আবার একটি আইসিসি ট্রফির ফাইনাল। তিন বছরে তিন বার। রবিবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল খেলতে নামবে ভারত। কিন্তু এই ম্যাচ ফাইনাল ভেবে খেলতে চান না শুভমন গিল। দু’বছর আগের বিশ্বকাপ ফাইনালের ভুল থেকে শিক্ষা নিতে চান তিনি।
নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে নামার আগের দিন সাংবাদিক বৈঠকে শুভমনকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ফাইনালের চাপ কী ভাবে সামলাবেন তিনি। জবাবে ভারতের সহ-অধিনায়ক বলেন, “বড় ম্যাচে চাপ অনেক বেশি থাকে। সেই চাপ যে দল কাটাতে পারে তারা জেতে। অতীতে আমরা ওয়েস্ট ইন্ডিজ় বা অস্ট্রেলিয়াকে সেটা করতে দেখেছি। জানি বলা যত সহজ, করা তত নয়। কিন্তু আমরা ফাইনাল ভেবে খেলতে চাই না। ফাইনালের চাপ আগে থেকে বার করে দিতে চাই। বিরাট ভাইকে দেখেছি, কী ভাবে চাপের মধ্যে মাথা ঠান্ডা করে খেলে। আমরাও সেটা করতে চাই।”
দু’বছর আগে দেশের মাটিতে এক দিনের বিশ্বকাপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারতে হয়েছিল ভারতকে। সেই দলে ছিলেন শুভমন। স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল দলের। সেই ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে চান ভারতীয় ক্রিকেটার। সেই ম্যাচের ভুল শুধরে নিতে চান তিনি। শুভমন বলেন, “দেশের জার্সিতে এটা আমার দ্বিতীয় আইসিসি ফাইনাল। আগেরটা হেরেছিলাম। সে বারও আমরা ভাল খেলছিলাম। কিন্তু ফাইনালের চাপ সামলাতে পারিনি। তবে গত দু’বছরে আমার অভিজ্ঞতা বেড়েছে। কী ভাবে চাপ সামলাতে হয় তা শিখেছি। সেই ম্যাচ যা যা ভুল করেছিলাম তা এ বার করব না। সেই সব ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে তা কাজে লাগাতে চাই।”
আরও বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন শুভমন। তার মধ্যে যেমন তাঁর নিজের ব্যাটিং রয়েছে, তেমনই রয়েছে ফাইনালের আবহাওয়া ও পিচের প্রসঙ্গও।
রোহিত-কোহলির সঙ্গে ব্যাটিংয়ের অভিজ্ঞতা
রোহিত ও কোহলির সঙ্গে টপ অর্ডারে ব্যাট করতে হয় শুভমনকে। তাঁদের কাছে অনেক কিছু শেখেন তিনি। শুভমন বলেন, “রোহিত ভাই সাদা বলের ক্রিকেটের সেরা ওপেনারদের এক জন। আর কোহলি ভাই তো এক দিনের ক্রিকেটের সর্বকালের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার। এই দু’জনের কাছ থেকে প্রতি দিন অনেক কিছু শিখি।”
সহ-অধিনায়ক হিসাবে ভূমিকা কী?
শুভমনকে সহ-অধিনায়ক করে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বুঝিয়ে দিয়েছে, ভবিষ্যতের অধিনায়ক ভাবা হচ্ছে তাঁকে। এই দলে শুভমনের ভূমিকা কী? জবাবে তিনি বলেন, “চাপের মধ্যে কী ভাবে দলকে চালাতে হয় সেটা শিখছি। আমার কাজ হচ্ছে, বোলারদের খারাপ সময়ে ওদের সঙ্গে কথা বলা। ওরা কী ভাবছে সেটা জানা। অনেক সময় চাপের মধ্যে নিজের শক্তি অনেকে ভুলে যায়। সেটা ওদের মনে করিয়ে দিই।”
আইসিসি ট্রফি জেতার অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে
গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছে ভারত। সেই অভিজ্ঞতা এ বার কাজে লাগবে বলে জানিয়েছেন শুভমন। তিনি বলেন, “এক বার ট্রফি জেতার স্বাদ পেলে ফাইনালের চাপ অনেকটা কমে যায়। তখন ফাইনাল জেতার মরিয়া চেষ্টা করতে গিয়ে অতিরিক্ত চাপ নেওয়ার দরকার পড়ে না। আমি বলছি না যে আমাদের খিদে নেই। কিন্তু আমরা বেশি চাপ নিচ্ছি না।”
আরও পড়ুন:
ফাইনালের পিচ ও আবহাওয়ার ভূমিকা
ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ যে পিচে হয়েছিল, সেই পিচেই হবে ফাইনাল। তবে আবহাওয়ার একটু মেঘলা। এই পরিস্থিতিতে কি পিচের চরিত্র বদলাতে পারে? শুভমন বলেন, “পিচের চরিত্র বিশেষ বদলাবে না। এখানকার পিচের তুলনায় পাকিস্তানের পিচ আলাদা। এখানে কোনও ম্যাচে ৩০০ রান হচ্ছে না। পিচ কিছুটা মন্থর থাকছে। তেমনই থাকবে।”
ফাইনালের প্রস্তুতি কেমন?
ফাইনালে বড় দায়িত্ব থাকবে শুভমনের উপর। তিনি ওপেন করেন। সুতরাং দলকে ভাল শুরু দেওয়ার দায়িত্ব তাঁর উপর থাকবে। তার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন তিনি। শুভমন বলেন, “প্রতি ম্যাচে ৫০, ১০০ করা যায় না। তবে দলের জন্য খেলতে চাই। আমি ম্যাচের কথা ভেবেই নেটে ব্যাট করি। তাতে ম্যাচের সময় সুবিধা হয়।”
রোহিতের টস হারে কি চিন্তিত ভারত?
চলতি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে একটি ম্যাচেও টস জেতেননি রোহিত। তাতে অবশ্য দলের জিততে কোনও সমস্যা হচ্ছে না। রোহিতের এই টস হার নিয়ে কি দলের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে? জবাবে শুভমন বলেন, “প্রত্যেক ব্যাটার মানসিক ভাবে ব্যাট করার জন্যই প্রস্তুত থাকে। তেমনই প্রত্যেক বোলার বল করার জন্য তৈরি থাকে। তাই টস হারার উপর কিছু নির্ভর করে না। হ্যাঁ, আমরা রোহিত ভাইকে টস হারা নিয়ে বলি। কিন্তু সবই মজার ছলে।”