শেষ বলে জয় এনে দিলেন রিঙ্কু। —ফাইল চিত্র।
বিশ্বকাপ ফাইনালে হারের পর অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজ়ের প্রথম ম্যাচেও বর্ণহীন ভারতীয় দলের বোলিং। প্রথমে ব্যাট করে জশ ইংলিসের আগ্রাসী শতরানের সুবাদে ম্যাথু ওয়েডের দল করে ৩ উইকেটে ২০৮ রান। যদিও তাঁর শতরান কাজে এল না ভারতীয় ব্যাটারদের পাল্টা দাপটে। অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব, রিঙ্কু সিংহদের লড়াই টান টান ম্যাচে ভারতকে জয় এনে দিল ২ উইকেটে । ১ বল বাকি থাকতে ৮ উইকেটে ২০৯ রান তুলে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ়ে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ভারত। যদিও ম্যাচের শেষ ওভারে ভারতীয়দের দায়িত্বজ্ঞানহীন ক্রিকেট উদ্বেগে রাখবে কোচ ভিভিএস লক্ষ্মণকে।
জয়ের জন্য ২০৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই রুতুরাজ গায়কোয়াড়ের উইকেট হারায় ভারত। কোনও বল খেলার আগেই রান হন তিনি। তৃতীয় ভারতীয় হিসাবে ‘ডায়মন্ড ডাক’ করলেন রুতুরাজ। এর আগে এমন লজ্জার নজির রয়েছে অমিত মিশ্র এবং যশপ্রীত বুমরার। অন্য ওপেনার যশস্বী জয়সওয়ালও বড় রান পেলেন না। ৮ বলে ২টি চার এবং ২টি ছয়ের সাহায্যে ২১ রান করে আউট হলেন ম্যাথু শর্টের বলে। ২২ রানে ২ উইকেট হারানোর পর ভারতের ইনিংসের হাল ধরেন ঈশান কিশন এবং সূর্যকুমার যাদব।
বিশ্বকাপে রান না পাওয়া সূর্যকুমারকে আবার চেনা মেজাজে দেখা গেল ২০ ওভারের ক্রিকেটে। দু’জনের মধ্যে তিনিই বেশি আগ্রাসী ছিলেন। তাঁদের তৃতীয় উইকেটের জুটিতে উঠল ১১২ রান। ইশান খেললেন ৩৯ বলে ৫৮ রানের ইনিংস। ২টি চার এবং ৫টি ছক্কা মারলেন তিনি। রান পেলেন না তিলক বর্মা (১০ বলে ১২)। ছয় নম্বরে নেমে আগ্রাসী ব্যাটিং করলেন রিঙ্কু সিংহ। উইকেটের অন্য প্রান্তে অবিচল ছিলেন সূর্যকুমারও। তিনি করলেন ৪২ বলে ৮০ রান। অধিনায়কের ব্যাট থেকে এল ৯টি চার এবং ৪টি ছয়। তিনিই ম্যাচের সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার পেলেন।
ব্যর্থ অক্ষর পটেল (২)। শেষ বেলায় সহজ পরিস্থিতিতে উইকেট ছুড়ে দিলেন তিনি। অকারণ তাড়াহুড়ো করে পর পর আউট হলেন রবি বিষ্ণোই, আরশদীপ সিংহেরা। সহজ পরিস্থিতি কঠিন করে জিতল ভারত। তবে শেষ বলে ঠান্ডা মাথায় জয় এনে দিলেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের রিঙ্কু। তিনি শেষ পর্যন্ত করলেন ১৪ বলে ২২ রান। মারলেন ৪টি চার। শেষ বলে জয়ের জন্য ভারতের দরকার ছিল ১ রান। সেই বলে রিঙ্কুর ছক্কা মূল্যহীন হয়ে গেল সিন অ্যাবট ‘নো’ বল করায়। ফলে ১ বল বাকি থাকতেই ৮ উইকেটে ২০৯ রান তুলে জয় পেল ভারত।
অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে ৪৭ রান খরচ করে ২ উইকেট নিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত তনবীর সাঙ্ঘা। জেসন বেহরেনড্রফ অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম সফল বোলার। তিনি ২৫ দিয়ে ১ উইকেট নিলেন। মার্কাস স্টোইনিস ৩ ওভারে দিলেন ৩৬ রান। নাথান এলিস খরচ করলেন ৪৪ রান। শর্টের ১৩ রানে ১ উইকেট। অ্যাবট ৪৩ রান দিয়ে ১ উইকেট নিলেন।
বিশাখাপত্তনমের ২২ গজে সুবিধা করতে পারেননি ভারতের বোলারেরাও। যদিও টস জিতে আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ভারতের নতুন অধিনায়ক সূর্যকুমার। এ দিন অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস শুরু করেন স্টিভ স্মিথ এবং শর্ট। শুরু থেকেই আগ্রাসী মেজাজে খেলতে শুরু করেন অসি ওপেনারেরা। যদিও শর্ট বড় রান পেলেন না। রবি বিষ্ণোইয়ের বলে শর্ট ১১ বলে ১৩ রান করে আউট হলেও তার প্রভাব পড়ল না অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসে। তিন নম্বরে নামা ইংলিসএবং স্মিথ দ্বিতীয় উইকেটের জুটিতে তুললেন ১৩০ রান। যা কার্যত চালকের আসনে বসিয়ে দিল অস্ট্রেলিয়াকে। বিশ্বকাপ ফাইনালে রান না পাওয়া স্মিথ করলেন ৪১ বলে ৫২ রান। প্রথম বার ওপেন করতে নামা স্মিথে ব্যাট থেকে এল ৮টি চার।
অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস ভাল জায়গায় পৌঁছাল মূলত ইংলিসের দাপুটে ইনিংসের জন্য। ক্রিকেটজীবনে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে প্রথম শতরান পেলেন অসি ব্যাটার। ৫০ বলে ১১০ রানের অনবদ্য ইনিংস খেললেন তিনি। তাঁর ব্যাট থেকে এল ১১টি চার এবং ৮টি ছক্কা। শেষ পর্যন্ত ২২ গজে ছিলেন মার্কাস স্টোইনিস এবং টিম ডেভিড। স্টোইনিস করলেন অপরাজিত ৭ রান। ডেভিডের ব্যাট থেকে এল অপরাজিত ১৯ রানের ইনিংস।
আরশদীপ সিংহ আর মুকেশ কুমার ছাড়া কোনও বোলার ভরসা দিতে পারেননি অধিনায়ক সূর্যকুমারকে। আরশদীপ দিলেন ৪৩ রান। চোটের জন্য বিশ্বকাপ দল থেকে শেষ মুহূর্তে বাদ পড়া অক্ষর দিলেন ৩২ রান। হতাশ করলেন বিশ্বকাপের মাঝ পথে ভারতীয় দলে ঢোকা প্রসিদ্ধ কৃষ্ণও। তিনি ইংলিশের উইকেট পেলেও দিলেন ৫০ রান। বিষ্ণোই ১ উইকেট পেলেও খরচ করলেন ৫৪ রান। ৪ ওভারে বাংলার মুকেশ কুমার দিলেন ২৯ রান। শেষের দিকে ভাল বল করলেন তিনি। শেষ ওভারে দেন মাত্র ৫ রান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy