ধোনি ও কোহলীকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য গম্ভীরের। —ফাইল চিত্র
ভারতের দুই প্রাক্তন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি ও বিরাট কোহলীকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন গৌতম গম্ভীর। ধোনি-কোহলীকে ‘দৈত্যে’র সঙ্গে তুলনা করলেন ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার। তাঁর আর্জি, দয়া করে ভারতীয় ক্রিকেটে আর ধোনি-কোহলীর মতো ‘দৈত্য’ তৈরি করবেন না।
কিন্তু কেন এমন বললেন গম্ভীর?
ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটারের মতে, ভারতীয় ক্রিকেটে এক জন বা দু’জন ক্রিকেটার এত বড় নাম হয়ে যান যে বাকিদের সবাই ভুলে যায়। সেটা ঠিক নয়। দলে সবার সমান গুরুত্ব থাকা উচিত। সংবাদমাধ্যমে গম্ভীর বলেন, ‘‘দয়া করে সাজঘরে ধোনি ও কোহলীর মতো দৈত্য তৈরি করবেন না। কোনও ব্যক্তি নয়, ভারতীয় ক্রিকেটই একমাত্র দৈত্য। এটা সবার মনে রাখা উচিত।’’
গম্ভীরের মতে, ভারতীয় ক্রিকেটে এক জন বা দু’জন ক্রিকেটারকে পুজো করার যে রীতি রয়েছে তার জন্য অন্য ক্রিকেটাররা উঠে আসতে পারছেন না। তিনি বলেন, ‘‘এক জন বা দু’জন ক্রিকেটারের ছায়ায় বাকিরা উঠে আসতে পারছে না। আগে ধোনি ছিল। এখন কোহলী। বাকিরা কোথায়?’’
এই প্রসঙ্গে এশিয়া কাপের কথা তুলে এনেছেন গম্ভীর। তিনি বলেন, ‘‘এশিয়া কাপে কোহলী শতরান করল। সবাই সেই শতরান নিয়ে মেতে রইল। গোটা দেশে উৎসব হল। লোকে ভুলে গেল যে সেই ম্যাচেই ভুবনেশ্বর কুমার পাঁচ উইকেট নিয়েছে। এটা খুব দুর্ভাগ্যজনক। আমি ছাড়া ধারাভাষ্যকারদের মধ্যেও কেউ ভুবনেশ্বরের কথা তোলেনি। তা হলে কী করে অন্য ক্রিকেটাররা উঠে আসবে।’’
ভারতীয় ক্রিকেটে এই ব্যক্তিপুজোর জন্য দু’টি কারণকে তুলে এনেছেন গম্ভীর। প্রথম, নেটমাধ্যম। গম্ভীরের কথায়, ‘‘নেটমাধ্যমে যার যত বেশি অনুরাগী সে তত বড় ক্রিকেটার। এর থেকে বড় মিথ্যা কিছু হয় না।’’ উল্লেখ্য, কিছু দিন আগেই ইনস্টাগ্রামে কোহলীর অনুরাগীর সংখ্যা ৫০ মিলিয়ন ছুঁয়েছে। ক্রিকেটারদের মধ্যে ইনস্টাগ্রামে তাঁরই অনুরাগীর সংখ্যা সব থেকে বেশি।
গম্ভীরের মতে, ব্যক্তিপুজোর পিছনে দ্বিতীয় কারণ সংবাদমাধ্যম ও সম্প্রচারকারী চ্যানেল। তিনি বলেন, ‘‘এটা ১৯৮৩ সাল থেকে চলছে। সে বার বিশ্বকাপ জেতার পরে একমাত্র কপিল দেবের নাম হয়েছিল। ২০০৭ ও ২০১১ সালে বিশ্বকাপ জেতার পরে সেই জায়গাটা নিল ধোনি। ভুললে চলবে না, দলে আরও ১৪ জন ক্রিকেটার ছিল। তারাও নিজেদের সেরাটা দিয়েছিল। অথচ তাদের কেউ চিনল না।’’ প্রসঙ্গত, ভারতের হয়ে দু’টি বিশ্বকাপ জিতেছেন গম্ভীর। ২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও ২০১১ সালের এক দিনের বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতের হয়ে সর্বাধিক রান করেছিলেন তিনি। অথচ দু’টি ফাইনালেই ম্যাচের সেরার পুরস্কার পেয়েছিলেন অন্য ক্রিকেটার। ২০০৭ সালে ইরফান পাঠান ও ২০১১ সালে ধোনি সেরার পুরস্কার পেয়েছিলেন।
ভারতীয় ক্রিকেটে ব্যক্তি পুজো থেকে বেরিয়ে আসার পরামর্শ দিয়েছেন গম্ভীর। তা হলে অনেক ছোট শহর থেকে আরও বেশি ক্রিকেটার উঠে আসবে বলে জানিয়েছেন তিনি। গম্ভীর বলেন, ‘‘ক্রিকেটাররা বা বিসিসিআই এক জন কাউকে মাথায় তোলে না। এটা করে নেটমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম ও সম্প্রচারকারী চ্যানেল। এখান থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। সবাইকে সমান গুরুত্ব দিতে হবে। তা হলে আরও অনেক ক্রিকেটার উঠে আসবে। তাতে আখেরে ভারতীয় ক্রিকেটেরই লাভ হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy