয় পেসারও। উমেশ এবং হর্ষিত ছাড়া পেসার নেই দলে। সে ক্ষেত্রে অন্তত তিন জন ক্রিকেটারকে প্রয়োজন কলকাতার। দলে বিদেশির সংখ্যা পাঁচ। আরও তিন জন বিদেশি কিনতে পারে কলকাতা। যদিও হাতে যে পরিমাণ টাকা রয়েছে তা দিয়ে সেটা সম্ভব নাও হতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy