বেঙ্গালুরুতে জিতে উল্লাস (বাঁ দিক থেকে) রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, লোকেশ রাহুলদের। ছবি: পিটিআই
বেঙ্গালুরুতে সাত ঘণ্টার অনুশীলন সেরে নিল ভারতীয় দল। প্রথমে ৫০ ওভার ব্যাটিং। সেখানে একে একে দলের প্রথম পাঁচ ব্যাটার নামলেন। দু’জন শতরান করলেন। তিন জন অর্ধশতরান। পরে বোলিং অনুশীলন সারলেন রোহিত শর্মারা। দলের ন’জন হাত ঘোরালেন। বুধবার বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে নামার আগে ভালই অনুশীলন হল ভারতীয় দলের। নেদারল্যান্ডসকে ১৬০ রানে হারিয়ে রাউন্ড রবিন পর্যায়ে ন’টি ম্যাচের ন’টিতেই জিতল ভারত। দীপাবলির রোশনাই কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিলেন রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিরা।
বেঙ্গালুরুতে নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে টস জিতে রোহিত যখনই প্রথমে ব্যাট নিয়েছিলেন তখনই বোঝা গিয়েছিল, সেমিফাইনালের আগে ব্যাটারদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে রাখতে চাইছেন তাঁরা। সেটাই হল। প্রথম ওভার থেকেই হাত খুলে খেলা শুরু করেন রোহিত ও শুভমন গিল। নেদারল্যান্ডসের বোলারেরা বুঝতে পারছিলেন না কোথায় বল করবেন। একের পর এক বল উড়ে গিয়ে পড়ছিল চিন্নাস্বামীর গ্যালারিতে। শুভমনের একটি ছক্কা তো স্টেডিয়ামের ছাদে গিয়ে পড়ে।
৩০ বলে অর্ধশতরান করেন শুভমন। যদিও পরের বলেই ছক্কা মারতে গিয়ে আউট হন তিনি। অর্ধশতরান করেন রোহিতও। ৬১ রান করে বড় শট খেলতে গিয়ে আউট হন ভারত অধিনায়ক। বিরাট শুরুতে একটু সমস্যায় পড়েন। ঠিকমতো ব্যাটে-বলে হচ্ছিল না। কিন্তু হাল ছাড়েননি তিনি। কয়েকটি বল খেলার পরে কোহলির হাত জমে যায়। তার পরেই হাত খুলে খেলা শুরু করেন তিনি। আরও একটি অর্ধশতরান করেন বিরাট। দেখে মনে হচ্ছিল, ৫০তম শতরান করেই মাঠ ছাড়বেন। কিন্তু ৫১ রান করে বোল্ড হয়ে যান কোহলি।
বেঙ্গালুরুতে জ্বলে উঠল ভারতের মিডল অর্ডার। শ্রেয়স আয়ার ও লোকেশ রাহুলের মধ্যে ২০০ রানের জুটি হল। চিন্নাস্বামীর ছোট মাঠ কাজে লাগিয়ে বড় শট খেললেন দুই ব্যাটার। আগের দুই ম্যাচে রান করলেও শতরান করতে পারেননি শ্রেয়স। এই ম্যাচে বিশ্বকাপে নিজের প্রথম শতরান করলেন তিনি। ছক্কা মেরে শতরান করলেন রাহুলও। চলতি বিশ্বকাপে এটি তাঁর প্রথম শতরান। শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভারে ৪ উইকেটে ৪১০ রান করে ভারত। ১০২ রান করে আউট হন রাহুল। শ্রেয়স ১২৮ রানে অপরাজিত থাকেন। এক দিনের ক্রিকেটে বিশ্বরেকর্ড করলেন রোহিতেরা। এই প্রথম কোনও ম্যাচে প্রথম পাঁচ ব্যাটারের মধ্যে দু’জন শতরান ও তিন জন অর্ধশতরান করলেন।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ওয়েসলি বারেসির উইকেট হারায় নেদারল্যান্ডস। তাঁকে আউট করেন মহম্মদ সিরাজ। কিন্তু দ্বিতীয় উইকেটে ভাল জুটি বাঁধেন ম্যাক্স ও’ডয়েড ও কলিন একারম্যান। পেসারদের বিরুদ্ধে ভাল খেলছিলেন তাঁরা। ফলে তাড়াতাড়ি স্পিনারদের বলে আনেন রোহিত। কুলদীপ ফেরান একারম্যানকে। ও’ডয়েডের উইকেট নেন রবীন্দ্র জাডেজা। মাঝের ওভারে কোহলির হাতে বল তুলে দেন রোহিত। নেদারল্যান্ডসের অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডসকে ফেরান তিনি। উইকেট নিয়ে নিজেই অবাক হয়ে যান কোহলি। সতীর্থেরাও হাসতে থাকেন।
শুধু বিরাট নয়, শুভমন, সূর্যকুমারের হাতেও বল তুলে দেন রোহিত। সবাই হাত ঘোরান। যত ম্যাচ গড়াচ্ছিল তত খেলা থেকে দূরে চলে যাচ্ছিল নেদারল্যান্ডস। পার্ট টাইম বোলারদের বিরুদ্ধে কয়েকটি বড় শট মারেন নেদারল্যান্ডসের ব্যাটারেরা। কিন্তু তাতে বিশেষ লাভ হয়নি তাঁদের। নেদারল্যান্ডসের খেলা দেখে বোঝা যাচ্ছিল পুরো ৫০ ওভার ব্যাট করার মানসিকতা নিয়ে খেলতে নেমেছেন তাঁরা।
কিন্তু পুরো ৫০ ওভার খেলতে পারেনি নেদারল্যান্ডস। শেষ পর্যন্ত ৪৭.৫ ওভারে ২৫০ রানে অল আউট হয়ে যায় তারা। শেষ উইকেট নেন রোহিত। ১৬০ রানে ম্যাচ জেতে ভারত। ভারতীয় বোলারদের মধ্যে বুমরা, সিরাজ, কুলদীপ ও জাডেজা ২টি করে উইকেট নেন। ১টি করে উইকেট নেন রোহিত ও বিরাট। চলতি বিশ্বকাপে এই প্রথম কোনও ম্যাচে উইকেট পেলেন না শামি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy