প্রয়াত অংশুমান গায়কোয়াড়। —ফাইল ছবি।
প্রয়াত হলেন ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার অংশুমান গায়কোয়াড়। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। দীর্ঘ দিন ধরে ক্যানসারে ভুগছিলেন তিনি। বুধবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন গায়কোয়াড়।
চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গিয়েছিলেন তিনি। মাসখানেক আগে দেশে ফিরিয়ে আনা হয় তাঁকে। নিজের শহর বরোদাতেই তার পর থেকে চিকিৎসা চলছিল তাঁর। বুধবার রাতে চিকিৎসকদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে প্রয়াত হন তিনি।
২২ বছরের ক্রিকেটজীবনে দেশের হয়ে ৪০টি টেস্ট খেলেছেন গায়কোয়াড়। ১৯৭৪ সালে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে অভিষেক হয় তাঁর। ৪০টি টেস্টে ৩০.০৭ গড়ে ১৯৮৫ রান করেছেন। শতরান করেছেন দু’টি, অর্ধশতরান ১০টি। সর্বোচ্চ রান ২০১। মোট ১৫টি এক দিনের ম্যাচও খেলেছেন তিনি। ২০.৬৯ গড়ে ২৬৯ রান করেছেন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ২০৬টি ম্যাচে ১২১৩৬ রান করেছেন। শতরান রয়েছে ৩৪টি।
ভারতীয় ক্রিকেট দলের কোচের দায়িত্বও সামলেছেন তিনি। অনিল কুম্বলে যখন দিল্লিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে টেস্টে ইনিংসের ১০টি উইকেটই তুলে নিয়েছিলেন, তখন গায়কোয়াড়ই ভারতীয় দলের কোচ ছিলেন।
তিনি যখন চিকিৎসার জন্য লন্ডনে, তখন প্রয়োজনীয় অর্থ ছিল না তাঁর কাছে। ভারতের ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার সন্দীপ পাতিল তখন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে অনুরোধ করেছিলেন গায়কেয়াড়কে সাহায্য করার জন্য। লন্ডনের কিংস কলেজ হাসপাতালে যখন গায়কোয়াড় ভর্তি ছিলেন, সেখানে তাঁকে দেখতে গিয়েছিলেন পাতিল ও দিলীপ বেঙ্গসরকার। তার পরে পাতিল একটি সংবাদপত্রে তাঁর কলমে লিখেছিলেন, “অংশু আমাকে বলল, চিকিৎসার জন্য ওর অর্থের প্রয়োজন। তার পরেই আমি আর দিলীপ ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের কোষাধ্যক্ষ আশিস শেলারের সঙ্গে কথা বলি। অংশুকে দেখে ফিরেই আমরা ফোন করি আশিসকে।” পরে ‘৮৩-র বিশ্বজয়ী অধিনায়ক কপিল দেবও বোর্ডের কাছে একই অনুরোধ জানান। বিসিসিআই সচিব জয় শাহ তারপর ফোনে কথা বলেছিলেন গায়কোয়াড়ের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। কঠিন সময় তাঁর পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছিলেন বোর্ড সচিব। গায়কোয়াড়ের চিকিৎসার জন্য ১ কোটি টাকা দেয় বোর্ড।
রাহুল দ্রাবিড়কে ‘দ্য ওয়াল’ বলা হলেও গায়কোয়াড়কেই তাঁর রক্ষণাত্মক ব্যাটিংয়ের জন্য কোরিয়ারের শুরুর দিকে এই নামে ডাকা হতো। হেলমেট ছাড়াই তিনি বিশ্বের তাবড় জোরে বোলারদের বিরুদ্ধে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বুক চিতিয়ে লড়াই করেছেন। তাঁর রক্ষণাত্মক ব্যাটিংয়ের সেরা নিদর্শন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জলন্ধরে। ১৯৮৩ সালে সেই টেস্টে তিনি দ্বিশতরান করেছিলেন।
ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর এবং ভারতীয় দলের কোচ হওয়ার মাঝে তিনি জাতীয় ক্রিকেট দলের নির্বাচকও হয়েছিলেন। ২০১৮ সালে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড গায়কোয়াড়কে সিকে নায়ডু জীবনকৃতি সম্মান দেয়।
তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, সৌরভ গঙ্গেপাধ্যায়, জয় শাহ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy