আরও এক বার ধোনির তুখোড় মস্তিষ্কের পরিচয় পাওয়া গেল। আইপিএল-এর আগে চেন্নাই সুপার কিংসের প্রস্তুতি শিবির তিনি চেন্নাই থেকে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। কেন চেন্নাই সুপার কিংসের শিবির সরে গেল? জানা যাচ্ছে, পুরোটাই ধোনির মাথা থেকে বেরিয়েছে।
মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। ফাইল চিত্র
তাঁর তুখোড় ক্রিকেট মস্তিষ্কের কথা সবার জানা। আরও এক বার তার পরিচয় পাওয়া গেল। আইপিএল-এর আগে চেন্নাই সুপার কিংসের প্রস্তুতি শিবির মহেন্দ্র সিংহ ধোনি চেন্নাই থেকে সুরতে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছেন।
কেন চেন্নাই সুপার কিংসের শিবির চেন্নাই থেকে সুরতে সরে গেল? জানা যাচ্ছে, পুরোটাই ধোনির মাথা থেকে বেরিয়েছে। যখনই ঠিক হয়েছে, আইপিএল-এর গ্রুপ পর্বের ম্যাচগুলি মহারাষ্ট্রে হবে, তখনই ধোনি ঠিক করে ফেলেন, সুরতে গিয়ে প্রস্তুতি সারবেন। কারণ, ধোনি খোঁজ নিয়ে দেখেছেন, সেখানকার পিচ যে মাটি দিয়ে তৈরি, মুম্বইয়ের পিচও সেই একই মাটি দিয়ে তৈরি।
সুরতের লালভাই কন্ট্রাক্টর স্টেডিয়াম সম্প্রতি নতুন একটি পিচ তৈরি করেছে। সেই পিচ যে মাটি দিয়ে তৈরি, মুম্বইয়ের উইকেটও সেই একই মাটি দিয়ে তৈরি। ফলে ২ মার্চ থেকে ২০ দিনের যে প্রস্তুতি শিবির হবে ধোনিদের, তা সুরতে হবে। প্রতি বছর চেন্নাইয়ের চিপক স্টেডিয়ামে প্রস্তুতি সারে ধোনির সিএসকে। এ বার তা হচ্ছে না।
অনুশীলন ম্যাচ হোক, বা সেশন, গোটা সিএসকে দলকে জৈব দুর্গে থাকতে হবে। মোট ২৫-৩০ জন ক্রিকেটার, সাপোর্ট স্টাফ, চিকিৎসক, নেট বোলার এবং সিএসকে-র কিছু কর্তা সুরতে চলে যাবেন খুব শিঘ্রই।
ধোনিদের শিবির আয়োজন করতে পেরে উচ্ছ্বসিত সুরত ডিস্ট্রিক্ট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন (এসডিসিএ)। সংস্থার ক্রিকেট সচিব নইমেশ দেশাই সুরত থেকে আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, ‘‘এ রকম একটা সুযোগ আমাদের সামনে এসে যাবে, ভাবতেই পারিনি। আমরা কিছু বড় ম্যাচ আয়োজন করেছি। কিন্তু চার বারের আইপিএল চ্যাম্পিয়ন দলকে অনুশীলনের সুযোগ করে দিতে পারার আলাদা তাৎপর্য আছে।’’
‘বড় ম্যাচ’ বলতে এসডিসিএ-র লালভাই কন্ট্রাক্টর স্টেডিয়ামের ঝুলিতে কিছু রঞ্জি ট্রফি, ইরানি কাপ এবং দলীপ ট্রফির ম্যাচ। আন্তর্জাতিক ম্যাচ বলতে ২০১৯ সালে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা মহিলা দলের টি-টোয়েন্টি সিরিজের পাঁচটি ম্যাচ। কিন্তু নইমেশরা মনে করছেন, ধোনি, ডোয়েন ব্র্যাভো, রবীন্দ্র জাডেজাদের মতো তারকাদের এত দিন ধরে সুরতে রাখার আনন্দই আলাদা।
কত দিন ধোনিরা থাকবেন জানতে চাইলে নইমেশ বললেন, ‘‘২ মার্চ ধোনিদের এখানে আসার কথা। সবাই এক সঙ্গে আসতে পারবেন না। কারণ কারও রঞ্জি ম্যাচ থাকবে, কেউ বিদেশের টি-টোয়েন্টি লিগে খেলবেন। ১০-১২ মার্চের মধ্যে গোটা দলের এখানে চলে আসার কথা। সম্ভবত ২১ বা ২২ মার্চ ওঁরা এখান থেকে সরাসরি মুম্বই চলে যাবেন।’’
ঠিক কবে জানতে পারলেন ধোনিরা দলবল নিয়ে সুরতে আইপিএল-এর প্রস্তুতি সারতে আসবেন? নইমেশ বললেন, ‘‘আইপিএল নিলামের আগে সিএসকে-র কয়েক জন আমাদের এখানকার সুযোগ-সুবিধের ব্যাপারে খোঁজ নিয়েছিলেন। তার পর তাঁরা এসে আমাদের স্টেডিয়াম, জিম, হোটেল দেখে যান। তখনও পরিষ্কার ভাবে কিছু জানতাম না। নিলাম হয়ে যাওয়ার পরেই সিএসকে-র পক্ষ থেকে আমাদের জানিয়ে দেওয়া হয়, এখানেই ওঁরা অনুশীলন শিবির করবেন। আমরা তারপর থেকে প্রস্তুতি শুরু করে দিই।’’
কী প্রস্তুতি নিয়েছেন? নইমেশ বললেন, ‘‘আমাদের এখানে ১০টা উইকেট আছে। তার মধ্যে পাঁচটা লাল, পাঁচটা ঘাসের। এ ছাড়া ফ্লাড লাইট, অত্যাধুনিক জিম, বোলিং মেশিন, সুইমিং পুল, টেনিস কোর্ট, ভলিবল কোর্ট সবই আছে। কোনও অসুবিধে হওয়ার কথা নয়। নতুন করে আমাদের যেটা করতে হয়েছে, সেটা হল জৈব দুর্গের ব্যবস্থা করা। তার জন্য আমরা দুটি হাসপাতালকে নিযুক্ত করেছি। তাদের বিশেষজ্ঞ দল হোটেল এবং জৈব দুর্গের ব্যবস্থা করছে। তা ছাড়া অনুশীলনের সময় কারও চোট-আঘাত লাগলে সঙ্গে সঙ্গে যাতে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যায়, তার জন্য থাকছে দু’টি অ্যাম্বুল্যান্সও। ওই তিন সপ্তাহ সিএসকে-র সদস্যরা ছাড়া আর কাউকে মাঠে ঢুকতে দেওয়া হবে না। সাধারণ দর্শক তো বটেই, এমনকী আমরা আমাদের সদস্যদেরও এই ক’টা দিন মাঠে ঢুকতে দেব না। কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সিএসকে যে হেতু নেট বোলারও সঙ্গে করে নিয়ে আসছে, তাই সেটাও আমাদের দিতে হচ্ছে না।’’
এসডিসিএ প্রবল আশাবাদী, তারা ধোনির দলের জন্য সব রকম সুযোগ-সুবিধের ব্যবস্থা করে দেবে। তারা আত্মবিশ্বাসী, এর পর থেকে সিএসকে চেন্নাই ছেড়ে সুরতেই প্রত্যেক বছর আইপিএল-এর প্রস্তুতি শিবির করবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy