ডেভিড ওয়ার্নার। —ফাইল চিত্র।
নিজের দেশের ক্রিকেট বোর্ডের সিদ্ধান্ত মানতে পারছেন না ডেভিড ওয়ার্নার। ভারত ‘এ’ দলের বিরুদ্ধে বল বিকৃতির অভিযোগ তুলেছিলেন আম্পায়ার। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট বোর্ড সেই বিতর্ক জিইয়ে রাখতে চায়নি। ওয়ার্নারের মতে, বোর্ডের আরও বেশি সক্রিয় হওয়া উচিত ছিল। বল বিকৃতির অভিযোগে ওয়ার্নার নিজে এক বছর নির্বাসিত ছিলেন। সেই ক্রিকেটার আবার মুখ খুলেছেন বল বিকৃতি নিয়ে।
২২ নভেম্বর থেকে শুরু ভারত-অস্ট্রেলিয়া টেস্ট সিরিজ়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়া ওয়ার্নার তার আগে বলেন, “এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট বোর্ডের। আমার মনে হয় খুব তাড়াতাড়ি ওরা বিষয়টা ধামাচাপা দিয়ে দিয়েছে। আম্পায়ারদের মনে হয়েছিল বলের সঙ্গে কিছু করা হয়েছে। ওদের রিপোর্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত ছিল। এতে নিজেদের দেশের আম্পায়ারদের অপমান হল।”
২০১৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেস্ট চলাকালীন বল বিকৃতির অভিযোগ উঠেছিল অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় ওয়ার্নারকে এক বছরের জন্য নির্বাসিত করা হয়। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট বোর্ড জানিয়ে দেয়, আর কোনও দিন জাতীয় দলের অধিনায়ক হতে পারবেন না তিনি। পরে এই শাস্তি তুলে নেওয়া হলেও ১২ মাস ক্রিকেটের বাইরে থাকতে হয়েছিল বাঁহাতি ওপেনারকে। কিন্তু ভারত ‘এ’ দলের বিরুদ্ধে বল বিকৃতির অভিযোগে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট বল চুপ। একই ঘটনায় দু’রকমের মনোভাব দেখিয়েছে তারা। সেটাই হয়তো মানতে পারছেন না ওয়ার্নার। সেই কারণে বোর্ডকে নিশানা করেছেন তিনি।
অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ দলের বিরুদ্ধে ম্যাকে বেসরকারি টেস্ট খেলছিল ভারত ‘এ’ দল। ম্যাচের শেষ দিন ভারতীয় দলের বিরুদ্ধে আম্পায়ার শন ক্রেগ বল বিকৃতির অভিযোগ করেন। খেলা শুরুর সময় বলে একটি দাগ দেখতে পান ক্রেগ। দাগটি দেখে তাঁর মনে হয়, বলটি কোনও কিছুর সঙ্গে ঘষা হয়েছে। বল বিকৃত করার চেষ্টা করা হয়েছে। বল পরিবর্তন করার কথা বলেন তিনি।
আম্পায়ার ক্রেগের এই সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে ভারতীয় দল। বল বিকৃতির অভিযোগ মানতে চাননি অধিনায়ক রুতুরাজ গায়কোয়াড়। আগের দিন খেলার শেষ পর্যন্ত এমন কোনও অভিযোগ ওঠেনি। অথচ শেষ দিন খেলা শুরুর আগে বল বিকৃতির অভিযোগ ওঠায় কিছুটা বিস্মিত হন তাঁরা। নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থেকে ক্রেগ বল পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেন। তাতে মেজাজ হারান ভারতীয় দলের উইকেটরক্ষক-ব্যাটার ঈশান কিশন। আম্পায়ারের সঙ্গে তর্কে জড়ান তিনি।
আম্পায়ারের সঙ্গে ঈশানের বাদানুবাদ ধরা পড়ে স্টাম্প মাইক্রোফোনে। ক্রেগ বলেন, ‘‘তোমরা বলটা কিছুর সঙ্গে ঘষেছ। তাই বল পরিবর্তন করা হবে। এটা নিয়ে আর আলোচনা করার কিছু নেই। খেলা শুরু করা যাক। আর আলোচনা নয়। তোমাদের এই বলে (পরিবর্তিত বল) খেলতে হবে।’’ তাঁর এই কথা শুনে ঈশান বলেন, ‘‘তার মানে আমাদের এই বলে খেলতে হবে?’’ গ্রেগ বলেন, ‘‘হ্যাঁ, আমরা এই বল দিয়ে খেলা শুরু করব।’’ এর পর ঈশান বলে বসেন, ‘‘এই সিদ্ধান্তটা বোকার মতো।’’ ভারতীয় উইকেটরক্ষকের কথায় ক্ষুব্ধ ক্রেগ বলেন, ‘‘এই ধরনের মন্তব্যের জন্য তোমাকে শাস্তি পেতে হবে। এই আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়। তোমাদের জন্যই আমাদের বল পরিবর্তন করতে হচ্ছে।’’
পরে এই ঘটনা নিয়ে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট বোর্ড একটি বিবৃতিতে বলে, “বলের আকার খারাপ হয়ে যাওয়ায় বল বদলাতে হয়েছে। এই বিষয়ে দুই দলের ম্যানেজার ও অধিনায়ককে আগে থেকেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল।” বল বিকৃতির বিষয়ে অবশ্য বিবৃতিতে কিছু জানানো হয়নি। আম্পায়ার তাঁর রিপোর্টে বল বিকৃতির জন্য ভারতীয় ক্রিকেটারদের দায়ী করেন। কিন্তু ভারতের কোনও ক্রিকেটারকে শাস্তি দেওয়া হয়নি। ভারতের বিরুদ্ধে পেনাল্টি হিসাবে ৫ রানও দেওয়া হয়নি। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট বোর্ডের এই বিবৃতি থেকে পরিষ্কার, বল বিকৃতি নিয়ে কোনও বিতর্ক আর বাড়াতে চাইছে না তারা। সেটাই পছন্দ হয়নি ওয়ার্নারের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy