শ্রীলঙ্কাকে হারানোর পর উচ্ছ্বাস ভারতীয় ক্রিকেটারদের। ছবি: টুইটার।
শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে জিতল ভারত। রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে হার্দিক পাণ্ড্যরা জিতলেন রানে ২ রানে।মঙ্গলবার ওয়াংখেড়েতে প্রথমে ব্যাট করে ৫ উইকেটে ১৬২ রান করে ভারত। জবাবে শ্রীলঙ্কার ইনিংস শেষ হল ১৬০ রানে। তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ়ে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ভারত।
টস হেরে ভারতকে ব্যাট করতে পাঠিয়ে ছিলেন শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক দাসুন শনকা। প্রথম ব্যাট করতে হওয়ায় অখুশি হননি ভারতীয় দলের অধিনায়ক হার্দিক পাণ্ড্য। শুরুটা আগ্রাসী মেজাজেই করেছিলেন দুই ওপেনার ঈশান কিশন এবং শুভমন গিল। যদিও পর পর তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় ভারত। মঙ্গলবার টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হওয়া শুভমন রান পেলেন না। ৭ রান করে সাজঘরে ফিরলেন তিনি। ভরসা দিতে পারলেন না তিন নম্বরে নামা সূর্যকুমার যাদব (৭) এবং চার নম্বরে নামা সঞ্জু স্যামসনও (৫)। অতিরিক্ত আগ্রাসী হতে গিয়ে উইকেট ছুড়ে দিলেন ভারতীয় ব্যাটাররা। ঠকে গেলেন চেনা ওয়াংখেড়ের বাউন্সে। ৪৬ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যান হার্দিকরা। শনাকা ঘন ঘন বোলার পরিবর্তন করে ভারতীয় ব্যাটারদের থিতু হওয়ায়র সুযোগ দিলেন না।
দলকে ল়ড়াইয়ে ফেরাতে ঈশানের সঙ্গে জুটি বাঁধেন হার্দিক। কিন্তু সেই চেষ্টাও তেমন সফল হল না। জুটিতে ৩১ রান ওঠার পর আউট হলেন ঈশান। ২৯ বলে ৩৭ রান করলেন তিনটি চার এবং দু’টি ছয়ের সাহায্যে। হার্দিকও বড় রান করতে পারলেন না। চারটি বাউন্ডারির সাহায্যে ২৭ বলে ২৯ রান এল ভারতীয় দলের অধিনায়কের ব্যাট থেকে। শ্রীলঙ্কার বোলিংয়ের সামনে নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারাল ভারত। ফলে বড় ইনিংসের জন্য প্রয়োজনীয় জুটিই তৈরি হল না। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের ইনিংসের চেহারা অনেকটাই নির্ভর করত বিরাট কোহলি এবং সূর্যকুমারের উপর। এই সিরিজ়ে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে কোহলিকে। মঙ্গলবার রান পেলেন না সূর্যকুমার। ফলত হতশ্রী দেখাল ভারতীয় দলের ব্যাটিং লাইনআপকে। ইনিংসের প্রথম ওভারে ঈশানের ব্যাটিং দেখে বড় রানের আশা তৈরি হলেও বাস্তবে তেমন কিছু হল না। বিক্ষিপ্ত ভাবে ভারতীয় ব্যাটাররা বড় শট নিলেও শ্রীলঙ্কার বোলারদের উপর আধিপত্য তৈরি করতে পারলেন না কখনই।
শেষ দিকে কিছুটা চেষ্টা করলেন দীপক হুডা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মাত্র একটা ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে সেই হুডার ব্যাটই ভারতীয় ইনিংসকে পৌঁছে দিল ভদ্রস্থ জায়গায়। তাঁকে ভরসা দিলেন অক্ষর পটেল। ষষ্ঠ উইকেটে তাঁদের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে উঠল ৩৫ বলে ৬৮ রান। হুডা একটি চার এবং চারটি ছক্কার সাহায্যে অপরাজিত থাকলেন ২৩ বলে ৪১ রানে। অক্ষর তিনটি বাউন্ডারি, একটি ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে অপরাজিত থাকলেন ২০ বলে ৩১ রান করে। শেষ বেলায় তাঁদের দাপটে ভারতের ইনিংস শেষ হল ৫ উইকেটে ১৬২ রানে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ না পাওয়া হুডাই দলকে পৌঁছে দিলেন লড়াই করার মতো জায়গায়।
শ্রীলঙ্কার সফলতম বোলার ধনঞ্জয় ডি সিলভা ৬ রানে ১ উইকেট নিলেন। এ ছাড়া ওয়ানিন্দু হাসরঙ্গ ২২ রানে ১ উইকেট, চামিকা করুণারত্নে ২২ রানে ১ উইকেট, মাহিশ থিকশানা ২৯ রানে ১ উইকেট এবং দিলশান মধুশঙ্ক ৩৫ রানে ১ উইকেট নিলেন।
জবাবে ইনিংসের শুরুটা ভাল হল না শ্রীলঙ্কারও। সফরকারীদের শুরুতেই জোড়া ধাক্কা দিলেন এই ম্যাচেই টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিকে অভিষেক হওয়া শিবম মাভি। ওপেনার পাথুম নিশঙ্ক (১) এবং ডি সিলভাকে (৮) সাজঘরে ফেরালেন প্রথম ২ ওভারেই। কলকাতা নাইটা রাইডার্সের প্রাক্তন অলরাউন্ডারের দাপটে মাত্র ২৪ রানেই ২ উইকেট হারান শনাকারা। শুরুতে ভাল বল করলেন হার্দিকও। তিনিই দলের বোলিং আক্রমণ শুরু করেন। উইকেট না পেলেও প্রথম স্পেলে ৩ ওভারে দেন ১২ রান। নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারাল শ্রীলঙ্কাও। ওপেনার কুশল মেন্ডিস করলেন ২৫ বলে ২৮ রান। চিরথ আশালঙ্কা (১২), ভানুকা রাজাপক্ষরা (১০) দলের ইনিংসকে নির্ভরতা দিতে পারলেন না। শেষ দিকে ঝড় তুললেন অধিনায়ক শনকা এবং হাসরঙ্গ। সহ-অধিনায়ক হাসরঙ্গ ১০ বলে ২১ রান করে আউট হওয়ার পরেও চেষ্টা করেছিলেন শনকা। কিন্তু ২৭ বলে ৪৫ রান করে উমরানের বলে চহালের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। হারসঙ্গ মারেন একটি চার এবং দু’টি ছয়। শনকার ব্যাট থেকে এল তিনটি করে চার এবং ছক্কা। তাতেও জয় অধরা থাকল।
শেষ দিকে মরিয়া চেষ্টা করেছিলেন চামিকা করুণারত্নে। দু’টি ছয়ের সাহায্যে ১৬ বলে ২৩ রান করে অপরাজিত থাকলেন তিনি। উইকেটের অন্য প্রান্তে কারও থেকেই তেমন সাহায্য পেলেন না। ইনিংসের শেষ বলে ১৬০ রানের মাথায় দশম উইকেট হারিয়ে ম্যাচ হারল সফরকারীরা।
ভারতের সফলতম বোলার শিবম শেষ পর্যন্ত ২২ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিলেন। ২৭ রানে ২ উইকেট আর এক জোরে বোলার উমরানের। ৪১ রান দিয়ে ২ উইকেট হর্ষল পটেলের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy