জ়িম্বাবোয়ের উইকেট পড়ার পরে ভারতীয় ক্রিকেটারদের উল্লাস। ছবি: এক্স।
২৪ ঘণ্টায় বদলে গেল ছবিটা। শনিবার যে পিচে ভারতের ব্যাটারেরা ১১৬ রান তাড়া করতে পারেননি, রবিবার সেই মাঠেই ২৩৪ রান করলেন তাঁরা। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি কেরিয়ারে নিজের দ্বিতীয় ম্যাচে শতরান করলেন অভিষেক শর্মা। ৭৭ রান করলেন রুতুরাজ গায়কোয়াড়। ৪৮ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেললেন রিঙ্কু সিংহ। দাপট দেখালেন ভারতের বোলারেরাও। জ়িম্বাবোয়ের ব্যাটারেরা বুঝতেই পারলেন না, কী ভাবে রান তাড়া করবেন। ১০০ রানের বিশাল ব্যবধানে দ্বিতীয় ম্যাচ জিতে সিরিজ়ে সমতা ফেরাল ভারত।
প্রথম ম্যাচে ব্যাটিং ব্যর্থতায় হারতে হয়েছিল ভারতকে। তাই দ্বিতীয় ম্যাচে পেসার খলিল আহমেদের বদলে এক অতিরিক্ত ব্যাটার সাই সুদর্শনকে খেলায় ভারত। টি-টোয়েন্টি অভিষেকে ব্যাট করার সুযোগই পেলেন না সুদর্শন। কারণ, ভারতের টপ অর্ডারের দাপট। অধিনায়ক শুভমন এই ম্যাচে রান পাননি। ২ রানের মাথায় ব্লেসিং মুজ়ারাবানির বলে আউট হন তিনি। শুভমন আউট হওয়ার পরে মনে হয়েছিল, আগের দিনের হালই হবে না তো। সেটা হতে দিলেন না অভিষেক ও রুতুরাজ। দায়িত্ব ও আগ্রাসন মিলিয়ে কী ভাবে খেলতে হয় দেখালেন। মনে হল, প্রথম ম্যাচে হারের লজ্জার শোধ দ্বিতীয় ম্যাচে উসুল করতে নেমেছেন তাঁরা।
নিজের অভিষেক ম্যাচে শুরুতেই বড় শট মারতে গিয়ে আউট হয়েছিলেন অভিষেক। তার পরেও নিজের খেলার ধরন বদলাননি তিনি। দ্বিতীয় ম্যাচেও শুরু থেকে আগ্রাসী ব্যাটিং করতে থাকেন তিনি। পাওয়ার প্লে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেন। অভিষেক হাত খুললেও রুতুরাজের ব্যাটে-বলে ঠিক মতো লাগছিল না। বড় শট খেলতে না পারলেও উইকেট দিয়ে আসেননি তিনি। অভিষেকের সঙ্গে মিলে জুটি বাঁধেন।
যত সময় গড়াল তত হাত খুললেন অভিষেক। উইকেটের চার দিকে শট খেলছিলেন তিনি। ৩৩ বলে অর্ধশতরান করেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। তার পরে প্রথম গিয়ার থেকে সরাসরি পঞ্চম গিয়ারে চলে গেলেন অভিষেক। ডিয়ন মেয়ার্সের এক ওভারে নিলেন ২৮ রান। সেই শুরু। মাত্র ১৩ বলে ৫০ থেকে ১০০ রানে পৌঁছলেন অভিষেক। পর পর তিন বলে তিনটি ছক্কা মেরে মাত্র ৪৬ বলে শতরান করলেন তিনি। ভারতের হয়ে অভিষেকের পরে সবচেয়ে কম ইনিংসে শতরান করলেন আইপিএলে নজরকাড়া ব্যাটার। ৭টি চার ও ৮টি ছক্কা মারেন তিনি। যদিও পরের বলেই আবার ছক্কা মারতে গিয়ে আউট হন অভিষেক। দু’জনের মধ্যে ১৩৭ রানের জুটি হয়।
অভিষেক যত ক্ষণ ছিলেন, তত ক্ষণ ধীরে খেলছিলেন রুতুরাজ। অভিষেক আউট হওয়ার পরে তিনিও হাত খুললেন। অর্ধশতরান করলেন। তার পরে রুতুরাজেরও রান তোলার গতি বাড়ল। তবে তিনি ছক্কার থেকে বেশি চার মারছিলেন। আগের ম্যাচে রান না পাওয়া রিঙ্কুও এই ম্যাচে রান করলেন। দেখে মনে হচ্ছিল, ২৪ ঘণ্টায় বুঝি পিচ পুরোটাই বদলে গিয়েছে। তৃতীয় উইকেটে ৮৭ রানের জুটি বাঁধলেন তাঁরা।
দুই ব্যাটারেরা দাপটে ২০ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ২৩৪ রান করল ভারত। রুতুরাজ ৪৭ বলে ৭৭ ও রিঙ্কু ২২ বলে ৪৮ রান করে অপরাজিত থাকেন। রুতুরাজের ১১টি চার ও ১টি ছক্কার পাশাপাশি রিঙ্কু ২টি চার ও ৫টি ছক্কা মারেন। জ়িম্বাবোয়ের কোনও বোলারকে রেয়াত করেননি তাঁরা। শেষ ১০ ওভারে ১৬০ রান করে ভারত। সেখানেই জ়িম্বাবোয়ের ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যায় খেলা।
রান তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই ধাক্কা খায় জ়িম্বাবোয়ে। প্রথম ম্যাচের পরে দ্বিতীয় ম্যাচেও ইনোসেন্ট কাইয়াকে বোল্ড করেন মুকেশ কুমার। যদিও পরের ওভারে চালে ভুল করে বসেন শুভমন। অভিষেককে বলে আনেন তিনি। সেই ওভারে ১৯ রান নেন ব্রায়ান বেনেট। আক্রমণাত্মক শট খেলছিলেন তিনি। তৃতীয় ওভারে আসেন মুকেশ। তাঁকেও দু’টি ছক্কা মারেন বেনেট। কিন্তু শেষ পর্যন্ত লড়াইয়ে যেতেন মুকেশ। শেষ বলে বেনেটকে ২৬ রানের মাথায় বোল্ড করেন তিনি।
পাওয়ার প্লে-র মধ্যে আরও দুই উইকেট হারায় জ়িম্বাবোয়ে। আবেশ খান নিজের প্রথম ওভারেই জোড়া উইকেট নেন। মেয়ার্স ও অধিনায়ক সিকন্দর রাজাকে আউট করেন তিনি। ৪৬ রানে ৪ উইকেট পড়ে যায় জ়িম্বাবোয়ের। খেলা তত ক্ষণে অবশ্য তাদের হাত থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল।
পঞ্চম উইকেটে কিছুটা লড়াই করার চেষ্টা করেন ওয়েসলি মাধেভেরে ও জোনাথন ক্যাম্পবেল। কিন্তু রান তোলার গতি কমে গিয়েছিল। বাধ্য হয়ে ওয়াশিংটন সুন্দরের বলে বড় শট মারতে গিয়ে আউট হল ক্যাম্পবেল। ৭২ রানে জ়িম্বাবোয়ের অর্ধেক দল সাজঘরে ফিরে যায়।
নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট পড়ছিল। জ়িম্বাবোয়ের হার ছিল সময়ের অপেক্ষা। দেখার ছিল যে তারা পুরো ২০ ওভার ব্যাট করতে পারে কি না। আগের ম্যাচে ৯০ রানে ৯ উইকেট পড়ার পরেও জ়িম্বাবোয়েকে অল আউট করতে পারেননি ভারতের বোলারেরা। এই ম্যাচে অবশ্য ১৮.৪ ওভারে ১৩৪ রানে অল আউট হয়ে গেল জ়িম্বাবোয়ে। ১০০ রানে হেরে মাঠ ছাড়ল তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy